সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের নিত্যপণ্যের বাজারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। গতকাল রবিবার (১১ আগস্ট) সকালে জেলা সদরের নিত্যপণ্যের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালান তারা। অপরদিকে জেলার যাদুকাটা বালু মহালে চাঁদাবাজি বন্ধ ও বেআইনী টোলটেক্স বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেকটি অংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে জেলা সদরের নিত্যপণ্যের দোকান, সবজি বাজার, মাছ-মাংসের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। এ সময় তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন। দোকানগুলোতে নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা রাখার নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি ন্যায্যমূল্যে বিক্রির নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারী দেওয়া হয়। সুনামগঞ্জ ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, ‘রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমরা বাজার মনিটরিং করেছি। নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়েছি। আমাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। আমরা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা না করে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছি। যাদের দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা নাই তাদেরকে তালিকা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছি। আমাদের এই বাজার মনিটরিং নিয়মিত চলবে।’
এর আগে গতকার শনিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল হাসনাত রাহুল ও আজিজুর রহমান কাউছার। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা পাঠানো ওই স্মারকলিপিটি অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকেও স্মারকলিপিটির অনুলিপি পাঠানো হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, একটি চক্র যাদুকাটা নদীর বালিমিশ্রিত পাথর ও বালু মহাল ইজারার নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। এতে দেশের মূল্যবান সম্পদ নষ্টসহ পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় শ্রমিক, ব্যবসায়ীরা ওই সিন্ডিকেটের কাছে জুলুমের শিকার হচ্ছেন। গত সরকারের আমলে এটি বালু মহাল হিসেবে ইজারা দেওয়া হলেও একটি চক্র বালি মিশ্রিত পাথর উত্তোলন করে বেআইনভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তাই অবিলম্বে পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, নদীতে ইজারা এলাকার বাইরে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত এলাকা থেকেও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। নদীর পাড়, জনপদ কেটে ড্রেজার মেশিনে বালু পাথর উত্তোলন করায় হুমকিতে রয়েছে এলাকাবাসী। এ ছাড়াও সরকার নির্ধারিত রয়ালিটি আদায়ের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করার কথা উল্লেখ করা হয়। ফাজিলপুর ও ঘাগড়া নদীঘাটে কোনো পণ্য ওঠানামা না হলেও এখান থেকে অবৈধভাবে টোল টেক্স আদায় করছে চাঁদাবাজ চক্র। বালুমহাল ও নৌকা ঘাটের ইজারাদারগণ চুক্তিপত্র ভঙ্গ করায় অবিলম্বে চুক্তি বাতিলের দাবিও জানানো হয় স্মারকলিপিতে। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাহিরপুর উপজেলার শাখার আজিজুর রহমান কাউছার, আবুল হাসনাত রাহুল, রাহাত হাসান রাব্বি, নবাব মিয়া, জাহিদ আল সুজন, আনিসুর রহমান সাকিব প্রমুখ।
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোক্তা অধিকারের অভিযানে শিক্ষার্থীরা, চাঁদাবাজি বন্ধে স্মারকলিপি
জনপ্রিয় সংবাদ