ঢাকা ০১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অধিনায়কদের পরামর্শ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস বিসিবির

  • আপডেট সময় : ০৭:২৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: মিরপুর একাডেমি মাঠে অনুশীলনে ব্যস্ত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা। ইনডোরের বাইরে বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে ঘাম ঝরাচ্ছেন তখন মোহাম্মদ নাঈম শেখ, আফিফ হোসেনরা। সোমবার সকালের ওই সময়টাতেই বিসিবিতে দেখা গেল বাংলাদেশের নানা সময়ের অধিনায়কদের আনাগোণা। তারা আসেন মূলত বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের আমন্ত্রণে। দেশের ক্রিকেটের সার্বিক উন্নতি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ নিয়ে আলোচনা করতে বিভিন্ন সময়ের অধিনায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বোর্ড প্রধান। এমনকি বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে নিজেদের ব্যাটিং শেষ করে সেখানে যোগ দেন লিটন কুমার দাস ও মুমিনুল হকও।

অধিনায়কদের সঙ্গে বিসিবি প্রধানের এমন বৈঠক দেশের ক্রিকেটে বেশ বিরল ঘটনাই বটে। বিসিবি ভবনে এই সভায় উপস্থিত ছিলেন গাজী আশরাফ হোসেন, আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন, হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল, রাজিন সালেহ, শাহরিয়ার নাফীস, মুমিনুল হক ও লিটন কুমার দাস। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন খালেদ মাসুদ। বিসিবির পক্ষ থেকে সভাপতি ফারুক ছাড়াও ছিলেন পরিচালক নাজমুল আবেদীন ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী। সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত শাহরিয়ার নাফীস জানান, অন্যান্য অধিনায়কদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিসিবি। তবে কর্মব্যস্ততার কারণে সবাই যোগ দিতে পারেননি। অধিনায়কদের নিয়ে আলোচনায় বসার ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ সামনেও চলমান থাকার আশা ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। “অবশ্যই সাবেক অধিনায়ক হিসেবে খুবই ভালো লাগছে। বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করতে পারা একটা গর্বের ব্যাপার। (সভায়) অনেকে ছিলেন। অনেকে কর্মব্যস্ততার কারণে থাকতে পারেননি। তবে তারা বার্তা দিয়েছেন। অবশ্যই ভালো লেগেছে। আশা করি এই ধরনের উদ্যোগ সামনেও অব্যাহত থাকবে।”

পরে সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে ধারণা দেন রাজিন সালেহ। “আলোচনা ছিল মূলত বিপিএল কীভাবে আরও ডেভেলপ করা যায়, সূচিটা কীভাবে আপডেট করা যায়। এছাড়া এনসিএল টি-টোয়েন্টি কখন শুরু করলে আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারব টুর্নামেন্টটা। বিপিএলে আগামীতে যেন আরও ভালো ফ্র্যাঞ্চাইজি আসে, ভালো টুর্নামেন্ট কীভাবে হবে, ভালো বিদেশি ক্রিকেটাররা কীভবে আসবে, কখন তাদের পাব, এসব কথা হয়েছে।” ২০০৪ সালে মাত্র ২০ বছর ২৯৭ দিন বয়সে ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন রাজিন। ওয়ানডেতে তখন তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক। প্রায় ১৪ বছর পর রেকর্ডটি ভাঙেন আফগানিস্তানের রাশিদ খান। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে কোচিংয়ে মন দিয়েছেন রাজিন। জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম শ্রেণির সংস্করণে সবশেষ আসরে তার কোচিংয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট। রাজিন জানান, বিপিএলের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট সার্বিক দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে সভায়। “শুধু বিপিএল নয়, এনসিএল টি-টোয়েন্টিটা কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, পারিপার্শ্বিক সব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আসলে সময় কম ছিল। ফারুক ভাই হয়তো আবার ডাকবেন। সর্বোপরি বাংলাদেশ ক্রিকেট কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়… এমনকি নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট নিয়েও কথা হয়েছে যে, কীভাবে নির্মাণ স্কুল এগিয়ে নেওয়া যায়।” গত বছর জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণের পর এনসিএল টি-টোয়েন্টি আয়োজন করেছিল বিসিবি। সভায় চার দিনের ক্রিকেটের আগে টি-টোয়েন্টি আয়োজনের প্রস্তাবও উঠেছে, বললেন রাজিন।

“এনসিএল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা জাতীয় লিগের চার দিনের পরে হয়েছিল। যখন এটা নিয়ে কথা হয়েছে, আশরাফুল একটা প্রস্তাব রেখেছে যে, টি-টোয়েন্টিটা আমরা জাতীয় লিগের শুরুতে করতে পারি কি না।” “কারণ ওই সময় বৃষ্টির সময় থাকে। অনেক সময় চার দিনের ম্যাচ মিস হয়ে যায়। পয়েন্টের হিসাব থাকে। টি-টোয়েন্টি হলে ওই সময় খেলাটা সহজ হবে। সময়টা যথাযথ কাজে লাগানো যাবে। এরপর জাতীয় লিগ হলে বিপিএলও যথাসময়ে শুরু করা যাবে। টুর্নামেন্ট আরও ভালো হবে।” বিসিবির পক্ষ থেকে সভায় উপস্থিত থাকা নাজমুল আবেদীন আশ্বাস দেন, আলোচ্য বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অচিরেই কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। “আজকের সভায় আগের অধিনায়করা ছিলেন।

তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো আমাদের যে বর্তমান ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস ও মুমিনুল হকও ছিল। ক্রিকেটের এখন কী অবস্থা, সেটা তারা সবচেয়ে ভালো জানে।” “প্রত্যেক অধিনায়কই নিজেদের মতামতগুলো দিয়েছে যে কোন জায়গায় উন্নতি করতে পারি, কোথায় পরিবর্তন দরকার বা কোথায় তেমন ভালো করছি না- এসব নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বোর্ড অবশ্যই এই আলোচনাকে খুবই গুরুত্ব দেবে এবং এটার ভিত্তিতে কিছু সিদ্ধান্ত হবে। যেটা সামনে ক্রিকেট মাঠে বা সূচিতে হয়তো দেখতে পাব।”

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অধিনায়কদের পরামর্শ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস বিসিবির

আপডেট সময় : ০৭:২৬:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: মিরপুর একাডেমি মাঠে অনুশীলনে ব্যস্ত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা। ইনডোরের বাইরে বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে ঘাম ঝরাচ্ছেন তখন মোহাম্মদ নাঈম শেখ, আফিফ হোসেনরা। সোমবার সকালের ওই সময়টাতেই বিসিবিতে দেখা গেল বাংলাদেশের নানা সময়ের অধিনায়কদের আনাগোণা। তারা আসেন মূলত বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের আমন্ত্রণে। দেশের ক্রিকেটের সার্বিক উন্নতি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ নিয়ে আলোচনা করতে বিভিন্ন সময়ের অধিনায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বোর্ড প্রধান। এমনকি বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে নিজেদের ব্যাটিং শেষ করে সেখানে যোগ দেন লিটন কুমার দাস ও মুমিনুল হকও।

অধিনায়কদের সঙ্গে বিসিবি প্রধানের এমন বৈঠক দেশের ক্রিকেটে বেশ বিরল ঘটনাই বটে। বিসিবি ভবনে এই সভায় উপস্থিত ছিলেন গাজী আশরাফ হোসেন, আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন, হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল, রাজিন সালেহ, শাহরিয়ার নাফীস, মুমিনুল হক ও লিটন কুমার দাস। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন খালেদ মাসুদ। বিসিবির পক্ষ থেকে সভাপতি ফারুক ছাড়াও ছিলেন পরিচালক নাজমুল আবেদীন ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী। সভা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত শাহরিয়ার নাফীস জানান, অন্যান্য অধিনায়কদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বিসিবি। তবে কর্মব্যস্ততার কারণে সবাই যোগ দিতে পারেননি। অধিনায়কদের নিয়ে আলোচনায় বসার ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ সামনেও চলমান থাকার আশা ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। “অবশ্যই সাবেক অধিনায়ক হিসেবে খুবই ভালো লাগছে। বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করতে পারা একটা গর্বের ব্যাপার। (সভায়) অনেকে ছিলেন। অনেকে কর্মব্যস্ততার কারণে থাকতে পারেননি। তবে তারা বার্তা দিয়েছেন। অবশ্যই ভালো লেগেছে। আশা করি এই ধরনের উদ্যোগ সামনেও অব্যাহত থাকবে।”

পরে সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে ধারণা দেন রাজিন সালেহ। “আলোচনা ছিল মূলত বিপিএল কীভাবে আরও ডেভেলপ করা যায়, সূচিটা কীভাবে আপডেট করা যায়। এছাড়া এনসিএল টি-টোয়েন্টি কখন শুরু করলে আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারব টুর্নামেন্টটা। বিপিএলে আগামীতে যেন আরও ভালো ফ্র্যাঞ্চাইজি আসে, ভালো টুর্নামেন্ট কীভাবে হবে, ভালো বিদেশি ক্রিকেটাররা কীভবে আসবে, কখন তাদের পাব, এসব কথা হয়েছে।” ২০০৪ সালে মাত্র ২০ বছর ২৯৭ দিন বয়সে ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন রাজিন। ওয়ানডেতে তখন তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক। প্রায় ১৪ বছর পর রেকর্ডটি ভাঙেন আফগানিস্তানের রাশিদ খান। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টেনে কোচিংয়ে মন দিয়েছেন রাজিন। জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম শ্রেণির সংস্করণে সবশেষ আসরে তার কোচিংয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট। রাজিন জানান, বিপিএলের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট সার্বিক দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে সভায়। “শুধু বিপিএল নয়, এনসিএল টি-টোয়েন্টিটা কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, পারিপার্শ্বিক সব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। আসলে সময় কম ছিল। ফারুক ভাই হয়তো আবার ডাকবেন। সর্বোপরি বাংলাদেশ ক্রিকেট কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়… এমনকি নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট নিয়েও কথা হয়েছে যে, কীভাবে নির্মাণ স্কুল এগিয়ে নেওয়া যায়।” গত বছর জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণের পর এনসিএল টি-টোয়েন্টি আয়োজন করেছিল বিসিবি। সভায় চার দিনের ক্রিকেটের আগে টি-টোয়েন্টি আয়োজনের প্রস্তাবও উঠেছে, বললেন রাজিন।

“এনসিএল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা জাতীয় লিগের চার দিনের পরে হয়েছিল। যখন এটা নিয়ে কথা হয়েছে, আশরাফুল একটা প্রস্তাব রেখেছে যে, টি-টোয়েন্টিটা আমরা জাতীয় লিগের শুরুতে করতে পারি কি না।” “কারণ ওই সময় বৃষ্টির সময় থাকে। অনেক সময় চার দিনের ম্যাচ মিস হয়ে যায়। পয়েন্টের হিসাব থাকে। টি-টোয়েন্টি হলে ওই সময় খেলাটা সহজ হবে। সময়টা যথাযথ কাজে লাগানো যাবে। এরপর জাতীয় লিগ হলে বিপিএলও যথাসময়ে শুরু করা যাবে। টুর্নামেন্ট আরও ভালো হবে।” বিসিবির পক্ষ থেকে সভায় উপস্থিত থাকা নাজমুল আবেদীন আশ্বাস দেন, আলোচ্য বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অচিরেই কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। “আজকের সভায় আগের অধিনায়করা ছিলেন।

তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো আমাদের যে বর্তমান ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস ও মুমিনুল হকও ছিল। ক্রিকেটের এখন কী অবস্থা, সেটা তারা সবচেয়ে ভালো জানে।” “প্রত্যেক অধিনায়কই নিজেদের মতামতগুলো দিয়েছে যে কোন জায়গায় উন্নতি করতে পারি, কোথায় পরিবর্তন দরকার বা কোথায় তেমন ভালো করছি না- এসব নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বোর্ড অবশ্যই এই আলোচনাকে খুবই গুরুত্ব দেবে এবং এটার ভিত্তিতে কিছু সিদ্ধান্ত হবে। যেটা সামনে ক্রিকেট মাঠে বা সূচিতে হয়তো দেখতে পাব।”