ঢাকা ১১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ, জড়িত ভারতীয় গণমাধ্যম: প্রেস সচিব

  • আপডেট সময় : ০৮:৫২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শিরোনামের একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে শনিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম জড়িত।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শিরোনামের একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে শফিকুল আলম এ কথাগুলো বলেন।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাংবাদিক জি এম রাজীব হোসেনের এই বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং পতিত স্বৈরাচার, চোরতন্ত্রের জননী ও গুমের জননী চাচ্ছেন বাংলাদেশের ন্যারেটিভকে (বয়ান) চ্যালেঞ্জ করতে। তাঁরা বলছেন তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে, তাঁদের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক ইউনূসকে জঙ্গিদের নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

‘এটা খুবই পরিকল্পিত অপপ্রচার। এর সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়াও জড়িত। হাসিনার অলিগার্কেরা মিলিয়ন ডলার খরচ করছে।’-বলেন শফিকুল আলম। তিনি আরও বলেন, তারা সারা পৃথিবীকে বোঝাতে চাচ্ছে, বাংলাদেশে যা হয়েছে তা আসলে গণ-অভ্যুত্থান নয়। এটা বড় রকমের চক্রান্ত।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের ইতিহাস বদলের চেষ্টা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা ও লেখা প্রকাশিত হয়নি। তিনি বলেন, যে আফতাব আহমেদ বাসন্তীর ছবি তুলেছেন, তিনি রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। কেউ তদন্ত করেনি। রক্ষীবাহিনীর হাতে ৩০ হাজার লোক মারা গিয়েছিল। ১৫ বছর ধরে ইতিহাস মুছে নতুন ইতিহাস চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। শোষণ করার মূল হাতিয়ার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া। যে নিপীড়নকারী, সে নিজেকে নিপীড়নের শিকার বলে জাহির করেছে।

নিজের পরিবারের সদস্যদের কথা উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, তাঁর ভাইকে দিনের পর দিন রাতে রেশনের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। মানুষজনক তাঁদের বাসায় আসত ভাতের মাড়ের জন্য। তিনি নিজেও ভাতের মাড় খেয়েছেন। অথচ সাড়ে ১৫টা বছর বলা হয়েছে শেখ মুজিবের শাসনামল ছিল মহৎ।

শেখ হাসিনা ও তাঁর লোকেরা বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সাড়ে তিন হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দুই হাজার মানুষকে খুন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড হয়েছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর কী ভয়ানক হত্যাকাণ্ড হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে ১৫ বছরের ভয়াবহতাকে তুলে ধরা। আমরা প্রতিটি ক্যাম্পাসে সেমিনার করব। প্রতিটি দেয়ালে সে যে অন্যায় অবিচার করেছে, সেটা আমরা লিখে রাখব, যাতে বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচার এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা ফিরে আসতে না পারে। এটা আমাদের করতে হবে।’

‘যাঁরা ভাবছেন বিপ্লব জুলাই-আগস্টের ২১ দিন, এটা ভুল। তার আগেও ১৫ বছর ধরে লড়াই হয়েছে। আরও ১৫ বছর সংগ্রাম করতে হবে। আমরা একটু থেমে যাব, ওরা আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করবে। এটা যাতে না হয়।’-বলেন শফিকুল আলম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেশ নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা: ফখরুল

অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ, জড়িত ভারতীয় গণমাধ্যম: প্রেস সচিব

আপডেট সময় : ০৮:৫২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম জড়িত।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শিরোনামের একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে শফিকুল আলম এ কথাগুলো বলেন।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাংবাদিক জি এম রাজীব হোসেনের এই বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং পতিত স্বৈরাচার, চোরতন্ত্রের জননী ও গুমের জননী চাচ্ছেন বাংলাদেশের ন্যারেটিভকে (বয়ান) চ্যালেঞ্জ করতে। তাঁরা বলছেন তিন হাজার পুলিশ মারা গেছে, তাঁদের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক ইউনূসকে জঙ্গিদের নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

‘এটা খুবই পরিকল্পিত অপপ্রচার। এর সঙ্গে ভারতীয় মিডিয়াও জড়িত। হাসিনার অলিগার্কেরা মিলিয়ন ডলার খরচ করছে।’-বলেন শফিকুল আলম। তিনি আরও বলেন, তারা সারা পৃথিবীকে বোঝাতে চাচ্ছে, বাংলাদেশে যা হয়েছে তা আসলে গণ-অভ্যুত্থান নয়। এটা বড় রকমের চক্রান্ত।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের ইতিহাস বদলের চেষ্টা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা ও লেখা প্রকাশিত হয়নি। তিনি বলেন, যে আফতাব আহমেদ বাসন্তীর ছবি তুলেছেন, তিনি রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। কেউ তদন্ত করেনি। রক্ষীবাহিনীর হাতে ৩০ হাজার লোক মারা গিয়েছিল। ১৫ বছর ধরে ইতিহাস মুছে নতুন ইতিহাস চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। শোষণ করার মূল হাতিয়ার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া। যে নিপীড়নকারী, সে নিজেকে নিপীড়নের শিকার বলে জাহির করেছে।

নিজের পরিবারের সদস্যদের কথা উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, তাঁর ভাইকে দিনের পর দিন রাতে রেশনের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। মানুষজনক তাঁদের বাসায় আসত ভাতের মাড়ের জন্য। তিনি নিজেও ভাতের মাড় খেয়েছেন। অথচ সাড়ে ১৫টা বছর বলা হয়েছে শেখ মুজিবের শাসনামল ছিল মহৎ।

শেখ হাসিনা ও তাঁর লোকেরা বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সাড়ে তিন হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে দুই হাজার মানুষকে খুন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড হয়েছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পর কী ভয়ানক হত্যাকাণ্ড হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে ১৫ বছরের ভয়াবহতাকে তুলে ধরা। আমরা প্রতিটি ক্যাম্পাসে সেমিনার করব। প্রতিটি দেয়ালে সে যে অন্যায় অবিচার করেছে, সেটা আমরা লিখে রাখব, যাতে বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচার এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা ফিরে আসতে না পারে। এটা আমাদের করতে হবে।’

‘যাঁরা ভাবছেন বিপ্লব জুলাই-আগস্টের ২১ দিন, এটা ভুল। তার আগেও ১৫ বছর ধরে লড়াই হয়েছে। আরও ১৫ বছর সংগ্রাম করতে হবে। আমরা একটু থেমে যাব, ওরা আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করবে। এটা যাতে না হয়।’-বলেন শফিকুল আলম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ। সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।