ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক : পরিত্যক্ত অবস্থায় থেকে নষ্ট হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ৯টি বাস। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের পেছনে তিনটি ও পরিবহন স্ট্যান্ডে ছয়টিসহ মোট নয়টি বাস দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে জং ধরে এগুলোর প্রায় অচলাবস্থা। এতে একদিকে বাস সংকটে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, অন্যদিকে এসব বাসের ইঞ্জিনসহ অনেক যন্ত্রাংশ অকার্যকর হয়ে নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। তবে এ সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মোট ৩০টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে সচল আছে ২৮টি। এই ৩০টি বাসের বিপরীতে চালক আছেন মাত্র ২২ জন। তবে এই সংখ্যাকে বাসের তুলনায় অপর্যাপ্ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ৩০টি বাসের বিপরীতে কমপক্ষে ৬০ জন চালক প্রয়োজন হলেও অর্ধেকের কম চালক নিয়ে চলতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনগুলোকে। এসব পরিবহন নগরীর ১৮টি রুটে চলাচল করছে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে একই সঙ্গে সবগুলো রুটে পর্যাপ্ত বাস দিতে পারছে না পরিবহন দপ্তর।
এদিকে, সচল বাসগুলো ছাড়াও ৯টি বাস পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে পরিবহন স্ট্যান্ডে। এসব বাস দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে আছে। যার প্রতিটি বাসের ক্রয়মূল্য প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ছিল। সেই হিসাবে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ মেরামত কিংবা বিক্রির মতো কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব বাসের ইঞ্জিনসহ অনেক যন্ত্রাংশ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব সম্পদ নষ্ট হওয়ার পেছনে প্রশাসনের অবহেলাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, পুরাতন বাসগুলোকে এভাবে অযতেœ নষ্ট করা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটেও ঠিক হচ্ছে না। বাসগুলো এভাবে নষ্ট হওয়ার চেয়ে বিক্রি করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয় মোটা অঙ্কের টাকা পেত। তারা আরও বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনায় পর্যাপ্ত বাস নেই। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পুরাতন বাসগুলো বিক্রির টাকা দিয়ে নতুন বাস কিনলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক ড. মোকছিদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, পরিবহন দপ্তর দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে রয়েছে। বর্তমানে যে বাসগুলো সচল রয়েছে সেগুলোর জন্যই পর্যাপ্ত চালক নেই। মূলত জনবল সংকটের কারণেই অচল বাসগুলো মেরামত কিংবা সচল করার চিন্তা করছি না। তবে আমি এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে এসব বাস বিক্রির বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পদ বিক্রি করতে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যার ফলে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তবে এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করতে হয় বলে জানান প্রশাসক।
অবহেলা-অযতেœ নষ্ট হচ্ছে রাবির ৯ বাস
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ