নিজস্ব প্রতিবেদক : রোজার ঈদ ঘিরে ছয় দিনের দীর্ঘ অবকাশ কাটিয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত আর ব্যাংক-বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুললেও প্রথম দিন তেমন কোনো কর্মব্যস্ততা দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয় ঘুরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিও বেশ কম দেখা গেছে।
মহামারীর কারণে গত দুই বছর বাংলাদেশের মানুষের ঈদ কেটেছে অনেকটা বন্দিদশার মধ্যে। এবার কোভিড বিধির সেই কড়াকড়ি আর নেই। তার মধ্যে ঈদের ছুটির আগে তিন দিনের বাড়তি ছুটি মিলে যাওয়ায় ঢাকা থেকে অনেকেই গ্রামে ছুটেছেন স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে।
ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার। আর ঈদের পর অফিস খুললো আরেক বৃহস্পতিবারে এসে।
পুরো ছয় দিন ছুটি কাটিয়ে অনেকে কর্মস্থলে ফিরলেও যারা এক দিনের বাড়তি ছুটি নিতে পেরেছেন, তারা শুক্র-শনির সাপ্তাহিক ছুটিও বাড়িতে কাটিয়ে আসতে পারবেন।
সকালে অফিস শুরুর পর প্রথম কয়েক ঘণ্টা সচিবালয়ের কর্মীদের গেছে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময়ে। কর্মব্যস্ততা কম থাকায় অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে তাদের।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, স্বাস্থ্য, খাদ্য, কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, ভূমি মন্ত্রণালয়, এবং তথ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের অনেক কক্ষে চেয়ার-টেবিল ফাঁকা দেখা গেছে। আবার অনেক কক্ষে সব কর্মকর্তাই উপস্থিত ছিলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সবাই না ফিরলেও উপস্থিতি ‘মোটামুটি’। বেলা সাড়ে ১১টায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
সচিবালয়ে লিফটগুলোর সামনেও এদিন ভিড় ছিল না, দর্শনার্থী কক্ষ ছিল ফাঁকা।
সচিবালয়ে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য বলেন, “অন্যদিনের তুলনায় আজ ভিড় অনেক কম।”
আদালতপাড়ার চিত্র অনেকটা সচিবালয়ের মতই। প্রধান এজলাসগুলোতে কিছু আইনজীবী আর বারান্দায় অল্প কয়েকজন বিচারপ্রার্থী ছাড়া নি¤œ আদালত প্রাঙ্গণ অনেকটাই জনশূন্য ।
স্বাভাবিক কর্মদিবসে আদালত পাড়ায় চা-পান ছাড়াও ভ্যানে করে ফল, শার্ট-প্যান্টের কাপড় কিংবা বই বিক্রি হতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার সেসব কিছু দেখা গেল না।
জ্যেষ্ঠ বিচারকদের কয়েকজন এদিন শুনানি নিলেও অনেক এজলাস ছিল খালি। বিচারকদের কেউ কেউ বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের কর্মীরা।
ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বদলি হয়ে যাওয়ায় এ ট্রাইবুনালের মামলার বিচারের ভার পড়েছে ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারকের ওপর।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূঞা জানান, ওই আদালতে এখন বিচারপ্রার্থীদের সময়ের আবেদনের ‘হিড়িক’ চলছে।
মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল জানান, ওই আদালতে বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এজলাসে বসেছেন।
“আজ ৩৩টি ফৌজদারি বিবিধ মামলার জামিন শুনানি রয়েছে। এছাড়া এ আদালতে দুদকের মামলা আপিল রিভিশনের অ্যাডমিশন হিয়ারিংও রয়েছে।”
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিুর রহমান ভূইয়া এজলাসে বসেছেন। এ আদালতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফৌজদারি মামলার বিচার চলছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি বিমল সমাদ্দার।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সি এম এম) ব্যক্তিগত সচিব জহিরুল কাইয়ুম জানিয়েছেন, এ আদালতের প্রধান বিচারক রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ২৭ জন বিচারক আজ ছুটিতে রয়েছেন। উপস্থিত আছেন ১০ জন হাকিম।
অফিস-আদালত খুললেও আলস্য কাটেনি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ