নিজস্ব প্রতিবেদক: অপহরণ ও গুমের মামলায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ সোহায়েলকে আগামী ১৮ জুন হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ আদেশ দেয়।
কৌঁসুলি মিজানুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালের দিকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে ছাত্রশিবিরের গোলাম মর্তূর্জা নিহিমকে তুলে নিয়ে যায় রাব সদস্যরা। পরে আয়নাঘরে নিয়ে ৪৭ দিন আটকে রেখে। সোহায়েলের নির্দেশে এই মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
২০১০ সাল থেকে দুই বছর র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক থাকার সময় ব্যাপক পরিচিতি পান সোহায়েল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চাকরিতে তার দ্রুত উন্নতি ঘটে।
দুর্নীতি, জোরপূর্বক আটকে রেখে নির্যাতন, হত্যা, গুমসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর গত ১৯ আগস্ট সোহায়েলকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। পরদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ সোহায়েল কমোডর থেকে রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি পান। অভিযোগ ওঠে, কোনো জাহাজ বা ঘাঁটি কমান্ড কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কোর্স না করেই শেখ হাসিনা সরকারের আনুকূল্যে রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।
মোহাম্মদ সোহায়েল এক বছরের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত বছরের ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার আগে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর গত ৭ আগস্ট বন্দর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে তাকে নৌবাহিনীর ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিনের কমান্ডার হিসেবে বদলি করা হয়েছিল।
এদিকে সাভারের আশুলিয়ায় ছয় লাশ পোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- সাবেক এডিসি শহীদুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ হিল কাফি এবং ওসি আরাফাত হোসেন।
তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদনে কৌঁসুলি মিজানুল ইসলাম বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ মাসে রিপোর্ট দাখিল করতে পারব। এদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুবলীগ ক্যাডার তৌহিদুল ইসলাম ওরফে ফরিদকে ৭ জুলাই ট্রাইবুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৌঁসুলি আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, গত ১৬ ও ১৮ জুলাই চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে থেকে এই হামলা চালিয়েছে। এতে ১১ জন শহীদ ও আহত হয়েছে ৪০০ জন। এই হামলায় অংশ নিয়ে ২৫ রাউন্ড গুলি করেছে তৌহিদ।
চট্টগ্রামের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ২৫ মার্চ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।