ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

২০ বছর পর শিশু মুন্না পাচার মামলার রায়

  • আপডেট সময় : ১২:১৯:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে

যশোর সংবাদদাতা : যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডের শিশু মুন্না পাচার মামলার ২০ বছর পর রায় হয়েছে। আসামি রিকশাচালক তাজুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম কবির এক রায়ে এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত তাজু ময়মনসিংহ শহরের আংকা মোড়লপাড়ার আব্দুল খানের ছেলে। তিনি এখনো পলাতক। আদালতে উপস্থিত ছিলেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সেতারা খাতুন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডের মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের পাশের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ সাধুর ছেলে মুন্না ওই এলাকার একটি গ্যারেজে কাজ করতেন। সেখানে আসা-যাওয়া ছিল তাজুলের। ২০০৩ সালের ৯ জুন তিনি মুন্নাকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। পরে তাকে ভারতে পাচার করে দেন তাজু। এ খবর মুন্নার পরিবার একটি মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে জানতে পারে। ২০০৩ সালের ১০ জুন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ তাজুকে আটক ও শিশু মুন্নাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণনগর থানায় সোপর্দ করে। ভারতের আদালত তাজুকে কারাগারে ও শিশু মুন্নাকে আড়িয়ালদহের ধ্রুব আশ্রমে রাখার আদেশ দেয়। এরপর মুন্নাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবার। এর মাঝে ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর মুন্না অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ সেপ্টেম্বর মুন্না মারা যায়। ভারতীয় প্রশাসন আইনি প্রক্রিয়া শেষে ৬ সেপ্টেম্বর মুন্নার মরদেহ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হস্তান্তর করে পরিবারের কাছে।
এ ঘটনার আট বছর পর শিশু মুন্নাকে ভারতে পাচারের অভিযোগে পাচারকারী তাজুকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন তার বাবা মোহাম্মদ আলী। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামি তাজু ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলেও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা না পাওয়ায় তার অব্যাহতি চেয়ে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেন। এর ওপর শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের নারাজি আবেদন করে। পরে আসামি তাজুকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি তাজুর বিরুদ্ধে শিশু মুন্নাকে পাচারের সত্যতা পাওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

২০ বছর পর শিশু মুন্না পাচার মামলার রায়

আপডেট সময় : ১২:১৯:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

যশোর সংবাদদাতা : যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডের শিশু মুন্না পাচার মামলার ২০ বছর পর রায় হয়েছে। আসামি রিকশাচালক তাজুকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং মানব পাচার দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম কবির এক রায়ে এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত তাজু ময়মনসিংহ শহরের আংকা মোড়লপাড়ার আব্দুল খানের ছেলে। তিনি এখনো পলাতক। আদালতে উপস্থিত ছিলেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর সেতারা খাতুন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডের মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের পাশের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ সাধুর ছেলে মুন্না ওই এলাকার একটি গ্যারেজে কাজ করতেন। সেখানে আসা-যাওয়া ছিল তাজুলের। ২০০৩ সালের ৯ জুন তিনি মুন্নাকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। পরে তাকে ভারতে পাচার করে দেন তাজু। এ খবর মুন্নার পরিবার একটি মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে জানতে পারে। ২০০৩ সালের ১০ জুন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ তাজুকে আটক ও শিশু মুন্নাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণনগর থানায় সোপর্দ করে। ভারতের আদালত তাজুকে কারাগারে ও শিশু মুন্নাকে আড়িয়ালদহের ধ্রুব আশ্রমে রাখার আদেশ দেয়। এরপর মুন্নাকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পরিবার। এর মাঝে ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর মুন্না অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ সেপ্টেম্বর মুন্না মারা যায়। ভারতীয় প্রশাসন আইনি প্রক্রিয়া শেষে ৬ সেপ্টেম্বর মুন্নার মরদেহ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হস্তান্তর করে পরিবারের কাছে।
এ ঘটনার আট বছর পর শিশু মুন্নাকে ভারতে পাচারের অভিযোগে পাচারকারী তাজুকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন তার বাবা মোহাম্মদ আলী। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসামি তাজু ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলেও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা না পাওয়ায় তার অব্যাহতি চেয়ে ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেন। এর ওপর শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের নারাজি আবেদন করে। পরে আসামি তাজুকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য হয়। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি তাজুর বিরুদ্ধে শিশু মুন্নাকে পাচারের সত্যতা পাওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।