করোনাকালে অনিয়মিত ঘুম, অনিয়ন্ত্রিত ডিভাইস ব্যবহারসহ বদলে যাওয়া লাইফস্টাইলের কারণে কিশোর-কিশোরীরা ত্বকের সমস্যায় ভুগছে বেশ। সঙ্গে আছে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব। তারুণ্যের ত্বক নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাখ্যা ও চিকিৎসা দেন ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন। গত ১ সেপ্টেম্বর বেস্ট ওয়েলনেস কনসালটেন্ট হিসেবে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের হাত থেকে। একটি সংবাদসংস্থার সঙ্গে কথা বলেন ডা. ইরিন। পাঠকদের জন্য সেটা তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন : এখন কম বয়সেই ত্বকের সমস্যা নিয়ে বেশি রোগী আসছে?
ডা. ইরিন: তা তো বটেই। অনেক কম বয়সীরা সমস্যায় পড়ছে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আসছেন। তাদের কারও কারও ত্বকের অবস্থা দেখে শঙ্কায় পড়ে যেতে হয়।
প্রশ্ন : কেন এমন হচ্ছে?
ডা. ইরিন: লাইফস্টাইল বদলে গেছে। ঘুমের সময় বদলে গেছে। আগে স্কিন কেয়ার নিয়ে ভাবতে হতো না। এখন অল্প বয়সে প্রডাক্ট এক্সপেরিমেন্ট করছে ওরা, না জেনেই। খাবার-দাবারও বড় সমস্যা। আগে যেটা প্রায় ছিলই না। তৈলাক্ত বাইরের খাবারের চল ছিল না। সঙ্গে যুক্ত করতে চাই পরিবেশ দূষণের বিষয়টি। দুই দশক আগেও মুক্ত বাতাসে হেঁটে বেড়ানোর সুযোগ ছিল। কিশোর বয়সে বাইরে খেলাধুলার সুযোগ ছিল। এখন সবাই চার দেয়ালে বন্দি। তার ওপর বেড়েছে গেজেটের ব্যবহার। আছে রাস্তায় যানবাহনের ধোঁয়া। সবমিলিয়েই ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রশ্ন : আপনার পরামর্শ কী?
ডা. ইরিন: তিনটা জিনিসে নিজেকে অভ্যস্ত করতে হবে। লাইফস্টাইল বদলাতে হবে। ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময় সময় ধরে রাখতে হবে। যদি রাত ১১টায় ঘুমাতে যাই তবে রাত ১০টা থেকেই ডিজিটাল দুনিয়া থেকে দুরে থাকতে হবে। আর চাই ব্যালেন্সড ডায়েট। করোনা অতিমারিতে অনেকে অভিযোগ করে জিমে যেতে পারছেন না। কিন্তু শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। নিজ চেষ্টায় বাসাতেই এটা করা যায়। ডিজিটাল দুনিয়ায় যেসব কনটেন্ট মানসিক প্রশান্তি দেয় সেসব দেখার অভ্যাস করলেও মানসিক ক্ষতি এড়ানো যাবে।
প্রশ্ন : প্রডাক্ট এক্সপেরিমেন্টের কথা বলছিলেন, এটা বলতে কী বোঝায়?
ডা. ইরিন: আমাদের প্রত্যেকের ত্বক আলাদা। সেটা আমরা বুঝতে চাই না। অনেক ধরনের পণ্য বাজারে আসে। কোনটা বিশ্বাসযোগ্য বা ত্বকের জন্য মানানসই তা না জেনেই ব্যবহার করার প্রবণতা আছে। কোনও একটি ক্রিম আমার বন্ধুর জন্য কাজ করছে বলে যে সেটা আমারও উপযোগী হবে তা নয়। বিশেষ করে রং ফর্সা করার ক্রিম বিনা পরামর্শে ব্যবহারে যে সমস্যা দেখা দেয় তা নিয়ে অনেক ভুক্তভোগী আসেন। এমন জোর করে রং ফর্সাকারী ক্রিমে প্রথমদিকে ফল পাওয়া গেলেও পরে হাজারটা সমস্যা দেখা দেয়। এরমধ্যে শিসা, পারদ জাতীয় জিনিস থাকে- যা খুব ক্ষতিকর। পরে এসবের ব্যবহারকারীরা রোদে যেতে পারে না, ত্বক আরও নষ্ট হয়। এটা কেবল দেশে নয়, বিদেশেও এমন অনেক রোগী পাওয়া যায়। প্রতিটি ত্বকের আলাদা সৌন্দর্য আছে। এটা বুঝতে হবে।- নারী ও শিশু ডেস্ক
অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের প্রভাব পড়ছে কিশোর ত্বকে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ