ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল রবিবার (১ জানুয়ারি) সারাদেশে ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ উদযাপিত হবে।
গতকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যবই বিতরণের জন্য তিনি খুবই খুশি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ী ও এসএসসি স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ মান বজায় রেখে এসব পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করেছে এবং নতুন বছরের প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক পাবে। প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসব কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এবং মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসব গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
জানুয়ারির প্রথম দিনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে শিক্ষাবিদরা বলেন, এই উদ্যোগ স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার কমিয়েছে এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। তারা বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উদ্যোগকে শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি ‘মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কারণ এটি শিক্ষার্থীদের তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জানান, সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। খবর বাসস।
এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না: এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে তিনি বলেন, যদিও এত কাজ হচ্ছে, তার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও বলবে আমরা নাকি কিছুই করি নাই। ‘কিছুই করি নাই’ (যারা বলে) শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না। দৃষ্টি থাকতেও তারা অন্ধ। তারা দেখবেই না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের মাথার ভেতরে ‘নাই’ শব্দটা ঢুকে গেছে। আমরা নাই-তে থাকতে চাই না। আমরা পারি। বাংলাদেশের মানুষ পারে। আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই। নাই নাই শুনবো না। আমরা করতে পারবো, এটা করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আন্তরিকতার সঙ্গে আজ ছেলে-মেয়েদের যত আমরা তৈরি করতে পারবো, আমাদের বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি: বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীদের জন্য বই ছাপানোর কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ-এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচটা, অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষা। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।
করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে।
শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল: শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া কেউ শিক্ষার জন্য তেমন কোনও উদ্যোগ নেয়নি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা যে এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটা দুঃখজনক জাতির জন্য। ৯৬ সালে আমরা আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করি। তখন আমরা উদ্যোগ নেই, আমরা আবার নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করি। স্বাক্ষরতার হার বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। বয়স্কদের শিক্ষার ব্যবস্থাও সেখানে সংযুক্ত ছিল। তিনি বলেন, জনগণকে যদি দারিদ্র্যমুক্ত করতে হয় তাহলে শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কাজেই সমগ্র জাতিকে আমরা শিক্ষিত করে গড়ে তুলবো সেই পদক্ষেপ নেই। আমরা নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করি। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কারণ আমাদের পাঁচ বছরের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর তারা নতুন আরেকটা করবে…কী কী করে জানি না। তারা দেশকে আবার অন্ধকারের দিকেই ঠেলে দেয়। এটা হলো বাস্তবতা। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আরেকটা অন্ধকার যুগ আমাদের জীবনে চলে আসে। ২০০৮-এর নির্বাচনে নৌকা মার্কায় মানুষ ভোট দেয়। আমরা আবার সরকার গঠন করি। তখন থেকে আমাদের আবার লক্ষ্য হয়, কীভাবে আমরা এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবো এবং ২০১০ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু করি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ বছরের নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ ১ জানুয়ারি রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে পাঠ্যবই উৎসব উদযাপন করবে। এবার ১ জানুয়ারি সারা দেশে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীদের ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে দুই কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ০৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। ২০১০ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সর্বমোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট: ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ, মানে প্রতিটি নাগরিক হবে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন। প্রতিটি ছেলে-মেয়ে কম্পিউটার টেকনোলজি এখন থেকে শিখছে এবং আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট, বিশ্ব থেকে কোনও কিছুতেই পিছিয়ে থাকবে না। নিশ্চয়ই আমরা পারবো।’ সব গ্রামসহ সারা দেশের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং সরকার এ জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং দেশ বিশ্ব পরিম-লে পিছিয়ে থাকবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং লার্নিং যেমন ই-শিক্ষা, ই-স্বাস্থ্য, ই-ব্যবসা, ই-ইকোনমি, ই-গভর্নেন্স হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান-ভিত্তিক।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লেখাপড়া, শিক্ষা, এডুকেশন, ই-বিজনেস, ই-ইকোনমি, ই-গভার্নেন্স সবকিছুই প্রযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, এরপর হবে স্যাটেলাইট-২। সেটাও আমরা করবো। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এসব সময় দ্বীপাঞ্চল থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গাতেই আমরা ব্রডব্যান্ড অনলাইনে কাজ করার প্রযুক্তি নিয়ে যাবো। একবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।’ সরকার ২০২০ সালে জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, কাজেই বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারে না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে তার একটা স্থান করে নিয়েছে। আর ২০৪১ এর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, যেটা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’ এসময় নতুন পাঠ্যবই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরকার জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অনেক দিক থেকে কঠোরতা আরোপ করলেও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনও আপস করেনি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ— এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা— অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।’ করোনাকালে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সবসময় ব্যবহার করতে পারে।’ শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী সারাদেশে আগামীকাল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল রবিবার (১ জানুয়ারি) সারাদেশে ‘জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ উদযাপিত হবে।
গতকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যবই বিতরণের জন্য তিনি খুবই খুশি।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ী ও এসএসসি স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ মান বজায় রেখে এসব পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করেছে এবং নতুন বছরের প্রথম দিনে সব শিক্ষার্থী বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক পাবে। প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসব কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এবং মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক উৎসব গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
জানুয়ারির প্রথম দিনে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের মাধ্যমে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে শিক্ষাবিদরা বলেন, এই উদ্যোগ স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার কমিয়েছে এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। তারা বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উদ্যোগকে শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি ‘মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কারণ এটি শিক্ষার্থীদের তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জানান, সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। খবর বাসস।
এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না: এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে তিনি বলেন, যদিও এত কাজ হচ্ছে, তার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও বলবে আমরা নাকি কিছুই করি নাই। ‘কিছুই করি নাই’ (যারা বলে) শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না। দৃষ্টি থাকতেও তারা অন্ধ। তারা দেখবেই না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের মাথার ভেতরে ‘নাই’ শব্দটা ঢুকে গেছে। আমরা নাই-তে থাকতে চাই না। আমরা পারি। বাংলাদেশের মানুষ পারে। আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই। নাই নাই শুনবো না। আমরা করতে পারবো, এটা করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যের কথা পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আন্তরিকতার সঙ্গে আজ ছেলে-মেয়েদের যত আমরা তৈরি করতে পারবো, আমাদের বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি: বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীদের জন্য বই ছাপানোর কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ-এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচটা, অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষা। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।
করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে।
শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল: শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া কেউ শিক্ষার জন্য তেমন কোনও উদ্যোগ নেয়নি মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা যে এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এটা দুঃখজনক জাতির জন্য। ৯৬ সালে আমরা আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করি। তখন আমরা উদ্যোগ নেই, আমরা আবার নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করি। স্বাক্ষরতার হার বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। বয়স্কদের শিক্ষার ব্যবস্থাও সেখানে সংযুক্ত ছিল। তিনি বলেন, জনগণকে যদি দারিদ্র্যমুক্ত করতে হয় তাহলে শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কাজেই সমগ্র জাতিকে আমরা শিক্ষিত করে গড়ে তুলবো সেই পদক্ষেপ নেই। আমরা নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করি। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কারণ আমাদের পাঁচ বছরের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর তারা নতুন আরেকটা করবে…কী কী করে জানি না। তারা দেশকে আবার অন্ধকারের দিকেই ঠেলে দেয়। এটা হলো বাস্তবতা। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আরেকটা অন্ধকার যুগ আমাদের জীবনে চলে আসে। ২০০৮-এর নির্বাচনে নৌকা মার্কায় মানুষ ভোট দেয়। আমরা আবার সরকার গঠন করি। তখন থেকে আমাদের আবার লক্ষ্য হয়, কীভাবে আমরা এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবো এবং ২০১০ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু করি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ বছরের নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ ১ জানুয়ারি রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে পাঠ্যবই উৎসব উদযাপন করবে। এবার ১ জানুয়ারি সারা দেশে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীদের ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে দুই কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ০৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। ২০১০ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সর্বমোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট: ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ, মানে প্রতিটি নাগরিক হবে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন। প্রতিটি ছেলে-মেয়ে কম্পিউটার টেকনোলজি এখন থেকে শিখছে এবং আরও এগিয়ে যাবে। আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট, বিশ্ব থেকে কোনও কিছুতেই পিছিয়ে থাকবে না। নিশ্চয়ই আমরা পারবো।’ সব গ্রামসহ সারা দেশের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং সরকার এ জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং দেশ বিশ্ব পরিম-লে পিছিয়ে থাকবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং লার্নিং যেমন ই-শিক্ষা, ই-স্বাস্থ্য, ই-ব্যবসা, ই-ইকোনমি, ই-গভর্নেন্স হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান-ভিত্তিক।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লেখাপড়া, শিক্ষা, এডুকেশন, ই-বিজনেস, ই-ইকোনমি, ই-গভার্নেন্স সবকিছুই প্রযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, এরপর হবে স্যাটেলাইট-২। সেটাও আমরা করবো। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এসব সময় দ্বীপাঞ্চল থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গাতেই আমরা ব্রডব্যান্ড অনলাইনে কাজ করার প্রযুক্তি নিয়ে যাবো। একবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।’ সরকার ২০২০ সালে জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, কাজেই বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারে না বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে তার একটা স্থান করে নিয়েছে। আর ২০৪১ এর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, যেটা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’ এসময় নতুন পাঠ্যবই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরকার জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অনেক দিক থেকে কঠোরতা আরোপ করলেও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনও আপস করেনি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ— এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা— অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।’ করোনাকালে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সবসময় ব্যবহার করতে পারে।’ শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী সারাদেশে আগামীকাল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।