বিদেশের খবর ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনায় কিয়েভকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে বিবিসিকে জানিয়েছে ইউক্রেনের সরকারের একটি সূত্র। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলোগ কিয়েভের অংশগ্রহণ থাকবে বলে দাবি করলেও ইউক্রেন সরকারের এক সূত্র প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ওই আলোচনায় ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি থাকবে না। আগে কেলোগ ইউরোপকে সৌদি আরবে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে বলেন, ‘আগের আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল অতিরিক্ত পক্ষ জড়িত থাকার কারণে। এটি হয়তো কারও কাছে একটু কঠিন শোনাতে পারে, কারও কাছে বিরক্তিকর লাগতে পারে, কিন্তু আমি একদম সত্য কথা বলছি।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একাধিকবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তিচুক্তি তিনি মেনে নেবেন না। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে, আমি তা কখনোই মেনে নেব না, কখনোই না। দিকে ইউরোপীয় নেতাদেরও এই আলোচনায় যোগ দিতে বলা হয়নি। ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এই সম্মেলনের আয়োজক ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় ইউরোপকে যুক্ত না করা নিয়ে উদ্বেগ থেকেই ইউরোপীয় নেতারা এই জরুরি সম্মেলন করছেন। হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার প্রথম মুখোমুখি আলোচনার জন্য তিনি রোববার সন্ধ্যায় সৌদি আরব গেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার দূত স্টিভ উইটকফ ইতোমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছেন।
ইউক্রেনের দুর্লভ খনিজের ৫০ শতাংশ মালিকানা চান ট্রাম্প
এদিকে ইউক্রেনের রেয়ার আর্থ মিনারেলস বা দুর্লভ খনিজ সম্পদের ৫০ শতাংশ মালিকানা চায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে একটি প্রস্তাব দিয়েছে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এই খবর জানিয়েছে। এই প্রস্তাবের পাশাপাশি খবরে আরও বলা হয়েছে , রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য যদি কোনো চুক্তি হয়, তাহলে আমেরিকা খনির নিরাপত্তায় ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন করতে পারে। এই খনিজ সম্পদের বিনিময়ে সরাসরি অর্থ পরিশোধের পরিবর্তে, এই মালিকানা চুক্তিটি ইউক্রেনে যুদ্ধকালীন সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া দেশটির প্রতিদান হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করে এই প্রস্তাব পেশ করেন। বৈঠকের পর বেসেন্ট বলেন, এই খসড়াটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আকাঙ্খাকে প্রতিফলিত করে, তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি। জেলেনস্কি বেসেন্টের দেওয়া চুক্তিপত্রটি তখনই সই করেননি, তিনি বলেছিলেন এটি পর্যালোচনা করার জন্য তার সময় প্রয়োজন। তিনি জানান, মিউনিখে পৌঁছানোর আগেই তিনি এবং তার দল ওই নথির সমস্ত বিবরণ পর্যালোচনা করবেন। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, তার আইনজীবীরা কিয়েভে বেসেন্ট কর্তৃক উপস্থাপিত নথির বিষয়ে পরামর্শ দেবেন এবং কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন। তিনি এই প্রস্তাবটিকে নিরাপত্তা চুক্তি হিসেবে নয় বরং একটি স্মারকলিপি হিসেবে উল্লেখ করেন। এর আগে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইউক্রেনের ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের দুর্লভ খনিজ সম্পদ চান এবং ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে কিয়েভ এতে রাজি হয়েছে। সূত্র: এনবিসি
যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় আমন্ত্রণ পায়নি ইউক্রেন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ