ঢাকা ০৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে রিট

  • আপডেট সময় : ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের অ্যাপ ‘সুরক্ষা’তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিবন্ধন করার সুযোগ রাখার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের চার আইনজীবী এ রিট দায়ের করেন।
তারা হলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এবং ব্যারিস্টার মো. মোজাম্মেল হক। তারা জানান, রিট আবেদনটির ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআর’র পরিচালককে বিবাদী করা হয়ে
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশুরা মারা যাচ্ছে। সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা ব্যবস্থা করা গেলে অনেক হতাহত কমিয়ে আনা সম্ভব।
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার এবং মডার্নার উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ওইসব দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গবেষণা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কোনও কারণে আক্রান্ত হলে তাদের এবং শিশুর জীবন বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে।’
অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাদেরকে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
অতএব, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদানের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেওয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। রিট আবেদনে আরও জানানো হয়েছে, রিট আবেদনকারীদের একজন অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী নিজে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী। তিনি দীর্ঘদিন যাবত করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনোভাবেই করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারছে না। তিনি তার অনাগত সন্তান এবং নিজেকে নিয়ে শঙ্কিত।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ জুলাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনা টিকা প্রদান করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তবে সে নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে রিট

আপডেট সময় : ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের অ্যাপ ‘সুরক্ষা’তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিবন্ধন করার সুযোগ রাখার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের চার আইনজীবী এ রিট দায়ের করেন।
তারা হলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এবং ব্যারিস্টার মো. মোজাম্মেল হক। তারা জানান, রিট আবেদনটির ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআর’র পরিচালককে বিবাদী করা হয়ে
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করে। কিন্তু করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশুরা মারা যাচ্ছে। সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা ব্যবস্থা করা গেলে অনেক হতাহত কমিয়ে আনা সম্ভব।
‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার এবং মডার্নার উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ওইসব দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গবেষণা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। কোনও কারণে আক্রান্ত হলে তাদের এবং শিশুর জীবন বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে।’
অথচ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাদেরকে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
অতএব, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদানের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেওয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। রিট আবেদনে আরও জানানো হয়েছে, রিট আবেদনকারীদের একজন অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরী নিজে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী। তিনি দীর্ঘদিন যাবত করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনোভাবেই করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারছে না। তিনি তার অনাগত সন্তান এবং নিজেকে নিয়ে শঙ্কিত।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ জুলাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনা টিকা প্রদান করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। তবে সে নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়েছে।