ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সরকারের প্রতি জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবি

ভ্যাট অধ্যাদেশ প্রত্যাহার ও টিসিবির ট্রাক সেল চালু করুন

  • আপডেট সময় : ০৮:৩২:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। একই সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছে তারা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন বলেন, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটি অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসার খরচ বাড়বে; যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।
বিগত সরকারকে ‘অবৈধ’ ও তার অর্থনৈতিক নীতিকে ‘গণবিরোধী লুটেরা’ আখ্যায়িত করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, এমনিতেই মানুষের জীবনযাত্রা নাজুক অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় বিগত অবৈধ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপনারা জানেন যে কোনো দেশের জন্য আইএমএফের লোন হলো লোন প্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে কয়েকটি ধাপে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন অবৈধ সরকারের ঋণের এই শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তারা একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারেন না।
সম্প্রতি টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে এ প্রক্রিয়া ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করেন কমিটির সদস্য সচিব। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এ দেশের নাগরিকরা কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫ টাকা, ১০ টাকা কমে চাল, ডাল, তেল, চিনি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। আমরা কল্পনাও করতে পারি না জনগণের প্রতি কতটা দায়হীনতা অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, সরকার প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে। বিগত সরকার ১৫ বছরে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে- দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত সরকারকে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল করার যাবতীয় আইনি সুযোগ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এ সুযোগ ব্যবহার করে দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খেলাপি অর্থ আদায় ও অনাদায়ে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে। আমরা সরকারকে উদাত্তভাবে আহ্বান জানাচ্ছি বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে নতুন করে দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দেওয়াকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দাভোসে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

সরকারের প্রতি জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবি

ভ্যাট অধ্যাদেশ প্রত্যাহার ও টিসিবির ট্রাক সেল চালু করুন

আপডেট সময় : ০৮:৩২:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। একই সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছে তারা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন বলেন, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটি অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসার খরচ বাড়বে; যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।
বিগত সরকারকে ‘অবৈধ’ ও তার অর্থনৈতিক নীতিকে ‘গণবিরোধী লুটেরা’ আখ্যায়িত করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, এমনিতেই মানুষের জীবনযাত্রা নাজুক অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় বিগত অবৈধ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আপনারা জানেন যে কোনো দেশের জন্য আইএমএফের লোন হলো লোন প্রাপ্তির সর্বশেষ আশ্রয়। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে কয়েকটি ধাপে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন অবৈধ সরকারের ঋণের এই শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তারা একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারেন না।
সম্প্রতি টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে এ প্রক্রিয়া ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করেন কমিটির সদস্য সচিব। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এ দেশের নাগরিকরা কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫ টাকা, ১০ টাকা কমে চাল, ডাল, তেল, চিনি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। আমরা কল্পনাও করতে পারি না জনগণের প্রতি কতটা দায়হীনতা অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরে আখতার হোসেন বলেন, সরকার প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে। বিগত সরকার ১৫ বছরে বিদেশে ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করেছে- দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। সেগুলো দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে বিদ্যমান অর্থঋণ আদালত সরকারকে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল করার যাবতীয় আইনি সুযোগ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এ সুযোগ ব্যবহার করে দ্রুত একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে খেলাপি অর্থ আদায় ও অনাদায়ে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করতে পারে। আমরা সরকারকে উদাত্তভাবে আহ্বান জানাচ্ছি বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে নতুন করে দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দেওয়াকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।