ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন কমেছে ৩০ শতাংশ

  • আপডেট সময় : ০২:৪০:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ৩০ শতাংশ। এ সময় ব্যক্তিগত লেনদেনের পাশাপাশি সরকারি লেনদেনও কমেছে। লেনদেনের পরিমাণ কমলেও এ সময় গ্রাহকসংখ্যা সামান্য হারে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৬৪ হাজার ৯৪৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। যা আগের মাস এপ্রিলে ছিল ৯২ হাজার ৯৩৩ কোটি ০৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ৩৬ লাখ বা ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ। এর আগের মাস মার্চে লেনদেন হয়েছে ৭৭ হাজার ২১২ কোটি টাকা। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন বাড়লেও পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে তা কিছুটা কমে যায়। এরপরের মাস মার্চে তা আবার বাড়তে থাকে, যা এপ্রিল মাসে অব্যাহত থাকলেও মে মাসে এসে বেশ কিছুটা কমে যায়।
জানা গেছে, করোনা মহামারির মধ্যে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছিল। জরুরি প্রয়োজনে সাধারণ ব্যাংকিংয়ের চেয়ে মোবাইলে ব্যাংকিংয়ের সহজলভ্যতা মানুষকে আকৃষ্ট করছে। এতে দিন-দিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে। তবে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে লেনদেন হয়েছে। ঈদের পর সেই তুলনায় লেনদেন না হওয়ায় মে মাসে লেনদেন কিছুটা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, গত ৩ মে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এ সময় ঈদের কেনাকাটা এবং রেমিট্যান্সও অনেক বেশি এসেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এপ্রিল মাসে লেনদেন অনেক বেড়েছে। আর ঈদের পরের মাসে সবসময় লেনদেন কম হয়। এ সময় ছুটি এবং উৎসব উদযাপনের কারণে মানুষের লেনদেন কম হয়। আর এ কারণেই মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন বেশ কিছুটা কমে যায়। এছাড়া, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবং চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষের আয় কমে যাওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনও কিছুটা কমেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের মে মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার ৫০ জন। এ সময় সক্রিয় হিসাব ০.৪২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৫৭ দশমিক ৬২। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৪ জন। লেনদেন উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে এমএফএস এর গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা ও ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা জমা করতে পারবেন। আগে দৈনিক ৩০ হাজার টাকার বেশি জমা করা যেত না। আর কার্ড থেকে টাকা জমার সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। এছাড়া একজন গ্রাহক আরেক জনকে মাসে ২ লাখ টাকা পাঠাতে পারবেন। আগে এ সীমা ছিল ৭৫ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিশোধ ব্যবস্থায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোভিড-১৯-এর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এমএফএসের আওতা ও লেনদেনের ব্যাপ্তি প্রসারের পাশাপাশি এ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে এমএফএসের ব্যক্তি হিসাবের লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা দেওয়া, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স পাঠানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এই রক্তস্রোত যেন বৃথা না যায়, ঐক্য বজায় রাখতে হবে: খালেদা জিয়া

মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন কমেছে ৩০ শতাংশ

আপডেট সময় : ০২:৪০:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ৩০ শতাংশ। এ সময় ব্যক্তিগত লেনদেনের পাশাপাশি সরকারি লেনদেনও কমেছে। লেনদেনের পরিমাণ কমলেও এ সময় গ্রাহকসংখ্যা সামান্য হারে বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৬৪ হাজার ৯৪৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। যা আগের মাস এপ্রিলে ছিল ৯২ হাজার ৯৩৩ কোটি ০৩ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ৩৬ লাখ বা ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ। এর আগের মাস মার্চে লেনদেন হয়েছে ৭৭ হাজার ২১২ কোটি টাকা। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে লেনদেন বাড়লেও পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে তা কিছুটা কমে যায়। এরপরের মাস মার্চে তা আবার বাড়তে থাকে, যা এপ্রিল মাসে অব্যাহত থাকলেও মে মাসে এসে বেশ কিছুটা কমে যায়।
জানা গেছে, করোনা মহামারির মধ্যে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছিল। জরুরি প্রয়োজনে সাধারণ ব্যাংকিংয়ের চেয়ে মোবাইলে ব্যাংকিংয়ের সহজলভ্যতা মানুষকে আকৃষ্ট করছে। এতে দিন-দিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও বাড়ছে। তবে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে লেনদেন হয়েছে। ঈদের পর সেই তুলনায় লেনদেন না হওয়ায় মে মাসে লেনদেন কিছুটা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, গত ৩ মে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এ সময় ঈদের কেনাকাটা এবং রেমিট্যান্সও অনেক বেশি এসেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এপ্রিল মাসে লেনদেন অনেক বেড়েছে। আর ঈদের পরের মাসে সবসময় লেনদেন কম হয়। এ সময় ছুটি এবং উৎসব উদযাপনের কারণে মানুষের লেনদেন কম হয়। আর এ কারণেই মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন বেশ কিছুটা কমে যায়। এছাড়া, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবং চলমান মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষের আয় কমে যাওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনও কিছুটা কমেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের মে মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ কোটি ২৬ লাখ ১ হাজার ৫০ জন। এ সময় সক্রিয় হিসাব ০.৪২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৫৭ দশমিক ৬২। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৪ জন। লেনদেন উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে এমএফএস এর গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা ও ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা জমা করতে পারবেন। আগে দৈনিক ৩০ হাজার টাকার বেশি জমা করা যেত না। আর কার্ড থেকে টাকা জমার সীমা নির্দিষ্ট ছিল না। এছাড়া একজন গ্রাহক আরেক জনকে মাসে ২ লাখ টাকা পাঠাতে পারবেন। আগে এ সীমা ছিল ৭৫ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমানে দেশের সামগ্রিক পরিশোধ ব্যবস্থায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কোভিড-১৯-এর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এমএফএসের আওতা ও লেনদেনের ব্যাপ্তি প্রসারের পাশাপাশি এ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। একই সঙ্গে স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবং ডিজিটাল লেনদেন উৎসাহিত করতে এমএফএসের ব্যক্তি হিসাবের লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা দেওয়া, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স পাঠানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ।