একপেশে ভালোবাসা থেকে মুক্তি: প্রথমেই মেনে নিতে হবে একপেশে ভালোবাসা একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি। এটি কষ্ট দেবে এবং এক ধরনের মানসিক অস্থিরতার মধ্য নিয়ে যাবে। এই অস্বস্তিকর অনুভূতি আর অস্থিরতা থেকে বেরিয়ে আসতে একটু শোক পালন করতেই হবে। তবে সেই শোকের স্থায়িত্ব বেশি হতে দেওয়া যাবে না। এ জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন কিছু শিখে সময় কাটানো যেতে পারে। নিজেকে ব্যস্ত রাখা দ্রুত এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। যদিও একপেশে সম্পর্কের পর কষ্ট পাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তবে পরিস্থিতির মধ্যে ডুবে থাকা এক্ষেত্রে আরও খারাপ অনুভব করাতে পারে; বরং যে কাজগুলো করতে ভালোবাসেন, সেগুলো করার জন্য সময় বের করুন। এতে ধীরে ধীরে পুরোনো স্মৃতি কখন যে ফিকে হয়ে যাবে, তা টেরই পাবেন না।
নিজের যত্ন নিন: নিজের প্রতি আমরা মনোযোগী নই। এই মনোযোগ জরুরি। তাই মন ভালো রাখতে নিজের যত্ন নিতে হবে। এতে শরীরও ভালো থাকবে। এ জন্য নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন; নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন; নিজের প্রতি সদয় হোন এবং নিজেকে ভালো কিছু করতে দিন; শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এমন কাজ করতে শুরু করুন; শরীরের যত্নে মেডিটেশনের চেষ্টা করুন এভং পরিবার ও বন্ধুদের সময় দিন।
পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো যেতে পারে। তবে হ্যাঁ, ওইসব আড্ডায় যদি একপেশে ভালোবাসা নিয়েই আলোচনা করেন, তাহলে কোনো লাভ হবে না। কারণ এই কষ্ট থেকে তখন আপনি নিজেকে বের করে আনতে পারবেন না। একই বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকবেন। এ জন্য সহায়ক
নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করুন; এমন সব মানুষের সঙ্গে মিশুন- যারা আপনাকে ভালোবাসে; পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক বা এমন আনন্দের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করুন; মা-বাবা, ভাই-বোন দূরে থাকলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন; বিভ্রান্ত ব্যবহার না করে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে স্বাভাবিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন এবং হৃদয় ভাঙার গল্প বলতে চাইলে এমন মানুষ বেছে নিন- যারা আপনার কথা বুঝবেন এবং আপনাকে নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক থাকতে সাহায্য করতে পারবে।
ভালোবাসায় যদি মেলে প্রত্যাখ্যান: ভালোবাসায় প্রত্যাখ্যান মিললে সবার আগে আসে লজ্জা। সেখানে কাজ করে ইগো। তবে এই প্রত্যাখ্যান থেকেও নিজেকে টেনে বের করে নিয়ে আসতে হবে। প্রত্যাখ্যানের মানে এই নয় যে আপনার মধ্যে ভালো কিছু নেই। হয়তো সে যা চাইছে তা নেই। সেটা তার চাহিদার জায়গা। এর দায় আপনার নয়। এই প্রত্যাখ্যানের মানে ঘৃণা নয়। এখান থেকে নিজের ইগো নিয়ন্ত্রণ করুন। নিজেকে নিজেই কীভাবে গড়ে নিতে পারেন, তা ভাবুন। এ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। কেউ প্রত্যাখ্যান করলে তা সহজে মেনে নিতে চেষ্টা করুন।
ব্যায়াম ঘোরাতে পারে মনোযোগ: বিক্ষিপ্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে দারুণ উপায় ব্যায়াম করা। এটি মানুষের শরীরে এন্ডোরফিন হরমোনের প্রবাহ দ্রুত করে। নিজেকে সামলে নিতে যতা সম্ভব বাইরে বের হয়ে মানুষের সঙ্গে মিশতে শুরু করুন। ব্যায়াম করার জন্য হলেও বাইরে বের হতে হবে। হাঁটুন, দৌড়ান বা অন্য কোনো ব্যায়াম করুন। নিজেকে বাইরের জগতের সঙ্গে মেলান। বাইরে সময় কাটানো মানুষের মন ভালো করতে এবং ভালো অনুভব করাতে সাহায্য করতে পারে।
জীবন থেমে যাবে না: জীবন একটাই। এখানে হাজারো মানুষ আসবে, হাজারো মানুষ চলে যাবে। কেউ একেবারে যাবে, কেউ ধীরে ধীরে যাবে। আবার কেউ জীবনে আসবেই না। সব মেনে নিয়েই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। প্রবাদ আছে, ‘ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই জ্ঞানীর কাজ’। খুব জ্ঞানী না হলেও একজন বাস্তব চিন্তা করা মানুষ যেকোনোভাবেই তার কষ্টকর অতীতকে পেছনে ফেলে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবে।
কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। বাজেট অনুযায়ী সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন। নিজের ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করুন। আপনি আপনার একপেশে সম্পর্ক থেকে মনোযোগ সরিয়ে নতুন অভিজ্ঞতার দিকে মনোনিবেশ করুন। এগিয়ে যাওয়া আরও সহজ হয়, যখন ভবিষ্যতের জন্য নতুন পরিকল্পনা থাকে।