ঢাকা ০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের যত কথা

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

মো. আবু রায়হান : বাংলাদেশের বহু তরুণ কাজের ভিসায় বিদেশ যাওয়ার জন্য আগ্রহী। অন্যদিকে সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাহলে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য বাঁধা কোথায়, কেন সহজে, কম খরচে বাংলাদেশের কর্মী বিদেশে যেতে পারে না। বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্য যেমন কোন দেশে কোন ধরনের দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে জানা প্রয়োজন।

আমাদের দেশের বেকার তরুণ সমাজ দেশে কাজ না পেয়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকে। কাজের বিষয় ভিসায় বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে দুটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি সরকারের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বৈদেশিক নিয়োগ কর্তাদের সংগে যোগাযোগ করে কাজের চাহিদা পত্র নিয়ে আসেন এবং নিয়োগকর্তার চাহিত যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মী বাছাই করে তাদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা করে বিদেশে প্রেরণ করেন। দ্বিতীয়টি কর্মী নিজে অথবা আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে বৈদেশিক নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে চাহিদা পত্র ও ভিসা সংগ্রহ করে বিদেশ গমন করেন। উভয় ক্ষেত্রে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কাগজপত্রগুলো যাচাই করে বহির্গমন ছাড়পত্র নিতে হয়।

সমস্যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ: বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিদেশ গমনেচ্ছুক নাগরিককে অন্ধকারে রেখে বেশির ভাগ জায়গায় ফায়দা লোটানো হয়। এ সেক্টরের অধিকাংশ বিষয় থাকে অপ্রকাশিত বা জানানোর কোন ভালো ব্যবস্থা রাখা হয় না।যেমন: কোন দেশে কোন ধরণের কর্মীর চাহিদা আছে, অভিবাসন ব্যয় কত হবে, বেতন ভাতা সুযোগ সুবিধা কি পাবে, বিমান ভাড়া কে দেবে- কোনো কিছুই বিদেশ গমনেচ্ছু নাগরিকরা জানতে পারেন না। এ জন্য বিদেশ গমন ইচ্ছুক নাগরিকরা নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোন প্রশিক্ষণ নেবেন সেটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। ফলে আমাদের দেশ থেকে কাক্সিক্ষত পরিমাণ দক্ষ কর্মী প্রেরণ করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সরকারের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীর সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই বলে বৈদেশিক নিয়োগ কর্তার চাহিদা অনুযায়ী কর্মী প্রেরণ করার জন্য রিক্রুটিং এজেন্স বিভিন্ন সাব-এজেন্টের মত কাজ করে এমন লোকজন কে কর্মী সরবরাহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে কয়েক ধাপে রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে কর্মীর তথ্য আসে। যার করণে রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কর্মীর সরাসরি যোগাযোগ হয় না বললেই চলে। বিভিন্ন হাত বদল হয়ে কর্মী রিক্রুটিং এজেন্সি কাছে আসে বলে কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক বৃদ্ধি পায়। একই সংগে প্রতারিত হলে তা সমাধান করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না।

বৈদেশিক নিয়োগকর্তা বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার সময় বাংলাদেশি বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সীকে চাহিদা পত্র ও পাওয়ার অফ এর্টনি প্রদান করে যার উপর ভিত্তি করে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করে বিদেশে প্রেরণ করে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশ থেকে কর্মী চাহিত প্রতিষ্ঠানে পৌঁছার পর বহু বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনাগ্রহ প্রকাশ করে এবং কখনো কখনো একদমই কাজ দেয় না। এর কারণে কর্মী ও বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়ে বিপাকে পড়ে যায় এবং তাদের মধ্যে একটি জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া পর যে সকল বৈদেশিক নিয়োগকর্তা এরূপ ঝামেলা তৈরি করে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার ব্যবস্থা নেই।
নিয়ম অনুযায়ী বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্র, পাওয়ার অফ এর্টনি, কোম্পানির চুক্তিপত্র ও ভিসা বিদেশস্থ বাংলাদেশ এ্যাম্বাসি থেকে সত্যায়ন করে আনতে হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৮টি দেশের শ্রমকল্যাণ উইং থেকে সত্যায়ন পাওয়া গেলেও অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় ক্ষেপণ হয় বলে কখনো কখনো ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, সত্যায়ন করার জন্য টাকা লাগে । উক্ত ২৮টি দেশ ছাড়া অন্য সব দেশ থেকে এ ধরনের সত্যায়ন পাওয়া যায় না। ফলে সত্যায়ন ছাড়া সরকার/বিএমইটি কর্মীর ছাড়পত্র প্রদান করে না বলে উচ্চ মূল্যে কর্মীর ক্রয়কৃত ভিসাগুলো নষ্ট হচ্ছে এবং বাংলাদেশে কর্মীদের প্রতি বৈদেশিক নিয়োগকর্তার অগ্রাহ তৈরী হচ্ছে বলে শ্রম বাজর ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। আবার অবৈধভাবে বিমানবন্দর ম্যানেজ করে বিদেশ গেলে অনেক কর্মী প্রতারিত হচ্ছেন। সুতারং সত্যায়নের অনলাইন পদ্ধতিতে সহজ করা যায়।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে কোন ধরনের দক্ষ কর্মীর চাহিদা তৈরি হচ্ছে বা হবে তা না জানার কারণে গতানুগতিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। বৈদেশিক শ্রমবাজার গবেষণা করে ভবিষ্যৎ বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার জরুরি। এই তথ্যভাণ্ডারের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের প্রশিক্ষণ ট্রেড নির্ধারন করবেন এবং সিলেবেস আধুনিকায়ন করতে পারবেন। দক্ষ কর্মীর তৈরীর পরিকল্পনা নেই।

বাংলাদেশের কর্মীরা উচ্চ হারের অভিবাসন ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে অধিকাংশ কর্মী সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে বিদেশগামী কর্মীদেরকে জামানত বিহীন সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অভিবাসন ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। এটি সরকারের খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এই ঋণ প্রদানের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র থাকতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সি অধিকাংশ কর্মীর কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ পাওয়ার পর বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদানের কাজটি করেন। এজন্য কর্মী জায়গা-জমি, গরু-ছাগল যতটুকু থাকে সব বিক্রি করে রিক্রুটিং এজেন্সি কে অভিবাসন খরচ প্রদান করে থাকে। এ কারণে কর্মী এই ঋণ নিতে পারেন না। আরও একটি সমস্যা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মী ছাড়পত্র পাওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে ফ্ল্যাটের তারিখ থাকে। এটিও একটি অন্যতম বড় বাধা। এ ঋণ প্রদানের পদ্ধিতে পরিবর্তন করা দরকার।

বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যয় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এই উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের ক্ষেত্রে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ভিসা ট্রেডিং অন্যতম। এটিকে আমরা ভিসা ট্রেডিং কালোবাজার বলে জানি। এই কালোবাজার থেকে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি অফেরতযোগ্য অগ্রিম পরিশোধের মাধ্যমে উচ্চ হারে ডিমান্ড/ভিসা কিনে থাকে। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কখনো কখনো এই অগ্রিমের পুরো অর্থ লোপাট হয়ে যায়। তা আদায়ের কোনো উপায় থাকে না। এ কারণে অভিবাসন ব্যয় কমানো জরুরী হলেও বাস্তব পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া এ সেক্টরটি সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আরও আছে দালালের মাধ্যমে কয়েক হাত ঘুরে রিক্রুটিং এজেন্সি কাছে টাকা আসে।

এ সেক্টরের আর একটি বড় সমস্যা কর্মী প্রতারিত হলে অভিযোগ প্রদানের সহজ ব্যবস্থা না থাকা এবং তা নিষ্পত্তি না হওয়া। কর্মী অধিকাংশ প্রতারিত হয়ে দালালকে টাকা প্রদান করে। এ দালাল গুলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত না হওয়ায় অভিযোগ নিষ্পত্তি করা যায় না। এরপর কর্মীর করণীয় কি, তা কর্মী বা তাদের আত্মীয় স্বজনকে জানানো হয় না। কর্মীর অপেক্ষা করতে করতে এ সময় নিরাশ হয়ে সব ছেড়ে দেয়। আবার বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর দীর্ঘদিন ঘুরে ঘুরে খুব সামন্য টাকা প্রেরত পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিছুই না পেয়ে নিরাশ হয়ে যান। অনেক ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে সেটি অভিযোগকারী জানতে পারেন না। এসব ক্ষেত্রে অভিযোগকারীকে অনেক অসহায় মনে হয়। অভিযোগকারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে কার্যক্রম চলামান রয়েছে তা জানানোর সহজ উপায় থাকা প্রয়োজন।

উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ: ১. বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মী নিজে নিজের নিবন্ধন করতে না পারা এবং তথ্য হালনাগাদ করার সুবিধা না থাকা। ২. বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত চাকুরীর পোর্টাল না থাকা। ৩. রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কর্মীর সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকা। ৪. বৈদেশিক নিয়োগ কর্তার চাহিদা পত্র বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়নে সময় ক্ষেপন হওয়া। ৫. বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ভবিষৎ বাজার সম্পর্কে কর্মীর ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কোন ধারণা না থাকা। ৬. বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার জটিলতা। ৭. বৈদেশিক নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানে কর্মীর প্রকৃত চাহিদার সম্পর্কে না জানা। ৮. ভিসা ট্রেডিং কমানোর উদ্দেশ্যে জিটুজি এর আওতায় কর্মী প্রেরনের ব্যবস্থ না থাকা। ৯. বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি সারাসরি বৈদেশকি নিয়োগকর্তার সংগে যোগাযোগ না করা। ১০. রিক্রুটিং এজেন্সি ও কর্মীর মধ্যের লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে না হওয়া। ১১. অভিযোগ গ্রহণ সহজ না হওয়া ও নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা হওয়া। ১২. অভিবাসন ব্যয় নির্বাহের জন্য কর্মীকে ঋণ প্রদানের গ্যারান্টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে প্রদানের ব্যবস্থা না থাকা।
সমাধানের উপায়: বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি বিশেষ সিস্টেম তৈরি করতে হবে যেখানে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী, রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তা, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশী হাইকমিশন এর লগ ইন/প্রবেশাধিকার থাকবে। নিম্নলিখিত বৈশেষ্ট্য সংবলিত সিস্টেমের মাধ্যমে উল্লেখিত সমস্যার সমাধান করা যাবে।

১. বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী নিজে মোবাইল বা কম্পিউটার অথবা কোন দোকান থেকে নিবন্ধন করতে পারবে এবং তার প্রয়োজনীয় তথ্য হালনাগাদ করতে পারার ব্যবস্থা থাকতে। ২. বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মী আত্মীয়-স্বজনের এর মাধ্যমে ভিসা আনলে, সে নিজের পোর্টাল থেকে অনলাইনে বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং সিডিউল অনুযায়ী ইন্টারভিউ এর তারিখ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে অনুমোদন পেলে কর্মী নিজেই অনলাইনে পেমেন্ট (মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড এমনকি সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের মাধ্যমে পেমেন্ট) করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৩. কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র যেকোন সময় যেকোন জায়গা থেকে কর্মী নিজ ও রিকুটিং এজেন্সি ডাউনলোড করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৪. রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্র, চুক্তিপত্র, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে সত্যায়ন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৫. বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদা পত্র, চুক্তিপত্র, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়ন সম্পন্ন হওয়ার সংগে সংগে বিএমইটি’র বৈদেশেক কর্মসংস্থান পোর্টালে কর্মীর সুযোগ-সুবিধা, বেতন, ছুটি, যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ অভিবাসন খরচ প্রকাশিত হতে হবে; যা বিদেশ গমনেচ্ছুক নিবন্ধিত নাগরিক দেখতে পাবে। এর মাধ্যমে কর্মীকে অন্ধকারে রেখে দালাল থেকে শুরু করে রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তার সব কিছু জেনে কর্মী বিদেশ যাওয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এছাড়া কর্মীর দক্ষতার সংগে প্রকাশিত জব মিলে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদেরকে নোটিফিকেশন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৬. কর্মী চাইলে বিএমইটি’র বৈদেশেক কর্মসংস্থান জব পোর্টাল থেকে তার পছন্দমত জব অনুযায়ী রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানাতে পারবে, একইভাবে রিক্রুটিং এজেন্সি বিএমইটির ডাটাবেজ থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মীকে নির্বাচন করতে পারবে এবং তাদেরকে এসএমএস ও ইমেইল দিয়ে নোটিফাই করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৭. নির্বাচিত কর্মী জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি অনলাইনে মাধ্যমে বহির্গমন ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে এবং বিএমইটির কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করে অনলাইনে অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৮. বিএমইটির কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কর্মীর পেমেন্ট রিক্রুটিং এজেন্সি অনলাইনে মাধ্যমে যে কোন চ্যানেলে এবং ব্যাংকের কাউন্টারের মাধ্যমে জমা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৯. বৈদেশিক একই নিয়োগকর্তা বিভিন্ন সময় আমাদের দেশ থেকে কর্মী নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যেসব বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীদেরকে নিয়ে বিপদে ফেলে অথবা কাজ দেওয়ার নাম করে নিয়ে গিয়ে কাজ দেয়া না প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বৈদেশিক নিয়োগকর্তাকে শ্রেনিকরণ করার মত ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সকল বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীকে নিয়ে বিপদে ফেলে না তাদের কে স্টার মার্ক দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে। এতে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী প্রেরণের সময় ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে আবার কর্মী যে প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে অতীতে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে থাকলে তাদের বর্তমান অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। ১০. কর্মী বিদেশ যাওয়ার পর ওই কোম্পানিতে যোগদান করেছেন কিনা তা ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাধ্যতামূলভাবে তথ্য দেয়ার জন্য একটি শর্ত দিতে হবে যে, এ তথ্য প্রদান না করলে ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের কোন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না। তাহলে শতভাগ কর্মী তথ্য প্রদান করবেনে এবং যারা কাজ পাবে না তাদেরকে সহজে চিহ্নিত করা যাবে। ১১. এই সিস্টেমে নতুন রিক্রুটিং এজেন্সির আবেদন থেকে শুরু করে নবায়ন, অফিস পরিবর্তন, ডিরেক্টর/মালিকানা পরিবর্তনসহ সকল ধরনের তথ্য হালনাগাদ অনলাইনে মাধ্যমে করার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং বিএমইটি সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকরণ করে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করতে পারবে। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় এ সিস্টেমে ব্যবহার করে যাচাই-বাছাই সহ প্রক্রিয়াকরণ করে সিদ্ধান্ত প্রদান করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১২. রিক্রুটিং এজেন্সির নবায়নের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন (এসএমএস/ইমেইল) যাবে যে নবায়নের মেয়াদ আগামী ৬ মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ১৩. বাংলাদেশের বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য একটি বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টাল থাকবে এবং বাংলাদেশ থেকে বিদেশ গমন ইচ্ছুক দক্ষ/অদক্ষ কর্মীর সংখ্যা বৈদেশিক নিয়োগকর্তার কাছে খুব সহজে জানার সুযোগ থাকতে হবে। ১৪. বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীগণ পিডিও/নিয়মিত কোর্সে প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে অনলাইনে ইনরোলমেন্ট করা, উপস্থিতি নিশ্চিতকরনের জন্য বায়োমেট্রিক নেয়ার ব্যবস্থা এবং অনলাইনে সকল সার্টিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৫. কোন রিক্রুটিং এজেন্সির কতগুলো অভিযোগ আছে এবং অভিযোগ প্রাপ্তির হার কি রকম এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে কেমন সময় লাগে এই বিষয়গুলো খুব সহজে জানার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৬. বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে প্রকাশিত অভিবাসী ব্যয় নির্বাহ করার জন্য কর্মী ও রিক্রুটিং এজেন্সির মাঝে সরকারের মধ্যস্থতাকারী একটি ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে যেখানে কর্মী টাকা জমা রাখবে এবং সেবা প্রদান সাপেক্ষে রিক্রুটিং এজেন্সি কে সরকার পরিশোধ করবে। ১৭. কর্মীর অভিবাসন ঋণ অভিবাসন কার্যক্রম শুরু করার সময় ব্যাংক থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কে একটি ঋণের গ্যারান্টি পত্র প্রদান করবে, কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র সম্পূর্ণ হলে ব্যাংক উক্ত গ্যারান্টি পত্রের বিপরীতে রিক্রুটিং এজেন্সি কে ঋণের অর্থ ছাড় করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৮. এমন একটি সিস্টেম তৈরি করতে হবে সিঙ্গেল সাইন ইন এর ব্যবস্থা থাকবে যেখানে মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, টিটিসি, ডিইএমও, বাংলাদেশ দূতাবাস, রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তা, বিদেশ গমনেচ্ছুক এবং প্রবাসী কর্মী লগইন করতে পারেবেন।
প্রভাব: বিদেশে গমনেচ্ছু নাগরিক খুব সহজে নিজের নিবন্ধন নিজে করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে নিজেই তথ্য হালনাগদ করতে পারবেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে চাকুরির তথ্য পাবেন বলে সব সময় এ সিস্টেম ব্যবহারে অগ্রহী হবেন। কাজের ভিসায় বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীকে অন্ধাকারে রেখে কেউ ফায়দা নিতে পারবেন না। বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি নিবন্ধিত কর্মীদেরকে খুব সহজে নির্বাচন করতে পারবেন। বৈদেশিক নিয়োগ কর্তা বাংলাদেশের দক্ষ কর্মী সম্পর্কিত তথ্য পাবেন। এখন পর্যন্ত বহু বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মী জানেন না যে সরকারের লাইসেন্স প্রাপ্ত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। কর্মীরা সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে থেকে অভিবাসন ব্যয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি কে অর্থ প্রদান করতে পারবে। সরকার জানতে পারবে প্রকৃত অভিবাসন ব্যয়ের পরিমান। এতে দেশ নানা ভাবে উপকৃত হবে।

লেখক: সিস্টেম অ্যানালিস্ট, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনে দেরি হলে জঙ্গি ও উগ্রপন্থিরাও সুযোগ নেবে: ফখরুল

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের যত কথা

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মো. আবু রায়হান : বাংলাদেশের বহু তরুণ কাজের ভিসায় বিদেশ যাওয়ার জন্য আগ্রহী। অন্যদিকে সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাহলে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য বাঁধা কোথায়, কেন সহজে, কম খরচে বাংলাদেশের কর্মী বিদেশে যেতে পারে না। বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্য যেমন কোন দেশে কোন ধরনের দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে জানা প্রয়োজন।

আমাদের দেশের বেকার তরুণ সমাজ দেশে কাজ না পেয়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকে। কাজের বিষয় ভিসায় বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে দুটি উপায় রয়েছে। প্রথমটি সরকারের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বৈদেশিক নিয়োগ কর্তাদের সংগে যোগাযোগ করে কাজের চাহিদা পত্র নিয়ে আসেন এবং নিয়োগকর্তার চাহিত যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মী বাছাই করে তাদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা করে বিদেশে প্রেরণ করেন। দ্বিতীয়টি কর্মী নিজে অথবা আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে বৈদেশিক নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে চাহিদা পত্র ও ভিসা সংগ্রহ করে বিদেশ গমন করেন। উভয় ক্ষেত্রে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো কাগজপত্রগুলো যাচাই করে বহির্গমন ছাড়পত্র নিতে হয়।

সমস্যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ: বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিদেশ গমনেচ্ছুক নাগরিককে অন্ধকারে রেখে বেশির ভাগ জায়গায় ফায়দা লোটানো হয়। এ সেক্টরের অধিকাংশ বিষয় থাকে অপ্রকাশিত বা জানানোর কোন ভালো ব্যবস্থা রাখা হয় না।যেমন: কোন দেশে কোন ধরণের কর্মীর চাহিদা আছে, অভিবাসন ব্যয় কত হবে, বেতন ভাতা সুযোগ সুবিধা কি পাবে, বিমান ভাড়া কে দেবে- কোনো কিছুই বিদেশ গমনেচ্ছু নাগরিকরা জানতে পারেন না। এ জন্য বিদেশ গমন ইচ্ছুক নাগরিকরা নিজেদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোন প্রশিক্ষণ নেবেন সেটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। ফলে আমাদের দেশ থেকে কাক্সিক্ষত পরিমাণ দক্ষ কর্মী প্রেরণ করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ সরকারের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীর সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই বলে বৈদেশিক নিয়োগ কর্তার চাহিদা অনুযায়ী কর্মী প্রেরণ করার জন্য রিক্রুটিং এজেন্স বিভিন্ন সাব-এজেন্টের মত কাজ করে এমন লোকজন কে কর্মী সরবরাহ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে কয়েক ধাপে রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে কর্মীর তথ্য আসে। যার করণে রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কর্মীর সরাসরি যোগাযোগ হয় না বললেই চলে। বিভিন্ন হাত বদল হয়ে কর্মী রিক্রুটিং এজেন্সি কাছে আসে বলে কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক বৃদ্ধি পায়। একই সংগে প্রতারিত হলে তা সমাধান করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না।

বৈদেশিক নিয়োগকর্তা বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার সময় বাংলাদেশি বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সীকে চাহিদা পত্র ও পাওয়ার অফ এর্টনি প্রদান করে যার উপর ভিত্তি করে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী সংগ্রহ করে বিদেশে প্রেরণ করে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বাংলাদেশ থেকে কর্মী চাহিত প্রতিষ্ঠানে পৌঁছার পর বহু বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনাগ্রহ প্রকাশ করে এবং কখনো কখনো একদমই কাজ দেয় না। এর কারণে কর্মী ও বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়ে বিপাকে পড়ে যায় এবং তাদের মধ্যে একটি জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া পর যে সকল বৈদেশিক নিয়োগকর্তা এরূপ ঝামেলা তৈরি করে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার ব্যবস্থা নেই।
নিয়ম অনুযায়ী বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্র, পাওয়ার অফ এর্টনি, কোম্পানির চুক্তিপত্র ও ভিসা বিদেশস্থ বাংলাদেশ এ্যাম্বাসি থেকে সত্যায়ন করে আনতে হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৮টি দেশের শ্রমকল্যাণ উইং থেকে সত্যায়ন পাওয়া গেলেও অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় ক্ষেপণ হয় বলে কখনো কখনো ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, সত্যায়ন করার জন্য টাকা লাগে । উক্ত ২৮টি দেশ ছাড়া অন্য সব দেশ থেকে এ ধরনের সত্যায়ন পাওয়া যায় না। ফলে সত্যায়ন ছাড়া সরকার/বিএমইটি কর্মীর ছাড়পত্র প্রদান করে না বলে উচ্চ মূল্যে কর্মীর ক্রয়কৃত ভিসাগুলো নষ্ট হচ্ছে এবং বাংলাদেশে কর্মীদের প্রতি বৈদেশিক নিয়োগকর্তার অগ্রাহ তৈরী হচ্ছে বলে শ্রম বাজর ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। আবার অবৈধভাবে বিমানবন্দর ম্যানেজ করে বিদেশ গেলে অনেক কর্মী প্রতারিত হচ্ছেন। সুতারং সত্যায়নের অনলাইন পদ্ধতিতে সহজ করা যায়।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে কোন ধরনের দক্ষ কর্মীর চাহিদা তৈরি হচ্ছে বা হবে তা না জানার কারণে গতানুগতিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। বৈদেশিক শ্রমবাজার গবেষণা করে ভবিষ্যৎ বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার জরুরি। এই তথ্যভাণ্ডারের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের প্রশিক্ষণ ট্রেড নির্ধারন করবেন এবং সিলেবেস আধুনিকায়ন করতে পারবেন। দক্ষ কর্মীর তৈরীর পরিকল্পনা নেই।

বাংলাদেশের কর্মীরা উচ্চ হারের অভিবাসন ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে অধিকাংশ কর্মী সহায়সম্বলহীন হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে বিদেশগামী কর্মীদেরকে জামানত বিহীন সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা অভিবাসন ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। এটি সরকারের খুবই ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এই ঋণ প্রদানের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র থাকতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সি অধিকাংশ কর্মীর কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ পাওয়ার পর বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদানের কাজটি করেন। এজন্য কর্মী জায়গা-জমি, গরু-ছাগল যতটুকু থাকে সব বিক্রি করে রিক্রুটিং এজেন্সি কে অভিবাসন খরচ প্রদান করে থাকে। এ কারণে কর্মী এই ঋণ নিতে পারেন না। আরও একটি সমস্যা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মী ছাড়পত্র পাওয়ার ২-৩ দিনের মধ্যে ফ্ল্যাটের তারিখ থাকে। এটিও একটি অন্যতম বড় বাধা। এ ঋণ প্রদানের পদ্ধিতে পরিবর্তন করা দরকার।

বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যয় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এই উচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের ক্ষেত্রে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ভিসা ট্রেডিং অন্যতম। এটিকে আমরা ভিসা ট্রেডিং কালোবাজার বলে জানি। এই কালোবাজার থেকে বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি অফেরতযোগ্য অগ্রিম পরিশোধের মাধ্যমে উচ্চ হারে ডিমান্ড/ভিসা কিনে থাকে। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কখনো কখনো এই অগ্রিমের পুরো অর্থ লোপাট হয়ে যায়। তা আদায়ের কোনো উপায় থাকে না। এ কারণে অভিবাসন ব্যয় কমানো জরুরী হলেও বাস্তব পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া এ সেক্টরটি সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আরও আছে দালালের মাধ্যমে কয়েক হাত ঘুরে রিক্রুটিং এজেন্সি কাছে টাকা আসে।

এ সেক্টরের আর একটি বড় সমস্যা কর্মী প্রতারিত হলে অভিযোগ প্রদানের সহজ ব্যবস্থা না থাকা এবং তা নিষ্পত্তি না হওয়া। কর্মী অধিকাংশ প্রতারিত হয়ে দালালকে টাকা প্রদান করে। এ দালাল গুলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত না হওয়ায় অভিযোগ নিষ্পত্তি করা যায় না। এরপর কর্মীর করণীয় কি, তা কর্মী বা তাদের আত্মীয় স্বজনকে জানানো হয় না। কর্মীর অপেক্ষা করতে করতে এ সময় নিরাশ হয়ে সব ছেড়ে দেয়। আবার বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর দীর্ঘদিন ঘুরে ঘুরে খুব সামন্য টাকা প্রেরত পেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কিছুই না পেয়ে নিরাশ হয়ে যান। অনেক ক্ষেত্রে কোন অভিযোগ সরকার আমলে নিচ্ছে সেটি অভিযোগকারী জানতে পারেন না। এসব ক্ষেত্রে অভিযোগকারীকে অনেক অসহায় মনে হয়। অভিযোগকারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে কার্যক্রম চলামান রয়েছে তা জানানোর সহজ উপায় থাকা প্রয়োজন।

উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ: ১. বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মী নিজে নিজের নিবন্ধন করতে না পারা এবং তথ্য হালনাগাদ করার সুবিধা না থাকা। ২. বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত চাকুরীর পোর্টাল না থাকা। ৩. রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কর্মীর সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকা। ৪. বৈদেশিক নিয়োগ কর্তার চাহিদা পত্র বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়নে সময় ক্ষেপন হওয়া। ৫. বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ভবিষৎ বাজার সম্পর্কে কর্মীর ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কোন ধারণা না থাকা। ৬. বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার জটিলতা। ৭. বৈদেশিক নিয়োগকর্তার প্রতিষ্ঠানে কর্মীর প্রকৃত চাহিদার সম্পর্কে না জানা। ৮. ভিসা ট্রেডিং কমানোর উদ্দেশ্যে জিটুজি এর আওতায় কর্মী প্রেরনের ব্যবস্থ না থাকা। ৯. বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি সারাসরি বৈদেশকি নিয়োগকর্তার সংগে যোগাযোগ না করা। ১০. রিক্রুটিং এজেন্সি ও কর্মীর মধ্যের লেনদেন ব্যাংকিং চ্যানেলে না হওয়া। ১১. অভিযোগ গ্রহণ সহজ না হওয়া ও নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা হওয়া। ১২. অভিবাসন ব্যয় নির্বাহের জন্য কর্মীকে ঋণ প্রদানের গ্যারান্টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে প্রদানের ব্যবস্থা না থাকা।
সমাধানের উপায়: বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি বিশেষ সিস্টেম তৈরি করতে হবে যেখানে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী, রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তা, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশী হাইকমিশন এর লগ ইন/প্রবেশাধিকার থাকবে। নিম্নলিখিত বৈশেষ্ট্য সংবলিত সিস্টেমের মাধ্যমে উল্লেখিত সমস্যার সমাধান করা যাবে।

১. বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী নিজে মোবাইল বা কম্পিউটার অথবা কোন দোকান থেকে নিবন্ধন করতে পারবে এবং তার প্রয়োজনীয় তথ্য হালনাগাদ করতে পারার ব্যবস্থা থাকতে। ২. বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মী আত্মীয়-স্বজনের এর মাধ্যমে ভিসা আনলে, সে নিজের পোর্টাল থেকে অনলাইনে বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং সিডিউল অনুযায়ী ইন্টারভিউ এর তারিখ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে অনুমোদন পেলে কর্মী নিজেই অনলাইনে পেমেন্ট (মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড এমনকি সোনালী ব্যাংকের কাউন্টারের মাধ্যমে পেমেন্ট) করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৩. কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র যেকোন সময় যেকোন জায়গা থেকে কর্মী নিজ ও রিকুটিং এজেন্সি ডাউনলোড করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৪. রিক্রুটিং এজেন্সির ক্ষেত্রে বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদাপত্র, চুক্তিপত্র, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে সত্যায়ন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৫. বৈদেশিক নিয়োগকর্তার চাহিদা পত্র, চুক্তিপত্র, পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়ন সম্পন্ন হওয়ার সংগে সংগে বিএমইটি’র বৈদেশেক কর্মসংস্থান পোর্টালে কর্মীর সুযোগ-সুবিধা, বেতন, ছুটি, যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ অভিবাসন খরচ প্রকাশিত হতে হবে; যা বিদেশ গমনেচ্ছুক নিবন্ধিত নাগরিক দেখতে পাবে। এর মাধ্যমে কর্মীকে অন্ধকারে রেখে দালাল থেকে শুরু করে রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তার সব কিছু জেনে কর্মী বিদেশ যাওয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এছাড়া কর্মীর দক্ষতার সংগে প্রকাশিত জব মিলে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদেরকে নোটিফিকেশন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৬. কর্মী চাইলে বিএমইটি’র বৈদেশেক কর্মসংস্থান জব পোর্টাল থেকে তার পছন্দমত জব অনুযায়ী রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানাতে পারবে, একইভাবে রিক্রুটিং এজেন্সি বিএমইটির ডাটাবেজ থেকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মীকে নির্বাচন করতে পারবে এবং তাদেরকে এসএমএস ও ইমেইল দিয়ে নোটিফাই করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৭. নির্বাচিত কর্মী জন্য রিক্রুটিং এজেন্সি অনলাইনে মাধ্যমে বহির্গমন ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে এবং বিএমইটির কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করে অনলাইনে অনুমোদন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৮. বিএমইটির কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কর্মীর পেমেন্ট রিক্রুটিং এজেন্সি অনলাইনে মাধ্যমে যে কোন চ্যানেলে এবং ব্যাংকের কাউন্টারের মাধ্যমে জমা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৯. বৈদেশিক একই নিয়োগকর্তা বিভিন্ন সময় আমাদের দেশ থেকে কর্মী নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যেসব বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীদেরকে নিয়ে বিপদে ফেলে অথবা কাজ দেওয়ার নাম করে নিয়ে গিয়ে কাজ দেয়া না প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বৈদেশিক নিয়োগকর্তাকে শ্রেনিকরণ করার মত ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সকল বৈদেশিক নিয়োগকর্তা কর্মীকে নিয়ে বিপদে ফেলে না তাদের কে স্টার মার্ক দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে। এতে রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী প্রেরণের সময় ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে আবার কর্মী যে প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে অতীতে বাংলাদেশ থেকে লোক নিয়ে থাকলে তাদের বর্তমান অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। ১০. কর্মী বিদেশ যাওয়ার পর ওই কোম্পানিতে যোগদান করেছেন কিনা তা ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাধ্যতামূলভাবে তথ্য দেয়ার জন্য একটি শর্ত দিতে হবে যে, এ তথ্য প্রদান না করলে ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের কোন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে না। তাহলে শতভাগ কর্মী তথ্য প্রদান করবেনে এবং যারা কাজ পাবে না তাদেরকে সহজে চিহ্নিত করা যাবে। ১১. এই সিস্টেমে নতুন রিক্রুটিং এজেন্সির আবেদন থেকে শুরু করে নবায়ন, অফিস পরিবর্তন, ডিরেক্টর/মালিকানা পরিবর্তনসহ সকল ধরনের তথ্য হালনাগাদ অনলাইনে মাধ্যমে করার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং বিএমইটি সিস্টেমের মাধ্যমে তাদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াকরণ করে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করতে পারবে। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয় এ সিস্টেমে ব্যবহার করে যাচাই-বাছাই সহ প্রক্রিয়াকরণ করে সিদ্ধান্ত প্রদান করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১২. রিক্রুটিং এজেন্সির নবায়নের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন (এসএমএস/ইমেইল) যাবে যে নবায়নের মেয়াদ আগামী ৬ মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ১৩. বাংলাদেশের বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য একটি বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টাল থাকবে এবং বাংলাদেশ থেকে বিদেশ গমন ইচ্ছুক দক্ষ/অদক্ষ কর্মীর সংখ্যা বৈদেশিক নিয়োগকর্তার কাছে খুব সহজে জানার সুযোগ থাকতে হবে। ১৪. বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীগণ পিডিও/নিয়মিত কোর্সে প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে অনলাইনে ইনরোলমেন্ট করা, উপস্থিতি নিশ্চিতকরনের জন্য বায়োমেট্রিক নেয়ার ব্যবস্থা এবং অনলাইনে সকল সার্টিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৫. কোন রিক্রুটিং এজেন্সির কতগুলো অভিযোগ আছে এবং অভিযোগ প্রাপ্তির হার কি রকম এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে কেমন সময় লাগে এই বিষয়গুলো খুব সহজে জানার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৬. বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে প্রকাশিত অভিবাসী ব্যয় নির্বাহ করার জন্য কর্মী ও রিক্রুটিং এজেন্সির মাঝে সরকারের মধ্যস্থতাকারী একটি ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে যেখানে কর্মী টাকা জমা রাখবে এবং সেবা প্রদান সাপেক্ষে রিক্রুটিং এজেন্সি কে সরকার পরিশোধ করবে। ১৭. কর্মীর অভিবাসন ঋণ অভিবাসন কার্যক্রম শুরু করার সময় ব্যাংক থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি কে একটি ঋণের গ্যারান্টি পত্র প্রদান করবে, কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র সম্পূর্ণ হলে ব্যাংক উক্ত গ্যারান্টি পত্রের বিপরীতে রিক্রুটিং এজেন্সি কে ঋণের অর্থ ছাড় করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৮. এমন একটি সিস্টেম তৈরি করতে হবে সিঙ্গেল সাইন ইন এর ব্যবস্থা থাকবে যেখানে মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, টিটিসি, ডিইএমও, বাংলাদেশ দূতাবাস, রিক্রুটিং এজেন্সি, বৈদেশিক নিয়োগকর্তা, বিদেশ গমনেচ্ছুক এবং প্রবাসী কর্মী লগইন করতে পারেবেন।
প্রভাব: বিদেশে গমনেচ্ছু নাগরিক খুব সহজে নিজের নিবন্ধন নিজে করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে নিজেই তথ্য হালনাগদ করতে পারবেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে চাকুরির তথ্য পাবেন বলে সব সময় এ সিস্টেম ব্যবহারে অগ্রহী হবেন। কাজের ভিসায় বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীকে অন্ধাকারে রেখে কেউ ফায়দা নিতে পারবেন না। বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি নিবন্ধিত কর্মীদেরকে খুব সহজে নির্বাচন করতে পারবেন। বৈদেশিক নিয়োগ কর্তা বাংলাদেশের দক্ষ কর্মী সম্পর্কিত তথ্য পাবেন। এখন পর্যন্ত বহু বিদেশ গমন ইচ্ছুক কর্মী জানেন না যে সরকারের লাইসেন্স প্রাপ্ত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। কর্মীরা সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থান পোর্টালে থেকে অভিবাসন ব্যয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি কে অর্থ প্রদান করতে পারবে। সরকার জানতে পারবে প্রকৃত অভিবাসন ব্যয়ের পরিমান। এতে দেশ নানা ভাবে উপকৃত হবে।

লেখক: সিস্টেম অ্যানালিস্ট, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো