ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিরিক্ত সময় বসে থাকার সাথে হৃদরোগের ঝুঁকি

  • আপডেট সময় : ০৪:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাজ করলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে- এমনকি অন্য সময়ে ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। বস্টন’য়ের ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের গবেষকদের করা এক পর্যবেক্ষণে এমন ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। গবেষণার প্রধান ও প্রতিষ্ঠানের হৃদবিজ্ঞানের সম্মানিত সদস্য ডা. এজিম আজুফো সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “শারীরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন বা না থাকেন, অতিরিক্ত সময় বসে থাকা এড়ানোর ব্যাপারে আমাদের ফলাফলটি গুরুত্ব দেয়।” সাধারণভাবেই প্রতিষ্ঠিত যে, বেশিক্ষণ বসে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক ঝুঁকিটা কী আর সুস্থ থাকতে কোন ধরনের নির্দেশনা প্রয়োজন, সেটা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন- একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন ‘কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’য়ের ‘বিহেভিওরাল মেডিসিন’য়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেইথ ডিয়াজ। গবেষণার সাথে যুক্ত না থেকেও তিনি বলেন, “আংশিকভাবে হলেও এই পর্যবেক্ষণটি বসে থাকার ক্ষতির বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কারণ এর নমুনা ও তথ্যের ভাণ্ডার ব্যাপক।”
গবেষকরা ‘ইউকে বায়োব্যাংক’য়ের ৯০ হাজার অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যবেক্ষণ করেন। ‘অ্যাকসেলেরোমিটার’ পরিয়ে তাদের অলস ও সক্রিয় সময়ের সাথে তুলনা করা হয়। আর পরের বছর তাদের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং ‘হার্ট ফেউলিয়র’ হয়েছে কিনা সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হয়। ‘জার্নাল অফ দি আমেরিকান কলেন অফ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এই পর্যবেক্ষণে শুধু বসে থাকার সাথে হৃদ-সংক্রান্ত রোগ হওয়ার সম্পর্কই বের করা হয়নি, পাশাপাশি কতক্ষণ বসে থাকটা ক্ষতিকর সেটাও বের করা হয়েছে। ডা. আজুফো বলেন, “আমরা সুপারিশ করছি যে, কেউ যেন ১০.৬ ঘণ্টার বেশি বসে না থাকেন। জনস্বাস্থ্যের জন্য এই নির্দেশনা প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।”
যে কারণে বেশিক্ষণ বসে থাকা খারাপ
গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক। তাই কারণ নয় বরং বসে থাকার সাথে হৃদরোগ হওয়ার সম্পর্কটা দেখানো হয়েছে। ডিয়াজ বলেন, “রক্তে শর্করা ও চর্বি মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজ ভালোভাবে করার জন্য পেশির নড়াচড়ার প্রয়োজন। তাই বসে থাকার ফাঁকে নড়াচড়া করার মাধ্যমে পেশিগুলো উত্তেজিত করলে ভালো মতো কাজ করতে পারে।”
যেভাবে নড়াচড়া করা উপকরী
যদি অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয় তবে প্রতিটা কাজের ফাঁকে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাচলা করতে হবে। অন্তত আধা ঘণ্টা পরপর এই কাজ করা উচিত। “এই ক্ষেত্রে শুধু দাঁড়িয়ে থাকলে কাজ হবে না। কারণ দাঁড়ানোতে পেশির নড়াচড়া হয় না”- বলেন ডা. ডিয়াজ। ছোটখাট মিটিগুলো হেঁটে বা চলতে-ফিরতে করা যেতে পারে। যদিও ফলাফলে দেখা গেছে, সারাদিন বসে থাকার পর দিন শেষে ভালো মানের ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। তাই ব্যায়াম করলেও বসে থাকার ফাঁকে দেহের পেশিগুলোকে নড়াচড়া করাতে হবে। “তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই” – বলেন ডা. ডিয়াজ, “ব্যায়াম বা শরীরচর্চার সুফলের বিষয়টা অগ্রাহ্য করা যাবে না। আর কাজের ফাঁকে হাঁটাহাঁটির অভ্যাসও গড়েতে হবে।”

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অতিরিক্ত সময় বসে থাকার সাথে হৃদরোগের ঝুঁকি

আপডেট সময় : ০৪:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাজ করলে হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে- এমনকি অন্য সময়ে ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। বস্টন’য়ের ‘ব্রিঘাম অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটাল’য়ের গবেষকদের করা এক পর্যবেক্ষণে এমন ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। গবেষণার প্রধান ও প্রতিষ্ঠানের হৃদবিজ্ঞানের সম্মানিত সদস্য ডা. এজিম আজুফো সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “শারীরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন বা না থাকেন, অতিরিক্ত সময় বসে থাকা এড়ানোর ব্যাপারে আমাদের ফলাফলটি গুরুত্ব দেয়।” সাধারণভাবেই প্রতিষ্ঠিত যে, বেশিক্ষণ বসে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক ঝুঁকিটা কী আর সুস্থ থাকতে কোন ধরনের নির্দেশনা প্রয়োজন, সেটা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন- একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন ‘কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’য়ের ‘বিহেভিওরাল মেডিসিন’য়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেইথ ডিয়াজ। গবেষণার সাথে যুক্ত না থেকেও তিনি বলেন, “আংশিকভাবে হলেও এই পর্যবেক্ষণটি বসে থাকার ক্ষতির বিষয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কারণ এর নমুনা ও তথ্যের ভাণ্ডার ব্যাপক।”
গবেষকরা ‘ইউকে বায়োব্যাংক’য়ের ৯০ হাজার অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যবেক্ষণ করেন। ‘অ্যাকসেলেরোমিটার’ পরিয়ে তাদের অলস ও সক্রিয় সময়ের সাথে তুলনা করা হয়। আর পরের বছর তাদের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং ‘হার্ট ফেউলিয়র’ হয়েছে কিনা সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হয়। ‘জার্নাল অফ দি আমেরিকান কলেন অফ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এই পর্যবেক্ষণে শুধু বসে থাকার সাথে হৃদ-সংক্রান্ত রোগ হওয়ার সম্পর্কই বের করা হয়নি, পাশাপাশি কতক্ষণ বসে থাকটা ক্ষতিকর সেটাও বের করা হয়েছে। ডা. আজুফো বলেন, “আমরা সুপারিশ করছি যে, কেউ যেন ১০.৬ ঘণ্টার বেশি বসে না থাকেন। জনস্বাস্থ্যের জন্য এই নির্দেশনা প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।”
যে কারণে বেশিক্ষণ বসে থাকা খারাপ
গবেষণাটি পর্যবেক্ষণমূলক। তাই কারণ নয় বরং বসে থাকার সাথে হৃদরোগ হওয়ার সম্পর্কটা দেখানো হয়েছে। ডিয়াজ বলেন, “রক্তে শর্করা ও চর্বি মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজ ভালোভাবে করার জন্য পেশির নড়াচড়ার প্রয়োজন। তাই বসে থাকার ফাঁকে নড়াচড়া করার মাধ্যমে পেশিগুলো উত্তেজিত করলে ভালো মতো কাজ করতে পারে।”
যেভাবে নড়াচড়া করা উপকরী
যদি অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয় তবে প্রতিটা কাজের ফাঁকে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাচলা করতে হবে। অন্তত আধা ঘণ্টা পরপর এই কাজ করা উচিত। “এই ক্ষেত্রে শুধু দাঁড়িয়ে থাকলে কাজ হবে না। কারণ দাঁড়ানোতে পেশির নড়াচড়া হয় না”- বলেন ডা. ডিয়াজ। ছোটখাট মিটিগুলো হেঁটে বা চলতে-ফিরতে করা যেতে পারে। যদিও ফলাফলে দেখা গেছে, সারাদিন বসে থাকার পর দিন শেষে ভালো মানের ব্যায়াম করলেও এই ঝুঁকি কমে না। তাই ব্যায়াম করলেও বসে থাকার ফাঁকে দেহের পেশিগুলোকে নড়াচড়া করাতে হবে। “তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই” – বলেন ডা. ডিয়াজ, “ব্যায়াম বা শরীরচর্চার সুফলের বিষয়টা অগ্রাহ্য করা যাবে না। আর কাজের ফাঁকে হাঁটাহাঁটির অভ্যাসও গড়েতে হবে।”