ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

স্বামী-স্ত্রীর চেহারায় সাদৃশ্যের কারণ মনোবিজ্ঞানের রহস্য

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক: অনেকে ঠাট্টা করে বলেন, স্বামী-স্ত্রী বহু বছর একসঙ্গে থাকার পর নাকি তাদের চেহারা দেখতে একরম লাগে। কারো কারো মতে, এটা নাকি ভালোবাসার প্রকাশ। দু’জন দু’জনের প্রেমে এতই মগ্ন হয়ে যান যে, কয়েক বছর পর তাদের দেখতে ভাইবোনের মতো লাগে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন কেন এমনটা হয়? এটা কি শুধুই মনের ভাবনা বা চোখের ভুল? না। জানলে অবাক হবেন, এর পেছনে রয়েছে মনোবিজ্ঞানের রহস্য।

এনসিবিআইতে প্রকাশিত এক গবেষণায় হেলথ ও রিটায়ারমেন্ট সার্ভের তথ্যকে ব্যবহার করে এমন কিছু দম্পতির ওপর গবেষণা করা হয়েছিল, যাদের বয়সের পার্থক্য ১০ বছরের। ১২ হাজার ৬৫২ জনের ওপর এই পরীক্ষা করা হয়। ১৯৯২ বা তার আগে করা বিবাহিত দম্পতিদের ওপর পরীক্ষাটি করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সালে বিয়ে করা দম্পতিদের ওপর পরীক্ষা করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, যদি একজন পার্টনার নিজের ব্যবহারে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে আসে, তাহলে দ্বিতীয় সঙ্গীর মধ্যেও সেই বদল চলে আসার জোর সম্ভাবনা থাকে। মনোবিজ্ঞানের মতে, এইভাবে একটি দম্পতি ধীরে ধীরে একে-অপরের মতো দেখতে হয়ে যায়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সত্যকান্ত ত্রিবেদীর মতে, মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে অনেক ধরনের অনুমান দেওয়া হয়েছে। এর রয়েছে ‘ফেসিয়াল মিমিক্রি হাইপোথিসিস’। এই শব্দগুলো দিয়ে বোঝানো হয় স্বামী-স্ত্রী বারবার একে অপরের মুখের ভাব অনুকরণ করে, যা তাদের আবেগ প্রকাশের উপায়গুলোকে একই রকম করে তোলে।

মানুষ যখন দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে থাকে, তখন তারা একে অপরের আবেগ গ্রহণ করতে শুরু করে। ফলে তাদের মুখের ভাবের মধ্যে কিছতা মিল থাকে। যা বাইরে থেকে অন্যদের কাছে একই রকম দেখায়। ঠিক যেমন একসঙ্গে বেড়ে ওঠা ভাই-বোনরা একই রকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি ঠিক তেমন।

স্বামী-স্ত্রীর সাদৃশ্য: কিছু গবেষণা অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষ এমন জীবনসঙ্গী বেছে নেয় যার শারীরিক বৈশিষ্ট্য ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে মিল রয়েছে। এই কারণে সেই সাদৃশ্যগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিণত হয়। ফলে স্বামী-স্ত্রীকে দেখতে একই রকম লাগে।
স্বামী-স্ত্রীর চেহারার মিল নিয়ে গবেষণা বহু বছর ধরেই করা হচ্ছে। ১৯৮৭ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫ ধরে একসঙ্গে থাকা দম্পতির মুখের বৈশিষ্ট্যগুললো প্রায় একই রকম হয়। বিশেষ করে যদি তারা সুখী দম্পতি হয়। এই বিষয়টিকে কাপল ফেসিয়াল সিগনেক্রানাইজেশন বা ম্যারেজ মর্ফিং এফেক্টও বলা যেতে পারে।
এই বিষয়ে আরেক গবেষক জানিয়েছেন, যখন কেউ কারোর সঙ্গে থাকে, তখন সেই সঙ্গীর কিছু অভ্যাস অন্য সঙ্গী খুবই পছন্দ করতে শুরু করে, আর সেটা তার স্মৃতিতে স্থান পেয়ে যায়। অনেকসময় সেই অভ্যাসগুলো অনুকরণ করে তারা। এটা মনের অজান্তেই হয়। মুখের ভাব থেকে শুরু করে হাঁটার ধরন, কথা বলার ধরন থেকে খাওয়ার ধরন- দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে এক সঙ্গীর সবকিছুই অন্যের মধ্যে প্রতিফলিত শুরু করে। আর তখন তাদের একই রকম লাগে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনে দেরি হলে জঙ্গি ও উগ্রপন্থিরাও সুযোগ নেবে: ফখরুল

স্বামী-স্ত্রীর চেহারায় সাদৃশ্যের কারণ মনোবিজ্ঞানের রহস্য

আপডেট সময় : ০৫:৩০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

লাইফস্টাইল ডেস্ক: অনেকে ঠাট্টা করে বলেন, স্বামী-স্ত্রী বহু বছর একসঙ্গে থাকার পর নাকি তাদের চেহারা দেখতে একরম লাগে। কারো কারো মতে, এটা নাকি ভালোবাসার প্রকাশ। দু’জন দু’জনের প্রেমে এতই মগ্ন হয়ে যান যে, কয়েক বছর পর তাদের দেখতে ভাইবোনের মতো লাগে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন কেন এমনটা হয়? এটা কি শুধুই মনের ভাবনা বা চোখের ভুল? না। জানলে অবাক হবেন, এর পেছনে রয়েছে মনোবিজ্ঞানের রহস্য।

এনসিবিআইতে প্রকাশিত এক গবেষণায় হেলথ ও রিটায়ারমেন্ট সার্ভের তথ্যকে ব্যবহার করে এমন কিছু দম্পতির ওপর গবেষণা করা হয়েছিল, যাদের বয়সের পার্থক্য ১০ বছরের। ১২ হাজার ৬৫২ জনের ওপর এই পরীক্ষা করা হয়। ১৯৯২ বা তার আগে করা বিবাহিত দম্পতিদের ওপর পরীক্ষাটি করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সালে বিয়ে করা দম্পতিদের ওপর পরীক্ষা করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, যদি একজন পার্টনার নিজের ব্যবহারে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে আসে, তাহলে দ্বিতীয় সঙ্গীর মধ্যেও সেই বদল চলে আসার জোর সম্ভাবনা থাকে। মনোবিজ্ঞানের মতে, এইভাবে একটি দম্পতি ধীরে ধীরে একে-অপরের মতো দেখতে হয়ে যায়।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সত্যকান্ত ত্রিবেদীর মতে, মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে অনেক ধরনের অনুমান দেওয়া হয়েছে। এর রয়েছে ‘ফেসিয়াল মিমিক্রি হাইপোথিসিস’। এই শব্দগুলো দিয়ে বোঝানো হয় স্বামী-স্ত্রী বারবার একে অপরের মুখের ভাব অনুকরণ করে, যা তাদের আবেগ প্রকাশের উপায়গুলোকে একই রকম করে তোলে।

মানুষ যখন দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে থাকে, তখন তারা একে অপরের আবেগ গ্রহণ করতে শুরু করে। ফলে তাদের মুখের ভাবের মধ্যে কিছতা মিল থাকে। যা বাইরে থেকে অন্যদের কাছে একই রকম দেখায়। ঠিক যেমন একসঙ্গে বেড়ে ওঠা ভাই-বোনরা একই রকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি ঠিক তেমন।

স্বামী-স্ত্রীর সাদৃশ্য: কিছু গবেষণা অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষ এমন জীবনসঙ্গী বেছে নেয় যার শারীরিক বৈশিষ্ট্য ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে মিল রয়েছে। এই কারণে সেই সাদৃশ্যগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও পরিণত হয়। ফলে স্বামী-স্ত্রীকে দেখতে একই রকম লাগে।
স্বামী-স্ত্রীর চেহারার মিল নিয়ে গবেষণা বহু বছর ধরেই করা হচ্ছে। ১৯৮৭ সালে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫ ধরে একসঙ্গে থাকা দম্পতির মুখের বৈশিষ্ট্যগুললো প্রায় একই রকম হয়। বিশেষ করে যদি তারা সুখী দম্পতি হয়। এই বিষয়টিকে কাপল ফেসিয়াল সিগনেক্রানাইজেশন বা ম্যারেজ মর্ফিং এফেক্টও বলা যেতে পারে।
এই বিষয়ে আরেক গবেষক জানিয়েছেন, যখন কেউ কারোর সঙ্গে থাকে, তখন সেই সঙ্গীর কিছু অভ্যাস অন্য সঙ্গী খুবই পছন্দ করতে শুরু করে, আর সেটা তার স্মৃতিতে স্থান পেয়ে যায়। অনেকসময় সেই অভ্যাসগুলো অনুকরণ করে তারা। এটা মনের অজান্তেই হয়। মুখের ভাব থেকে শুরু করে হাঁটার ধরন, কথা বলার ধরন থেকে খাওয়ার ধরন- দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে এক সঙ্গীর সবকিছুই অন্যের মধ্যে প্রতিফলিত শুরু করে। আর তখন তাদের একই রকম লাগে।