ঢাকা ১০:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

অবসরের পরও অনেকেই কাজে যুক্ত থাকতে চান

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বেশি ভাগ মানুষই কাজ করেন। একটা সময় পর যার অবসর বা রিটায়ারমেন্টে। অবসরের পর জীবন কীভাবে কাটাবেন তা নিয়ে একেকজনের একেক রকম ভাবনা থাকে। কেউ চান সময়ের অভাবে যে শখ অপূর্ণ রয়ে গেছে, তা পূরণ করতে; কেউ বা আবার অবসরে যাওয়ার পরও কোনো না কোনো কাজে যুক্ত থাকতে চান। কাজেই আনন্দ খুঁজে পেতে চান তারা।
সম্প্রতি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়স্ক মানুষদের কাজ করা এবং স্বাস্থ্য নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ৬৫ বছরের পরেও অনেকে খুশি মনে কাজ করছেন আর এতে তাদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকছে।

গবেষণা কী বলছে: আমেরিকায় ৫০-৯৪ বছরের ৩ হাজার ৪৮৬ জনকে নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, অবসরের বয়সে পৌঁছেও অনেকেই কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এদের মধ্যে ৫০-৬৪ বছরের ৬৩ শতাংশ মানুষ কর্মরত। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে সেই পরিসংখ্যান ১৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ পূর্ণ সময়ের জন্য ২২ শতাংশ মানুষ আংশিক সময়ের জন্য কাজ করেন। ১৭ শতাংশ মানুষ নিজস্ব ব্যবসায় যুক্ত।

গবেষক জফেরি কুলগ্রেন বলেছেন, এই সমীক্ষা ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের কাজ সম্পর্কে আমার ধারণাই বদলে গিয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, এই বয়সে যারা কর্মক্ষম, তারা কাজের মধ্যে থাকলে অনেক বেশি ভালো থাকছেন। এর অনেক স্বাস্থ্যকর উপকারিতাও আছে।
অবসরের পর কাজ করলে কী লাভ: অবসরের পর অনেকের কাছে উপার্জন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই বয়স হলেও কারও কারও কাছে কাজ করার অন্যতম অনুপ্রেরণা অবশ্যই অর্থ উপার্জন। জীবনযাত্রার মান ধরে রাখার পাশাপাশি পরিবারকে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ায় তৃপ্তিও এ ক্ষেত্রে কাজ করে। অবসরের পর সঞ্চয়ও সুরক্ষিত থাকে।

আর কী লাভ হয়: কর্মজীবনে সবাই একটুখানি অবসর চান। কিন্তু টানা অবসর অনেক বয়স্ক মানুষের কাছেই শাস্তির মতো হয়ে ওঠে। একাকীত্ব গ্রাস করে অনেককেই। সময় কাটানো কঠিন মনে হয়। তার চেয়ে কাজের মধ্যে থাকলে অবসাদ, একাকিত্বের মতো সমস্যা কিছতা কমে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। হাঁটাচলা কমে গেলে শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অবসরের পর কাজের মধ্যে থাকলে মস্তিষ্ক ও শরীর সচল রাখা সহজ হতে পারে।

কাজের মধ্যে থাকলে অন্যদের সঙ্গে কথা হয়, নতুন যোগাযোগও সৃষ্টি হয়, যা সামাজিক সংযোগের ক্ষেত্রে সহায়ক। কাজের জগতে থাকলে জীবনের একটা উদ্দেশ্য থাকে। অন্যথায় কাজ না থাকলে জীবনের প্রতি ভালোবাসা কমতে থাকে। নিজেকে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। এর পাশাপাশি কাজ যে কোনো মানুষকে নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে, নতুন বিষয় শিখতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে শেখার আনন্দের পাশাপাশি কঠিন কাজও দক্ষতার সঙ্গে করতে পারার চ্যালেঞ্জ কাজ করে। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, অবসরের পর সম্ভব হলে কাজের মধ্যে থাকাই শ্রেয়।
কাজ করতে হবে মানে এই নয় যে আপনাকে অর্থ উপার্জন করতেই হবে। পশু-পাখি পালন করা, বাগান করা, সৃজনশীল কাজ করেও সময় কাটাতে পারেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অবসরের পরও অনেকেই কাজে যুক্ত থাকতে চান

আপডেট সময় : ০৫:৩৫:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বেশি ভাগ মানুষই কাজ করেন। একটা সময় পর যার অবসর বা রিটায়ারমেন্টে। অবসরের পর জীবন কীভাবে কাটাবেন তা নিয়ে একেকজনের একেক রকম ভাবনা থাকে। কেউ চান সময়ের অভাবে যে শখ অপূর্ণ রয়ে গেছে, তা পূরণ করতে; কেউ বা আবার অবসরে যাওয়ার পরও কোনো না কোনো কাজে যুক্ত থাকতে চান। কাজেই আনন্দ খুঁজে পেতে চান তারা।
সম্প্রতি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়স্ক মানুষদের কাজ করা এবং স্বাস্থ্য নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ৬৫ বছরের পরেও অনেকে খুশি মনে কাজ করছেন আর এতে তাদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকছে।

গবেষণা কী বলছে: আমেরিকায় ৫০-৯৪ বছরের ৩ হাজার ৪৮৬ জনকে নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, অবসরের বয়সে পৌঁছেও অনেকেই কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করছেন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এদের মধ্যে ৫০-৬৪ বছরের ৬৩ শতাংশ মানুষ কর্মরত। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে সেই পরিসংখ্যান ১৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ পূর্ণ সময়ের জন্য ২২ শতাংশ মানুষ আংশিক সময়ের জন্য কাজ করেন। ১৭ শতাংশ মানুষ নিজস্ব ব্যবসায় যুক্ত।

গবেষক জফেরি কুলগ্রেন বলেছেন, এই সমীক্ষা ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের কাজ সম্পর্কে আমার ধারণাই বদলে গিয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, এই বয়সে যারা কর্মক্ষম, তারা কাজের মধ্যে থাকলে অনেক বেশি ভালো থাকছেন। এর অনেক স্বাস্থ্যকর উপকারিতাও আছে।
অবসরের পর কাজ করলে কী লাভ: অবসরের পর অনেকের কাছে উপার্জন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই বয়স হলেও কারও কারও কাছে কাজ করার অন্যতম অনুপ্রেরণা অবশ্যই অর্থ উপার্জন। জীবনযাত্রার মান ধরে রাখার পাশাপাশি পরিবারকে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ায় তৃপ্তিও এ ক্ষেত্রে কাজ করে। অবসরের পর সঞ্চয়ও সুরক্ষিত থাকে।

আর কী লাভ হয়: কর্মজীবনে সবাই একটুখানি অবসর চান। কিন্তু টানা অবসর অনেক বয়স্ক মানুষের কাছেই শাস্তির মতো হয়ে ওঠে। একাকীত্ব গ্রাস করে অনেককেই। সময় কাটানো কঠিন মনে হয়। তার চেয়ে কাজের মধ্যে থাকলে অবসাদ, একাকিত্বের মতো সমস্যা কিছতা কমে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। হাঁটাচলা কমে গেলে শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অবসরের পর কাজের মধ্যে থাকলে মস্তিষ্ক ও শরীর সচল রাখা সহজ হতে পারে।

কাজের মধ্যে থাকলে অন্যদের সঙ্গে কথা হয়, নতুন যোগাযোগও সৃষ্টি হয়, যা সামাজিক সংযোগের ক্ষেত্রে সহায়ক। কাজের জগতে থাকলে জীবনের একটা উদ্দেশ্য থাকে। অন্যথায় কাজ না থাকলে জীবনের প্রতি ভালোবাসা কমতে থাকে। নিজেকে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। এর পাশাপাশি কাজ যে কোনো মানুষকে নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে, নতুন বিষয় শিখতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে শেখার আনন্দের পাশাপাশি কঠিন কাজও দক্ষতার সঙ্গে করতে পারার চ্যালেঞ্জ কাজ করে। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, অবসরের পর সম্ভব হলে কাজের মধ্যে থাকাই শ্রেয়।
কাজ করতে হবে মানে এই নয় যে আপনাকে অর্থ উপার্জন করতেই হবে। পশু-পাখি পালন করা, বাগান করা, সৃজনশীল কাজ করেও সময় কাটাতে পারেন।