প্রযুক্তি ডেস্ক : সম্প্রতি যারা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ব্রিটেনের রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, তারা সেখানে উপস্থিত না থাকলেও তাদেরকে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিচারের আওতায় আনা যেতে পারে, এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছেন এক আইনি বিশেষজ্ঞ।
আইনি সংগঠন ‘পেইন হিক্স বিচ’-এর অংশীদার মার্ক জোনস বলেছেন, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় ‘কেউ সেখানে উপস্থিত থেকে খোদ অপরাধ না করলেও অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।’ অনলাইনে সহিংসতার উস্কানি দেওয়া যে কেউই ‘আইনের পূর্ণ শক্তির’ মুখোমুখি হবে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমারের এমন বক্তব্যের পরপরই এ সতর্কবার্তা এল।
গতকাল সোমবার সকালে যুক্তরাজ্যের ‘ক্যাবিনেট অফিস ব্রিফিং রুম’ বা ‘কোবরা’ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে স্টারমার বলেন, “বিভিন্ন অপরাধমূলক আইন বাস্তব জগতের পাশাপাশি অনলাইনের বেলাতেও প্রযোজ্য”।
জোনস আরও যোগ করেন, “যারা অন্যদেরকে কোনো অপরাধ ঘটানোর উস্কানি দিয়ে থাকেন, তারা ‘সেকেন্ডারি পার্টি’ বা দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে পরিচিত।” “তাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই। এর পরও তারা অপরাধ ঘটানো ব্যক্তির মতোই সমান দোষী হতে পারেন।” “অন্য কথায় বললে, একজন মূল হোতা অপরাধ ঘটায়। আর এতে সমর্থন করা বা অনুপ্রেরণা যোগানোর কাজ করে দ্বিতীয় পক্ষ।” “দ্বিতীয় পক্ষের দায়ভার নেওয়ার বিষয়টি সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে বর্তায়, যেখানে সবচেয়ে সাধারণ নজিরগুলো হচ্ছে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা।”
“সোশাল মিডিয়া দুর্ব্যবহার ও অপরাধমূলক কাজ করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। তাই একে অপরাধ ঘটানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করার বাইরে এর অন্যান্য ব্যবহারের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”
যুক্তরাজ্যে উস্কানি সংশ্লিষ্ট আইনের প্রচলন শুরু হয়েছিল সোশাল মিডিয়া যুগের অনেক আগেই, যা দেশটির ‘পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট ১৯৮৬’-এর আওতায় পড়ে। তবে, ২০২৩ সালে বিল থেকে আইনে পরিণত হওয়া ‘অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট’-এ আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। এজন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিকে অবৈধ ও ক্ষতিকারক কনটেন্ট এবং নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীদের গতিবিধি নিয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। সোমবার যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ইভেট কুপার বলেছেন, সরকার কোনো ধরনের ‘অনলাইন গুণ্ডামি’ সহ্য করবে না। আর অনলাইনে ভুল তথ্য ছড়িয়ে এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন।