ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক দল ৫৩ বছরেও রাষ্ট্রের সংস্কার কেন করেনি -প্রশ্ন রিজওয়ানার

  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচিত সরকারের অধীনে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তোলায় রাজনৈতিক দলগুলোর অতীতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, আজকে তারা বলছে, সংস্কার তারাই সবচেয়ে ভালো করতে পারবে, এটাই তো গণতান্ত্রিক দেশের কথা। তাইলে তারা ৫৩ বছর কেন করেন নাই?
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) গুলশান সোসাইটি জামে মসজিদের সামনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক এক কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা বলেন, কেন আজকে আমাদের দায়িত্ব নেওয়া লাগল, উড ইউ প্লিজ অ্যানসার?
তাদেরকে (রাজনৈতিক দল) ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না- এটা সঠিক কথা, এটাই তো হওয়া উচিত। তিনি বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার সমাধান করবে। তাইলে আজকে বায়ুদূষণ নিয়ে আমাকে কেন প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। শব্দ দূষণ নিয়ে গুলশান সোসাইটিকে কেন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হচ্ছে। তারা যে সমস্যার সমাধান করে ফেলবে- তারা কি কোনো রূপকল্প আমাদেরকে দিয়েছে? তারা বলছে, রোডম্যাপ দিতে হবে, এই করতে হবেৃ। তারা কি একটি রোডম্যাপ দিয়েছে যে তারা কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করবে?
এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, নির্বাচন কতদূর তা প্রধান উপদেষ্টা নিজেই আপনাদের জানাবেন। তিনি বলেন, একটা নির্বাচনের দিকে যেতেই হবে এই দেশকে- এটাই হচ্ছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় প্রাধান্য; ঠিক তেমনই সংস্কারও বড় একটি প্রাধান্য। সংস্কারের কথা তো আমরা বলি নাই, জনগণের কাছ থেকেই তো সংস্কারের কথা ঊঠে এসে; সেটাও বিচার করতে হবে।
রাজনীতিকদের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজওয়ানা বলেন, যারা নির্বাচন চাচ্ছেন, তারা কেন আজকে বলছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারা যদি সত্যিকারের গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারতেন, তাহলে তো তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা তুলতেন না- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংশোধনীটা বাতিল করে দেওয়াটা ভুল ছিল। কেন তাহলে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলো একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারে না।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নানা বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে গত সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর দুই দেশের তরফেই সম্পর্কোন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশ) সম্পর্ক নন-ফাংশনাল (নিষ্ক্রিয়) মোটেও নয়; যদি নন-ফাংশনাল হত, তাহলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে আসতেন না। তিনি এসে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে গেছেন।
একটা রাজনৈতিক কারণকে কেন্দ্র করে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি মেঘ এসেছিল, আমাদের উভয়ের স্বার্থে সেটা সড়াতে হবে। আর সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে। এখন সব কিছুরই যদি তাড়াতাড়ি সমাধান চাই, তাহলে হবে না।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমরা বারবার বলছি, সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই। ভারতও বলেছে, তারা সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়।
ঢাকা সফরের পর বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে হাজির হয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা ভারত ‘সমর্থন করে না’। আর তার কথাবার্তা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘অস্বস্তির কারণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিজওয়ানা বলেন, “বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান, এটাকে অস্বীকার করে পারস্পরিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে ও স্বীকার করছে এবং তারা এটাও বলছে, অনেক রাজনৈতিক বক্তব্য তারা আগের মতো করে আর মানছে না। তাতে আমি মনে করি, সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

রাজনৈতিক দল ৫৩ বছরেও রাষ্ট্রের সংস্কার কেন করেনি -প্রশ্ন রিজওয়ানার

আপডেট সময় : ০৯:০৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচিত সরকারের অধীনে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি তোলায় রাজনৈতিক দলগুলোর অতীতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, আজকে তারা বলছে, সংস্কার তারাই সবচেয়ে ভালো করতে পারবে, এটাই তো গণতান্ত্রিক দেশের কথা। তাইলে তারা ৫৩ বছর কেন করেন নাই?
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) গুলশান সোসাইটি জামে মসজিদের সামনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক এক কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা বলেন, কেন আজকে আমাদের দায়িত্ব নেওয়া লাগল, উড ইউ প্লিজ অ্যানসার?
তাদেরকে (রাজনৈতিক দল) ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না- এটা সঠিক কথা, এটাই তো হওয়া উচিত। তিনি বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার সমাধান করবে। তাইলে আজকে বায়ুদূষণ নিয়ে আমাকে কেন প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। শব্দ দূষণ নিয়ে গুলশান সোসাইটিকে কেন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হচ্ছে। তারা যে সমস্যার সমাধান করে ফেলবে- তারা কি কোনো রূপকল্প আমাদেরকে দিয়েছে? তারা বলছে, রোডম্যাপ দিতে হবে, এই করতে হবেৃ। তারা কি একটি রোডম্যাপ দিয়েছে যে তারা কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করবে?
এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, নির্বাচন কতদূর তা প্রধান উপদেষ্টা নিজেই আপনাদের জানাবেন। তিনি বলেন, একটা নির্বাচনের দিকে যেতেই হবে এই দেশকে- এটাই হচ্ছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় প্রাধান্য; ঠিক তেমনই সংস্কারও বড় একটি প্রাধান্য। সংস্কারের কথা তো আমরা বলি নাই, জনগণের কাছ থেকেই তো সংস্কারের কথা ঊঠে এসে; সেটাও বিচার করতে হবে।
রাজনীতিকদের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজওয়ানা বলেন, যারা নির্বাচন চাচ্ছেন, তারা কেন আজকে বলছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তারা যদি সত্যিকারের গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারতেন, তাহলে তো তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা তুলতেন না- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংশোধনীটা বাতিল করে দেওয়াটা ভুল ছিল। কেন তাহলে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলো একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারে না।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নানা বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে গত সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর দুই দেশের তরফেই সম্পর্কোন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশ) সম্পর্ক নন-ফাংশনাল (নিষ্ক্রিয়) মোটেও নয়; যদি নন-ফাংশনাল হত, তাহলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে আসতেন না। তিনি এসে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে গেছেন।
একটা রাজনৈতিক কারণকে কেন্দ্র করে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি মেঘ এসেছিল, আমাদের উভয়ের স্বার্থে সেটা সড়াতে হবে। আর সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে। এখন সব কিছুরই যদি তাড়াতাড়ি সমাধান চাই, তাহলে হবে না।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমরা বারবার বলছি, সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই। ভারতও বলেছে, তারা সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়।
ঢাকা সফরের পর বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে হাজির হয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা ভারত ‘সমর্থন করে না’। আর তার কথাবার্তা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘অস্বস্তির কারণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিজওয়ানা বলেন, “বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান, এটাকে অস্বীকার করে পারস্পরিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে ও স্বীকার করছে এবং তারা এটাও বলছে, অনেক রাজনৈতিক বক্তব্য তারা আগের মতো করে আর মানছে না। তাতে আমি মনে করি, সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।”