ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পার্বত্য-চুক্তির অন্তর্ভুক্তি জরুরি

  • আপডেট সময় : ০৮:০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অন্তর্ভুক্তি জরুরি বলে অভিমত দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত বক্তারা।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ আয়োজিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বছর: প্রত্যাশা ও অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম-সমন্বয়কারী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসার সঞ্চালনায় এবং আরেক যুগ্ম-সমন্বয়কারী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন— দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানসহ আরও অনেকে।
সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন মূল প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশ একটি বহুজাতি, বহুভাষা এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ। বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে ৫৪টিরও বেশি আদিবাসী জাতি সুপ্রাচীনকাল থেকে নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সমাজব্যবস্থা নিয়ে বসবাস করছে। পরিবেশ ধ্বংসকারী উন্নয়ন কার্যক্রম পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন শুধুমাত্র এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য নয়, দেশের আদিবাসী জনগণের অধিকার এবং জাতিগত ঐক্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে কাজে লাগানোই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য অনিক রায় বলেন, যখন চুক্তি হয় তখন আমার বয়স ছিল ৪ বছর। কিন্তু আজ অবধি চুক্তির বাস্তবায়ন করা হয়নি। জুলাই আন্দোলনে আদিবাসী-বাঙালি সবাই মিলেই ফ্যসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় আদিবাসীদের দাবিগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে অগ্রাধিকার তালিকায় ওপরের দিকে রাখার জন্যও তিনি এ সরকারকে আহ্বান জানান। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এবারের জুলাইয়ের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যও ছিল বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না। তাহলে এ স্বপ্নগুলো শুধু মুখের কথার মধ্যে কেন সীমাবদ্ধ থাকবে। ২৭ বছর আগে হওয়া পার্বত্য চুক্তিও শুধুমাত্র বাস্তবায়ন চায় বললেই কাজ শেষ হয়ে যায় না। বাস্তবায়ন করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার দরকার হয়। তিনি বলেন, শুধুমাত্র কাগজে লিখলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। কোনও সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য আসলে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে অন্তর্ভুক্তি করতে হবে, যেন রাজনৈতিক সরকার এ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয়। তা না হলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব হবে না। বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা রাজনৈতিক সমস্যা। এটাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের ৫০টির অধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে আমরা আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে পারিনি। এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কমিশনগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য আসতে হবে।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা থেকেই তৎকালীন সময়ে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে অংশগ্রহণ করেছিল। তারা ব্রিটিশ-পাকিস্তান সময়ের রাজতন্ত্র ভেঙে গণতান্ত্রিক স্রোতধারায় অন্তর্ভুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তাদেরকে সবসময় দূরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সূত্রপাট ঘটে। এ রাজনৈতিক সমস্যাকে সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছিল। কিন্তু আজ অবধি চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আরও বেশি প্রান্তিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়ন না করার কারণে দেশের আদিবাসীদের মানবিক অধিকারকেও ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারি না। এ অঞ্চলকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে কখনও পরিপূর্ণ মনে হয় না।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পার্বত্য-চুক্তির অন্তর্ভুক্তি জরুরি

আপডেট সময় : ০৮:০২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অন্তর্ভুক্তি জরুরি বলে অভিমত দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত বক্তারা।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ আয়োজিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বছর: প্রত্যাশা ও অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম-সমন্বয়কারী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসার সঞ্চালনায় এবং আরেক যুগ্ম-সমন্বয়কারী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন— দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানসহ আরও অনেকে।
সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন মূল প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশ একটি বহুজাতি, বহুভাষা এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ। বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে ৫৪টিরও বেশি আদিবাসী জাতি সুপ্রাচীনকাল থেকে নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্ম এবং সমাজব্যবস্থা নিয়ে বসবাস করছে। পরিবেশ ধ্বংসকারী উন্নয়ন কার্যক্রম পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের জীবনযাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন শুধুমাত্র এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য নয়, দেশের আদিবাসী জনগণের অধিকার এবং জাতিগত ঐক্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুক্তি বাস্তবায়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে কাজে লাগানোই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠার মূল চাবিকাঠি।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য অনিক রায় বলেন, যখন চুক্তি হয় তখন আমার বয়স ছিল ৪ বছর। কিন্তু আজ অবধি চুক্তির বাস্তবায়ন করা হয়নি। জুলাই আন্দোলনে আদিবাসী-বাঙালি সবাই মিলেই ফ্যসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় আদিবাসীদের দাবিগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে অগ্রাধিকার তালিকায় ওপরের দিকে রাখার জন্যও তিনি এ সরকারকে আহ্বান জানান। সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, এবারের জুলাইয়ের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যও ছিল বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তা প্রতিফলিত হচ্ছে না। তাহলে এ স্বপ্নগুলো শুধু মুখের কথার মধ্যে কেন সীমাবদ্ধ থাকবে। ২৭ বছর আগে হওয়া পার্বত্য চুক্তিও শুধুমাত্র বাস্তবায়ন চায় বললেই কাজ শেষ হয়ে যায় না। বাস্তবায়ন করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার দরকার হয়। তিনি বলেন, শুধুমাত্র কাগজে লিখলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। কোনও সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য আসলে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মপরিকল্পনায় সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে অন্তর্ভুক্তি করতে হবে, যেন রাজনৈতিক সরকার এ চুক্তি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয়। তা না হলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব হবে না। বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা রাজনৈতিক সমস্যা। এটাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের ৫০টির অধিক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে আমরা আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে পারিনি। এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কমিশনগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য আসতে হবে।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা থেকেই তৎকালীন সময়ে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে অংশগ্রহণ করেছিল। তারা ব্রিটিশ-পাকিস্তান সময়ের রাজতন্ত্র ভেঙে গণতান্ত্রিক স্রোতধারায় অন্তর্ভুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তাদেরকে সবসময় দূরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সূত্রপাট ঘটে। এ রাজনৈতিক সমস্যাকে সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করা হয়েছিল। কিন্তু আজ অবধি চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আরও বেশি প্রান্তিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়ন না করার কারণে দেশের আদিবাসীদের মানবিক অধিকারকেও ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে আমরা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারি না। এ অঞ্চলকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে কখনও পরিপূর্ণ মনে হয় না।