ঢাকা ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

অবমূল্যায়িত ব্যাংক, ঝুঁকিতে জীবন বিমা-সিমেন্ট

  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক : টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। এমন বাজারে বরাবরের মতো তলানিতেই পড়ে রয়েছে ব্যাংকখাত। অবমূল্যায়িত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম। অন্যদিকে আয়হীন লোকসানে জর্জরিত অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে জীবন বিমা ও সিমেন্ট খাত। এই দুই খাতের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেশ বেশি। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। এতে বাড়ে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত ২০ পয়েন্টে স্পর্শ করে। তবে চলতি বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। টানা দরপতনের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে কমে মূল্য আয় অনুপাত। চলতি বছরের জুলাই মাসে ডিএসইর মূল্য আয় অনুপাত সাড়ে ১৩ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। এ পরিস্থিতিতে নানামুখী পদক্ষেপে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে শেয়ারবাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে। এতে আবার সার্বিক বাজারের মূল্য আয় অনুপাত বেড়ে ১৬ পয়েন্টের ওপরে উঠে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে আবার টানা দরপতনে দেখা দিয়েছে। অবশ্য এরপরও ডিএসইর পিই ১৬ পয়েন্টের ওপরে রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পিই ১৬ দশমিক ২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৬ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। একসময় ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ব্যাংকখাতের ওপরই নির্ভর করতো শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন। কিন্তু খেলাপি ঋণ, পরিচালকদের অনৈতিক কার্যক্রমসহ ব্যাংকখাত সম্পর্কে একের পর এক নেতিবাচক তথ্য বেরিয়ে আসায় ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভাটা পড়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দামে। যে কারণে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত ১৬ দশমিক ২০ হলেও ব্যাংকখাতের পিই রয়েছে ৭ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। এক সপ্তাহ আগেও ব্যাংকখাতের পিই একই জায়গায় ছিল। এদিকে ব্যাংকের তলানিতে পড়ে থাকার মধ্যে জীবন বিমা খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামে বড় উত্থান হয়েছে। ফলে জীবন বিমা খাতের পিই রেশিও বেড়েছে। জীবন বিমা খাতের পিই এখন ৬৮ দশমিক ৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। জীবন বিমা খাতের মতো সিমেন্ট খাতের পিই-ও বেশ বেশি। বর্তমানে এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ১০ পয়েন্টে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মূল্যায়নের অন্যতম হাতিয়ার মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও। যে প্রতিষ্ঠানের পিই যত কম, ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ঝুঁকি ততো কম। একইভাবে যে প্রতিষ্ঠানের পিই যত বেশি, ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ততো ঝুঁকিপূর্ণ। সাধারণত যে সব প্রতিষ্ঠানের পিই ১০-১৫ এর মধ্যে থাকে সেই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত। এদিকে ব্যাংকের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সাধারণ বিমা এবং টেলিযোগাযোগ খাতের পিই এখনো সার্বিক বাজার পিই’র নিচে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পিই রয়েছে ১৪ দশমিক ১০ পয়েন্ট। আর টেলিযোগাযোগ খাতের পিই রয়েছে ১৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট। আর সাধারণ বিমা খাতের পিই রয়েছে ১৫ দশমিক ৫০ পয়েন্টে। বাকি খাতগুলোর পিই সার্বিক বাজারের পিই’র ওপরে। এর মধ্যে ওষুধ খাতের ১৮ পয়েন্ট, সিরামিক খাতের ৩৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতের ২৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট, আইটি খাতের ২৮ দশমিক ৩০ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতের ২০ দশমিক ১০ পয়েন্ট, অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং খাতের ৪৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট এবং খাদ্য খাতের পিই ২১ দশমিক ৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অবমূল্যায়িত ব্যাংক, ঝুঁকিতে জীবন বিমা-সিমেন্ট

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

অর্থনৈতিক ডেস্ক : টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। এমন বাজারে বরাবরের মতো তলানিতেই পড়ে রয়েছে ব্যাংকখাত। অবমূল্যায়িত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম। অন্যদিকে আয়হীন লোকসানে জর্জরিত অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে জীবন বিমা ও সিমেন্ট খাত। এই দুই খাতের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেশ বেশি। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। এতে বাড়ে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত ২০ পয়েন্টে স্পর্শ করে। তবে চলতি বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। টানা দরপতনের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে কমে মূল্য আয় অনুপাত। চলতি বছরের জুলাই মাসে ডিএসইর মূল্য আয় অনুপাত সাড়ে ১৩ পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। এ পরিস্থিতিতে নানামুখী পদক্ষেপে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে শেয়ারবাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে। এতে আবার সার্বিক বাজারের মূল্য আয় অনুপাত বেড়ে ১৬ পয়েন্টের ওপরে উঠে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে আবার টানা দরপতনে দেখা দিয়েছে। অবশ্য এরপরও ডিএসইর পিই ১৬ পয়েন্টের ওপরে রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পিই ১৬ দশমিক ২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৬ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। একসময় ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারের প্রাণ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ব্যাংকখাতের ওপরই নির্ভর করতো শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন। কিন্তু খেলাপি ঋণ, পরিচালকদের অনৈতিক কার্যক্রমসহ ব্যাংকখাত সম্পর্কে একের পর এক নেতিবাচক তথ্য বেরিয়ে আসায় ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভাটা পড়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দামে। যে কারণে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত ১৬ দশমিক ২০ হলেও ব্যাংকখাতের পিই রয়েছে ৭ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। এক সপ্তাহ আগেও ব্যাংকখাতের পিই একই জায়গায় ছিল। এদিকে ব্যাংকের তলানিতে পড়ে থাকার মধ্যে জীবন বিমা খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামে বড় উত্থান হয়েছে। ফলে জীবন বিমা খাতের পিই রেশিও বেড়েছে। জীবন বিমা খাতের পিই এখন ৬৮ দশমিক ৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। জীবন বিমা খাতের মতো সিমেন্ট খাতের পিই-ও বেশ বেশি। বর্তমানে এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ১০ পয়েন্টে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মূল্যায়নের অন্যতম হাতিয়ার মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও। যে প্রতিষ্ঠানের পিই যত কম, ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ঝুঁকি ততো কম। একইভাবে যে প্রতিষ্ঠানের পিই যত বেশি, ওই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ ততো ঝুঁকিপূর্ণ। সাধারণত যে সব প্রতিষ্ঠানের পিই ১০-১৫ এর মধ্যে থাকে সেই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত। এদিকে ব্যাংকের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সাধারণ বিমা এবং টেলিযোগাযোগ খাতের পিই এখনো সার্বিক বাজার পিই’র নিচে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পিই রয়েছে ১৪ দশমিক ১০ পয়েন্ট। আর টেলিযোগাযোগ খাতের পিই রয়েছে ১৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট। আর সাধারণ বিমা খাতের পিই রয়েছে ১৫ দশমিক ৫০ পয়েন্টে। বাকি খাতগুলোর পিই সার্বিক বাজারের পিই’র ওপরে। এর মধ্যে ওষুধ খাতের ১৮ পয়েন্ট, সিরামিক খাতের ৩৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতের ২৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট, আইটি খাতের ২৮ দশমিক ৩০ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতের ২০ দশমিক ১০ পয়েন্ট, অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং খাতের ৪৩ দশমিক ৯০ পয়েন্ট এবং খাদ্য খাতের পিই ২১ দশমিক ৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।