আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জন্ম-বেড়ে ওঠা রাজপ্রাসাদে, কিন্তু প্রেমে পড়েছেন সাধারণ ঘরের এক ছেলের। অবশেষে বাগদানের চার বছর পর ভালোবাসার মানুষকে বিয়েও করলেন। আর এই লক্ষ্য অর্জনে ছাড়তে হলো রাজকীয় মর্যাদা, পদবী ও সম্পদ।
অসাধারণ এই গল্পটির প্রধান চরিত্র জাপানের রাজকুমারী ও দেশটির বর্তমান সম্রাটের ভাতিজি মাকো এবং তার দীর্ঘদিনের প্রেমিক কেই কোমুরোর। কলেজ জীবন থেকে একে-অপরের মন দেওয়া-নেওয়া। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তারা। বাঁধা পড়লেন একে অপরের জীবনসঙ্গী হিসেবে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার প্রেমিক কেই কোমুরোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে নিজের রাজকীয় মর্যাদা, পদবী ত্যাগ করেছেন রাজকুমারী মাকো। তবে এরপরও খুব খুশি তিনি।
জাপানি রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, রাজপুত্র অথবা রাজকুমারীরা রাজবংশের বাইরে সাধারণ পরিবারের কাউকে বিয়ে করলে রাজকীয় পদমর্যাদা হারায় এবং তাদের রাজপ্রাসাদের সবকিছু থেকে তাদেরকে বঞ্চিত হতে হয়।
জাপানের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিয়ের রেজিস্ট্রি করার জন্য রাজকুমারী মাকো তার টোকিওর বাড়ি থেকে বের হন। বিয়ের পর নতুন স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে অস্বাভাবিক খোলামেলা যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মাকো।
সেখানে তিনি জানান, টালমাটাল বাগদান পর্বের পর তার ‘অপরিবর্তনীয়’ স্বামীর সঙ্গে সুখী একটি জীবন গড়ে তুলতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। এমনকি স্বামী কেই কোমুরোকে নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ‘অসত্য’ খবর প্রকাশের কারণে তিনি খুবই দুঃখ, মানসিক চাপ ও ভীতিতে ভুগেছেন বলেও জানান মাকো।
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের বিয়ের বিষয়ে অনেকের অনেক মতামত রয়েছে। তবে আমাদের কারণে কারও কষ্ট বা সমস্যা হয়ে থাকলে আমি খুবই দুঃখিত। মাকো এখন থেকে মাকো কোমুরো নামে পরিচিত হবেন। তিনি বলছেন, ‘একসঙ্গে বসবাসের জন্য বিয়ে আমাদের কাছে খুই প্রয়োজনীয়।’ রয়টার্স জানিয়েছে, গত শনিবার ছিল রাজকুমারী মাকোর ৩০তম জন্মদিন। ওই দিন শেষবারের মতো রাজপ্রাসাদে জন্মদিন পালন করেন তিনি।
২০১২ সালে জাপানের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় প্রিন্সেস মাকো ও কেই কোমুরোর পরিচয় হয়। এরপর মন দেওয়া-নেওয়া, বাগদান এবং এরপর দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া।
বিয়ের পর মাকো এবং কেই কোমুরো যুক্তরাষ্ট্রে সংসার পাতবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ সেখানে আইনপেশায় যুক্ত আছেন কেই কোমুরো।
এদিকে মেয়েদের বিয়ের পর প্রাসাদ ত্যাগের সময় উপহার হিসেবে তাদেরকে অর্থ দেওয়ার রীতিও চালু আছে জাপানের রাজপরিবারে। সেই অনুযায়ী, বিয়ের পর রাজপরিবার থেকে মাকোর পাওয়ার কথা ১০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। কিন্তু রাজপরিবার থেকে তিনি কোনো অর্থ নেবেন না বলে আগেই জানিয়েছিলেন মাকো।
অবশেষে ভালোবাসার মানুষকেই বিয়ে করলেন জাপানের রাজকুমারী
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ