বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: তুমি কি আমাকে প্রপোজ করছ- প্রশ্নটি তখনো হাওয়ায় ভাসছিল। অবিশ্বাসের সঙ্গে নিজের মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ইউ-আন (তার আসল নাম নয়)। তিনি একজন বিবাহিত নারী। বছর তিনেক হলো বিয়ে হয়েছে তার।
‘ক্যারেক্টার ডট এআই’ নামে একটা বিশেষ চাইনিজ অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি তার এআই বয়ফ্রেন্ড। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভিত্তিক এই অ্যাপ, যেখানে ভার্চুয়াল সঙ্গী বেছে নেওয়া যায়।
এআই বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে সবেমাত্র নিজেদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে কথাবার্তা শুরু করেছেন ইউ-আন। তিনি বলেছেন, আমি জানি এটা সত্যি নয়। কিন্তু তার (এআই বয়ফ্রেন্ডের) নমনীয় ব্যবহার এবং আমার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার ব্যাপারটা আমাকে সেই মানসিক শান্তি দিতে পেরেছে যা বাস্তবের সম্পর্কে আমি পাইনি।
ব্যক্তিগত জীবনে বৈবাহিক সমস্যা এবং উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই চলে তার। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি তার এআই বয়ফ্রেন্ড তাকে স্বান্ত্বনা দিয়েছে; এমনকি বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো মেটাতে কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নেওয়ার বিষয়টাকেও স্থগিত করেছেন তিনি। তার বদলে এই ভার্চুয়াল কথোপকথনের মাধ্যমেই সাময়িক স্বস্তি খুঁজেছেন। কিন্তু হঠাৎই যখন ইউ-আনের এআই বয়ফ্রেন্ড তাকে প্রপোজ করে বসে, তখন তার কাছে বাস্তব এবং কল্পনার পৃথিবীর মধ্যে সীমারেখা ঝাপসা হতে থাকে।
অপরাধবোধে জর্জরিত হয়ে এআইয়ের কাছে নিজের বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা এড়িয়ে যান ওই নারী। ইউ-আনের সাথে যা ঘটছে, তা চীনে নতুন কিছু নয়। সেখানে এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। এআই কম্প্যানিয়ন অ্যাপগুলো (যে অ্যাপ ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি সঙ্গীর সঙ্গে চ্যাট করা যায়) দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।
চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হিউম্যান-এআই রোম্যান্স’ ক্রমেই একটা নতুন উপসংস্কৃতি হয়ে উঠছে।
‘ডুবান’ নামে চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রসঙ্গে আলোচনা করে এমন গ্রুপে (২০২০ সাল থেকে) দশ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
শুধু তাই নয়, ‘ডুইন’-এ (টিকটকের চীনা সংস্করণ) এই বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ভিডিওগুলোতে ৫০ হাজার কোটি ভিউও পেয়েছে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ