ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ ঘোষণা

  • আপডেট সময় : ০৮:১৭:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এই প্রজ্ঞাপনটি ২০২৪ সালের ২৭শে আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে জারি করা হয়েছে। এতে জানানো হয়, বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারীসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে এখন থেকে সুতা আমদানির অনুমতি থাকবে না।

তবে সমুদ্রপথ বা অন্য কোনো উপায়ে সুতা আমদানি চালু থাকবে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্রখাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন। পরে গত মার্চ মাসে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে সীমান্ত সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এনবিআর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত সুতা প্রথমে কলকাতায় গুদামজাত করা হয় এবং পরে সেখান থেকে বাংলাদেশে রফতানি হয়। এসব সুতা মূলত স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকতো এবং দামেও ছিল অপেক্ষাকৃত কম। ফলে দেশীয় সুতা কারখানাগুলো তাদের উৎপাদিত সুতা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছিল। চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের স্থানীয় সুতার দাম প্রায় কাছাকাছি হলেও, ভারত থেকে স্থলপথে আসা সুতার দাম ছিল অনেক কম। এমনকি তা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়েও কম দামে দেশে প্রবেশ করতো এসব সুতা।

ভারতসহ ৩ দেশ থেকে কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা
ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, নিউজপ্রিন্ট, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার বোর্ডসহ একাধিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং। কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর ক্ষমতাবলে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে।

তবে ভারতের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স-এই পণ্যগুলো ভারত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে এতে উল্লেখ রয়েছে।

একই সঙ্গে পূর্বে জারি করা এস.আর.ও নং ২৯৭-আইন/২০২৪/৮৯/কাস্টমস প্রজ্ঞাপনটির কয়েকটি ক্রমিক নম্বর সংশোধন করা হয়েছে। এতে পণ্য তালিকার হালনাগাদ করা হয় এবং ‘সকল রফতানিযোগ্য পণ্য’ আগের মতোই অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৮:১৭:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত থেকে বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এই প্রজ্ঞাপনটি ২০২৪ সালের ২৭শে আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে জারি করা হয়েছে। এতে জানানো হয়, বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারীসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে এখন থেকে সুতা আমদানির অনুমতি থাকবে না।

তবে সমুদ্রপথ বা অন্য কোনো উপায়ে সুতা আমদানি চালু থাকবে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্রখাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন। পরে গত মার্চ মাসে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে সীমান্ত সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।

এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এনবিআর এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত সুতা প্রথমে কলকাতায় গুদামজাত করা হয় এবং পরে সেখান থেকে বাংলাদেশে রফতানি হয়। এসব সুতা মূলত স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকতো এবং দামেও ছিল অপেক্ষাকৃত কম। ফলে দেশীয় সুতা কারখানাগুলো তাদের উৎপাদিত সুতা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছিল। চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান ও বাংলাদেশের স্থানীয় সুতার দাম প্রায় কাছাকাছি হলেও, ভারত থেকে স্থলপথে আসা সুতার দাম ছিল অনেক কম। এমনকি তা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়েও কম দামে দেশে প্রবেশ করতো এসব সুতা।

ভারতসহ ৩ দেশ থেকে কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা
ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, নিউজপ্রিন্ট, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার বোর্ডসহ একাধিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং। কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর ক্ষমতাবলে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে।

তবে ভারতের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স-এই পণ্যগুলো ভারত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে এতে উল্লেখ রয়েছে।

একই সঙ্গে পূর্বে জারি করা এস.আর.ও নং ২৯৭-আইন/২০২৪/৮৯/কাস্টমস প্রজ্ঞাপনটির কয়েকটি ক্রমিক নম্বর সংশোধন করা হয়েছে। এতে পণ্য তালিকার হালনাগাদ করা হয় এবং ‘সকল রফতানিযোগ্য পণ্য’ আগের মতোই অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।