নারী ও শিশু ডেস্ক : সম্প্রতি ‘মেসেঞ্জার কিডস’-এ নতুন দুটি গেইম যোগ করেছে ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জারের মালিক প্রতিষ্ঠান ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড’। এই প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ‘মেসেঞ্জার কিডস’ বিভাগের পণ্য-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরিক মাইকেল ওয়েইটজম্যান এক ব্লগ পোস্টে বলেছেন, গেইম কেন্দ্রিক কাজগুলো “শিশুদের কী ভাবে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয় এবং অনলাইনে কী ভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়” সেই বিষয়ে শিখতে সাহায্য করবে।
এর মধ্যে ‘রাফ রিভিউ’ গেইমটিতে শিশুদের গেইমের অভ্যন্তরীণ একটি চরিত্রকে রিভিউ পড়তে সাহায্য করতে হবে এবং প্রতিটি রিভিউয়ের জন্য সঠিক অনলাইন প্রতিক্রিয়া খুঁজে দিতে হবে। গেইমটির শিশুদের নির্দয় ও সদয় আচরণের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে শেখাবে এবং ব্লকিং ও রিপোর্টিং-এর মতো অনলাইন টুল ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তুলবে বলে জানিয়েছে মেটা।
দ্বিতীয় গেইমটির নাম ‘অর্ডার আপ’। এই গেইমে একটি স্যান্ডউইচ বানাতে হবে গেইমারদের। তবে প্রতিবার ক্রেতার মেজাজ বুঝে সঠিক ইমোজি ব্যবহার করতে হবে শিশুদের। এই গেইমটি শিশুদের অনলাইনে মানুুষের মনোভাব বুঝতে শেখাবে বলে দাবি মেটা’র। ওয়েইটজম্যানের দাবি, মেটা ‘মেসেঞ্জার কিডস’-এর শিশু ব্যবহারকারীদের জন্য এই ‘প্লেজ’ এবং ‘প্লেজ প্ল্যানেট’ ফিচারগুলোর তৈরি করেছে অনলাইন নিরাপত্তা ও শিশু উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যথাযথ পরামর্শ নিয়েই।
মেটা মেসেঞ্জার কিডস সেবা চালু করেছিল ২০১৭ সালে। মেসেঞ্জারের মূল সংস্করণের অনেক ফিচারই শিশুদের নাগালের বাইরে রয়েছে বিশেষায়িত সংস্করণটিতে। অভিভাবকদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে ‘মেসেঞ্জার কিডস’ অ্যাকাউন্টগুলো।
কিন্তু, গেল বছরে বিতর্ক আর সমালোচনার মুখে শিশুদের জন্য ইনস্টাগ্রামের আলাদা সংস্করণ নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। মুনাফার লোভে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের বিরূপ প্রভাব অগ্রাহ্য করে গোপন রাখার গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল মেটা’র বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে মেটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিশুদের অনলাইনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার শিক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা আদৌ রাখে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে, প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ বলছে, আদতে অনলাইন নিরাপত্তার নামে গেইমের মাধ্যমে শিশুদের মেসেঞ্জার ব্যবহারই ভালোভাবে শেখাচ্ছে মেটা। অন্যদিকে লক্ষ্যণীয় হারে ব্যবহারকারী হারাচ্ছে মেটা। প্রতিষ্ঠানটির অভন্তরীণ একটি নথি বলছে, আগামী দুই বছরে কিশোর বয়সী ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ হারানোর আশঙ্কা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এমন পরিস্থিতিতে শিশু-কিশোরদের মধ্যে থেকেই ভবিষ্যতের ব্যবহারকারী তৈরি করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক মাধ্যমগুলোর স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানটি।-
‘অনলাইন নিরাপত্তা’র নামে শিশুদের কী শেখাচ্ছে মেসেঞ্জার কিডস?
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ