শিশুকে জোর করবেন না: অনেকে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। এতে শিশু আরও ভড়কে যায়। তাই শিশু ঘুম থেকে উঠলে তাকে দাঁত ব্রাশ করতে দিন। এরপর হালকা নাস্তা দিন। তাকে নিজের হাতে খেতে বলুন। খাবার নিয়ে পেছন পেছন ছুটবেন না। এটি তখন শিশুর কাছে এক ধরনের খেলা হয়ে উঠবে। শিশু যেন বুঝতে পারে যে খাবারটি নিজ হাতে খাওয়াই তার দায়িত্ব। অনেকে আবার শিশুকে চকোলেট, চিপস, চানাচুর, প্যাকেটের জুস এ জাতীয় খাবার দেন। এগুলো একদমই দেবেন না। কারণ এসব খাবার মুখরোচক ঠিকই কিন্তু কোনো ধরনের পুষ্টি থাকে না। এগুলো খেলে শিশুর ক্ষুধা নষ্ট হয়ে যাবে।
ঘন ঘন খেতে দেবেন না: তিনবেলা মূল খাবারের মধ্যে ভারী কোনো খাবার দেবেন না। যেমন ধরুন, ভাত খাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে দুধ দেওয়া উচিত নয়। আবার শিশুরস্কুল বেলা ১২টায় ছুটি হলে স্কুল থেকে ফিরে আসার পর তেমন কিছু খেতে দেবেন না। তার ক্ষুধা লাগার জন্য সময় দিন। এতে দুপুরের খাবার সে আগ্রহ নিয়ে খাবে।
অহেতুক চিন্তা করছেন না তো: অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শিশু তার চাহিদা অনুযায়ী খেলেও বাবা-মা অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। হয়তো অন্য শিশুর সঙ্গে তুলনা করে তাদের মনে হচ্ছে শিশু কম খাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঠিক থাকলে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।
শিশুর শারীরিক কোনও সমস্যা আছে কিনা: কিছু শিশু প্রয়োজনের চেয়েও কম খায়। ফলে তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এসব শিশুর ক্ষেত্রে সচেতনতা জরুরি। আগে বুঝে নিন শিশু অপুষ্টির শিকার হচ্ছে কিনা বা সে রক্তশূন্যতা ভুগছে কিনা। শিশুর ঘন ঘন কোনও সংক্রমণ হচ্ছে কিনা, যার জন্য খাওয়ায় রুচি কমে যাচ্ছে অথবা কৃমি আছে কিনা তাও জানার চেষ্টা করুন।
মধ্যবর্তী সময়ে ভারি খাবার নয়: দুপুরের খাবার কিংবা রাতের খাবারের মধ্যবর্তী সময় হালকা স্ন্যাকস বা ফল দিতে পারেন। এমন কোনও খাবার দেবেন না যেগুলো ক্ষুধা নষ্ট করে দেয়।
চকোলেট, চিপস, কোল্ড ড্রিংক নয়: শিশুদের বাইরের খাবার ও অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে রাখুন। চকোলেট, চিপস বা কোল্ড ড্রিংক ধরনের খাবার শিশুর ক্ষুধামন্দার অন্যতম কারণ। এগুলো শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যও ভীষণ ক্ষতিকর।
খাবারে বৈচিত্র্য আনুন: এক খাবার রোজ রোজ দেবেন না। যেমন রোজ ডিম সেদ্ধ না দিয়ে ডিমের তৈরি নানান ধরনের পদ পরিবেশ করুন। পুডিং করে দিতে পারেন। দুধের ক্ষেত্রেও প্রতিদিন একইভাবে না দিয়ে বিভিন্ন পদ করে দিতে পারেন। যেমন পায়েস বা ফিরনি। ফল খেতে না চাইলে কাস্টার্ড বানিয়ে খাওয়াতে পারেন।
খাবার পরিবেশনে ভিন্নতা আনুন: খাবার পরিবেশনে বৈচিত্র্য আনলেও শিশুর খাওয়ায় প্রতি আগ্রহ বাড়ে। রঙিন থালায় খাবার পরিবেশন করতে পারেন। খাবার টেবিল সুন্দর ও আকর্ষণীয়ভাবে সাজিয়ে দিন। প্লেটে বিভিন্ন ধরনের রঙিন শাকসবজি সাজিয়ে দিতে পারেন।
রঙিন পাত্রে খেতে দিন: শিশুরা সবকিছু রঙিন পছন্দ করে। তাই তাদের খাবারের পাত্রগুলো রঙিন হওয়াটাই ভালো। রঙিন থালা-বাটিতে তাদের খাবার খেতে দিন। সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন। এতে খাবারের প্রতি শিশুর আগ্রহ বাড়বে। খাওয়ার সময় টিভি বা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকতে দেবেন না। এতে তারা খাবার খাবে ঠিকই কিন্তু খাবারের দিকে মনোযোগ থাকবে না।
শিশুর স্ক্রিন টাইম কমান: খেলাধুনা না করে সারাক্ষণ যেন শিশু টিভি বা গ্যাজেট নিয়ে ব্যস্ত না থাকে। টিভি দেখা কমিয়ে পর্যাপ্ত খেলার ব্যবস্থা করে দিন। শিশুর ক্ষুধা বেড়ে যাবে।
সংবাদ শিরোনাম ::
শিশু খেতে না চাইলে করণীয়
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ