ঢাকা ০১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যে সিমেন্ট ব্যবহারে বাড়িই হয়ে যাবে ‘বিশাল ব্যাটারি’

  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : নির্মাণ শিল্পে সম্ভবত গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত উপাদান হল কংক্রিট। এখন দেখা যাচ্ছে খানিকটা এদিকসেদিক করে নিলে এই কংক্রিটই হয়ে উঠতে পারে বাড়িতে বিদ্যুৎ যোগানোয় সহায়ক। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত কেমব্রিজ শহরের এক পরীক্ষাগারে একগুচ্ছ পালিশ করা কালো রঙের কংক্রিটের সিলিন্ডারকে এক ধরনের তরলে স্নান করানো হয়েছে। আর তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন তার। সাধারণ চোখে এর তেমন কোনো বৈশিষ্ট্য ধরা না পড়লেও পরবর্তীতে এমআইটি’র গবেষক ড্যামিয়ান স্টেফানিউক একটি সুইচে চাপ দেন। এর পর কংক্রিট ব্লকের সঙ্গে তারের মাধ্যমে একটি এলইডি বাল্ব যোগ করলে, তা সঙ্গে সঙ্গেই জ্বলে ওঠে।
“প্রথমে আমি এটা বিশ্বাস করিনি,” প্রথমবার এলইডি বাল্ব জ্বলে ওঠার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন স্টেফানিউক। “আমি ভেবেছি, এলইডি বাল্বের সঙ্গে বিদ্যুৎসংযোগ সম্ভবত কোনো কারণে বিচ্ছিন্ন না করায় এটি জ্বলে ছিল।” এই ঘটনা দিনাটিকেই অসাধারণ করে তোলে। আমরা শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদেরকে এটা দেখার আমন্ত্রণ জানাই। প্রথমে তারাও বিশ্বাস করতে পারেননি যে, এটা কাজ করেছে।” এই আগ্রহের কারণ? তা হল, বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের ভবিষ্যৎ প্রতিনিধি হিসেবে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে কংক্রিটের এই নিরীহ, কালো পিণ্ড।
বেশিরভাগ নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের প্রতিশ্রুতি হল সীমাহীন পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ সরবরাহ, যা মূলত সূর্য বা সমুদ্র থেকে আসবে। তবে, সূর্যের আলো সবসময় একই রকম থাকে না, বায়ু প্রবাহও সব সময় একই থাকে না এমনকি মেগাওয়াটের হিসাবে পানির বিভিন্ন উৎসও এতটা গভীর নয়। এমন শক্তির উৎস বিরতিহীন বিদ্যুৎ দিতে পারলেও এই বিদ্যুৎবুভুক্ষ আধুনিক বিশ্বের জন্য এই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের শর্ত পূরণ না করা একটি ঝুঁকি বটে। এর মানে, বিদ্যুৎকে ব্যাটারির মধ্যে সঞ্চয় করতে হবে। তবে এটি লিথিয়ামের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। আর এই লিথিয়ামের সরবরাহ চাহিদার চেয়ে কম। আর এটি গোটা বিশ্বের বিদ্যুৎ ও পরিবহন ব্যবস্থাকে কার্বন নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যপূরণে যথেষ্ট হবে কি না, সেটাও বড় এক প্রশ্ন। গোটা বিশ্বে লিথিয়ামের খনি আছে ১০১টি, যেখানে ব্যাটারির বাড়তে থাকা বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে এইসব খনির সক্ষমতা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, লিথিয়াম মাইনিং করার সময় অনেক বিদ্যুৎ ও পানি খরচ হয়, যা নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে পরিবেশগত সুবিধা পাওয়ার শর্তটির একেবারে বিপরীত। আর এ প্রক্রিয়ায় লিথিয়াম বের করে আনার ক্ষেত্রে বিষাক্ত রাসয়নিকও ব্যবহার করা হয়, যা কখনও কখনও স্থানীয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গেও মিশে যেতে পারে। লিথিয়ামের মজুদওয়ালা কয়েকটি নতুন জায়গার খোঁজ মিললেও, এর সরবরাহে সীমাবদ্ধতা, গোটা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি খনির ওপর অতি নির্ভরতা ও এর পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে ব্যাটারির জন্য বিকল্প উপাদানও খোঁজা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে যোগানদাতা হয়ে এসেছেন স্টেফানিউক ও তার কংক্রিটের ব্লক। তিনি ও তার এমআইটি’র সহকর্মীরা ‘সুপারক্যাপাসিটর’ নামে পরিচিত এনার্জি স্টোরেজ ডিভাইস তৈরির এমন উপায় খুঁজে পেয়েছেন, যা তিনটি মৌলিক, সাশ্রয়ী উপাদান অর্থাৎ পানি, সিমেন্ট ও ‘কার্বন ব্ল্যাক’ নামের পদার্থ দিয়েই বানানো যাবে।

সুপারক্যাপাসিটর বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের খুবই কার্যকর এক উপায়, তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এটি ব্যাটারি থেকে আলাদাভাবে কাজ করে। আর এগুলো লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে দ্রুত চার্জ হয়। আর এর কার্যকারিতার স্তরেও তেমন বিচ্যুতি ঘটে না। তবে, এগুলো থেকে বিদ্যুৎ খুব দ্রুত প্রবাহিত হওয়ায়, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে এটি কাজে আসে না, যেখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য কিছুটা ধীরগতির বিদ্যুৎ প্রবাহ লাগে। তবে স্টেফানিউকের মতে, কার্বন-সিমেন্টের তৈরি সুপারক্যাপাসিটর বৈশ্বিক অর্থনীতিকে কার্বন নিরপেক্ষ করার প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। “উৎপাদনের পরিসর বাড়ানো গেলে, এ প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক সমস্যার সমাধান দিতে পারে, তা হল নবায়নযোগ্য শক্তি সঞ্চয় করা,” বলেন তিনি। এজন্য তিনি ও তার সঙ্গে এমআইটি ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি’র ‘ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিকালি ইনস্পায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর গবেষকরা এমন সুপাক্যাপাসিটর তৈরির মতো বেশ কয়েকটি উপাদানের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখেছেন। এর একটি উপায় হতে পারে এমন রাস্তা তৈরি করা, যা সৌরশক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে ও পরবর্তীতে সে বিদ্যুৎ ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া বিদ্যুচ্চালিত গাড়িকে তার ছাড়াই চার্জ দিতে পারবে। কার্বন-সিমেন্টের তৈরি সুপারক্যাপাসিটর থেকে দ্রুত প্রবাহিত হওয়া বিদ্যুতের সহায়তায় বিভিন্ন গাড়ির ব্যাটারি সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ণ চার্জ হয়ে যাওয়ার সুযোগও তৈরি হতে পারে। আরেকটি উপায় হতে পারে, বিভিন্ন বাড়ির ভিত্তিপ্রস্তরে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা। “এ ধরনের দেওয়াল, ভিত্তিপ্রস্তর বা কলাম শুধু ওই অবকাঠামোকেই সমর্থন করবে না, বরং এর মধ্যে বিদ্যুৎও সঞ্চয় করে রাখা যাবে, ” বলেন স্টেফানিউক। তবে এখনও ধারণাটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। আপাতত কংক্রিটের তৈরি সুপারক্যাপাসিটরে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা যায় প্রতি কিউবিক মিটারে তিনশ ওয়াট আওয়ারের একটু কম, যা ১০ ওয়াটের এলইডি বাল্বকে ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ প্রবাহ দেওয়ার মতো যথেষ্ট। গোটা বিশ্বে মানুষের কার্যক্রম থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের পাঁচ থেকে আট শতাংশে ভূমিকা রাখে সিমেন্ট উৎপাদন শিল্প।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

যে সিমেন্ট ব্যবহারে বাড়িই হয়ে যাবে ‘বিশাল ব্যাটারি’

আপডেট সময় : ১০:৫৫:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : নির্মাণ শিল্পে সম্ভবত গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত উপাদান হল কংক্রিট। এখন দেখা যাচ্ছে খানিকটা এদিকসেদিক করে নিলে এই কংক্রিটই হয়ে উঠতে পারে বাড়িতে বিদ্যুৎ যোগানোয় সহায়ক। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত কেমব্রিজ শহরের এক পরীক্ষাগারে একগুচ্ছ পালিশ করা কালো রঙের কংক্রিটের সিলিন্ডারকে এক ধরনের তরলে স্নান করানো হয়েছে। আর তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন তার। সাধারণ চোখে এর তেমন কোনো বৈশিষ্ট্য ধরা না পড়লেও পরবর্তীতে এমআইটি’র গবেষক ড্যামিয়ান স্টেফানিউক একটি সুইচে চাপ দেন। এর পর কংক্রিট ব্লকের সঙ্গে তারের মাধ্যমে একটি এলইডি বাল্ব যোগ করলে, তা সঙ্গে সঙ্গেই জ্বলে ওঠে।
“প্রথমে আমি এটা বিশ্বাস করিনি,” প্রথমবার এলইডি বাল্ব জ্বলে ওঠার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন স্টেফানিউক। “আমি ভেবেছি, এলইডি বাল্বের সঙ্গে বিদ্যুৎসংযোগ সম্ভবত কোনো কারণে বিচ্ছিন্ন না করায় এটি জ্বলে ছিল।” এই ঘটনা দিনাটিকেই অসাধারণ করে তোলে। আমরা শিক্ষার্থী ও অধ্যাপকদেরকে এটা দেখার আমন্ত্রণ জানাই। প্রথমে তারাও বিশ্বাস করতে পারেননি যে, এটা কাজ করেছে।” এই আগ্রহের কারণ? তা হল, বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের ভবিষ্যৎ প্রতিনিধি হিসেবে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে কংক্রিটের এই নিরীহ, কালো পিণ্ড।
বেশিরভাগ নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের প্রতিশ্রুতি হল সীমাহীন পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ সরবরাহ, যা মূলত সূর্য বা সমুদ্র থেকে আসবে। তবে, সূর্যের আলো সবসময় একই রকম থাকে না, বায়ু প্রবাহও সব সময় একই থাকে না এমনকি মেগাওয়াটের হিসাবে পানির বিভিন্ন উৎসও এতটা গভীর নয়। এমন শক্তির উৎস বিরতিহীন বিদ্যুৎ দিতে পারলেও এই বিদ্যুৎবুভুক্ষ আধুনিক বিশ্বের জন্য এই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের শর্ত পূরণ না করা একটি ঝুঁকি বটে। এর মানে, বিদ্যুৎকে ব্যাটারির মধ্যে সঞ্চয় করতে হবে। তবে এটি লিথিয়ামের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। আর এই লিথিয়ামের সরবরাহ চাহিদার চেয়ে কম। আর এটি গোটা বিশ্বের বিদ্যুৎ ও পরিবহন ব্যবস্থাকে কার্বন নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যপূরণে যথেষ্ট হবে কি না, সেটাও বড় এক প্রশ্ন। গোটা বিশ্বে লিথিয়ামের খনি আছে ১০১টি, যেখানে ব্যাটারির বাড়তে থাকা বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে এইসব খনির সক্ষমতা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, লিথিয়াম মাইনিং করার সময় অনেক বিদ্যুৎ ও পানি খরচ হয়, যা নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে পরিবেশগত সুবিধা পাওয়ার শর্তটির একেবারে বিপরীত। আর এ প্রক্রিয়ায় লিথিয়াম বের করে আনার ক্ষেত্রে বিষাক্ত রাসয়নিকও ব্যবহার করা হয়, যা কখনও কখনও স্থানীয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গেও মিশে যেতে পারে। লিথিয়ামের মজুদওয়ালা কয়েকটি নতুন জায়গার খোঁজ মিললেও, এর সরবরাহে সীমাবদ্ধতা, গোটা বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি খনির ওপর অতি নির্ভরতা ও এর পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে ব্যাটারির জন্য বিকল্প উপাদানও খোঁজা হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে যোগানদাতা হয়ে এসেছেন স্টেফানিউক ও তার কংক্রিটের ব্লক। তিনি ও তার এমআইটি’র সহকর্মীরা ‘সুপারক্যাপাসিটর’ নামে পরিচিত এনার্জি স্টোরেজ ডিভাইস তৈরির এমন উপায় খুঁজে পেয়েছেন, যা তিনটি মৌলিক, সাশ্রয়ী উপাদান অর্থাৎ পানি, সিমেন্ট ও ‘কার্বন ব্ল্যাক’ নামের পদার্থ দিয়েই বানানো যাবে।

সুপারক্যাপাসিটর বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের খুবই কার্যকর এক উপায়, তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এটি ব্যাটারি থেকে আলাদাভাবে কাজ করে। আর এগুলো লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির চেয়ে দ্রুত চার্জ হয়। আর এর কার্যকারিতার স্তরেও তেমন বিচ্যুতি ঘটে না। তবে, এগুলো থেকে বিদ্যুৎ খুব দ্রুত প্রবাহিত হওয়ায়, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে এটি কাজে আসে না, যেখানে দীর্ঘ সময়ের জন্য কিছুটা ধীরগতির বিদ্যুৎ প্রবাহ লাগে। তবে স্টেফানিউকের মতে, কার্বন-সিমেন্টের তৈরি সুপারক্যাপাসিটর বৈশ্বিক অর্থনীতিকে কার্বন নিরপেক্ষ করার প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। “উৎপাদনের পরিসর বাড়ানো গেলে, এ প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক সমস্যার সমাধান দিতে পারে, তা হল নবায়নযোগ্য শক্তি সঞ্চয় করা,” বলেন তিনি। এজন্য তিনি ও তার সঙ্গে এমআইটি ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি’র ‘ইনস্টিটিউট অফ বায়োলজিকালি ইনস্পায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর গবেষকরা এমন সুপাক্যাপাসিটর তৈরির মতো বেশ কয়েকটি উপাদানের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখেছেন। এর একটি উপায় হতে পারে এমন রাস্তা তৈরি করা, যা সৌরশক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে ও পরবর্তীতে সে বিদ্যুৎ ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া বিদ্যুচ্চালিত গাড়িকে তার ছাড়াই চার্জ দিতে পারবে। কার্বন-সিমেন্টের তৈরি সুপারক্যাপাসিটর থেকে দ্রুত প্রবাহিত হওয়া বিদ্যুতের সহায়তায় বিভিন্ন গাড়ির ব্যাটারি সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ণ চার্জ হয়ে যাওয়ার সুযোগও তৈরি হতে পারে। আরেকটি উপায় হতে পারে, বিভিন্ন বাড়ির ভিত্তিপ্রস্তরে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা। “এ ধরনের দেওয়াল, ভিত্তিপ্রস্তর বা কলাম শুধু ওই অবকাঠামোকেই সমর্থন করবে না, বরং এর মধ্যে বিদ্যুৎও সঞ্চয় করে রাখা যাবে, ” বলেন স্টেফানিউক। তবে এখনও ধারণাটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। আপাতত কংক্রিটের তৈরি সুপারক্যাপাসিটরে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা যায় প্রতি কিউবিক মিটারে তিনশ ওয়াট আওয়ারের একটু কম, যা ১০ ওয়াটের এলইডি বাল্বকে ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ প্রবাহ দেওয়ার মতো যথেষ্ট। গোটা বিশ্বে মানুষের কার্যক্রম থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের পাঁচ থেকে আট শতাংশে ভূমিকা রাখে সিমেন্ট উৎপাদন শিল্প।