ঢাকা ০৯:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিদেশে যেতে প্রতারিত হয়ে নিজেই হয়ে ওঠে প্রতারক

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় সাত বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য দালালকে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয় মো. শাফায়াত হোসেন (২৭)। সেই ক্ষোভ থেকে পরবর্তী সময়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল সে। গত পাঁচ বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই যুবক। এত বড় কর্মযজ্ঞ চালাতে তার কোনও অফিস ছিল না। শুধু মুখের কথাতেই মানুষকে পটিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতো সে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব কর্মকর্তাদের এসব তথ্য জানিয়েছে শাফায়াত।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাজধানীর সবুজবাগ থেকে শাফায়াতকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৩টি পাসপোর্ট, দুইটি মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড। র‌্যাব বলছে, শাফায়াতের জনশক্তি রফতানির কোনও লাইসেন্স ছিল না। বিভিন্ন এজেন্সির নাম ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। প্রতারণার টাকায় রাজধানীতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতো। কেউ যেন তার প্রতারণা আঁচ না পারে সে জন্য দুই থেকে তিন মাস পরপর বাসা পরিবর্তন করতো। সবশেষ সবুজবাগে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো সে। অভিযান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রফতানির নামে বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করলে সে যোগাযোগ বন্ধ রাখতো। প্রথমে ভুক্তভোগীদের ইউরোপে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাসপোর্ট এবং প্রাথমিক খরচ বাবদ এক লাখ টাকা নিতো। পরে আরও বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা আদায় করতো।
র‌্যাব ৩-এর স্টাফ অফিসার (অপস ও ইন্ট শাখা) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, ‘রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় একটি প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সর্বশান্ত করে আসছিল। এমন কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে জানা যায়, প্রতারক শাফায়াত কোনও জনশক্তি রফতানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নয়। যারা তার ফাঁদে পা দিতো, তাদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলে দফায় দফায় টাকা নিতো। পাসপোর্ট নিয়ে ভুয়া ভিসা (যা কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজেই বানাতো) দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো। তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পাঁচ বছর ধরে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ চালিয়ে আসছিল সে। নিজে বিদেশ যেতে না পারায় প্রতারিত হয়ে টাকা খোয়ানোর কারণে ক্ষোভ ও হতাশা থেকে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল শাফায়েত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিদেশে যেতে প্রতারিত হয়ে নিজেই হয়ে ওঠে প্রতারক

আপডেট সময় : ১২:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় সাত বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য দালালকে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয় মো. শাফায়াত হোসেন (২৭)। সেই ক্ষোভ থেকে পরবর্তী সময়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল সে। গত পাঁচ বছর ধরে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই যুবক। এত বড় কর্মযজ্ঞ চালাতে তার কোনও অফিস ছিল না। শুধু মুখের কথাতেই মানুষকে পটিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতো সে। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব কর্মকর্তাদের এসব তথ্য জানিয়েছে শাফায়াত।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাজধানীর সবুজবাগ থেকে শাফায়াতকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৩টি পাসপোর্ট, দুইটি মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড। র‌্যাব বলছে, শাফায়াতের জনশক্তি রফতানির কোনও লাইসেন্স ছিল না। বিভিন্ন এজেন্সির নাম ব্যবহার করে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। প্রতারণার টাকায় রাজধানীতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতো। কেউ যেন তার প্রতারণা আঁচ না পারে সে জন্য দুই থেকে তিন মাস পরপর বাসা পরিবর্তন করতো। সবশেষ সবুজবাগে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো সে। অভিযান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রফতানির নামে বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করলে সে যোগাযোগ বন্ধ রাখতো। প্রথমে ভুক্তভোগীদের ইউরোপে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাসপোর্ট এবং প্রাথমিক খরচ বাবদ এক লাখ টাকা নিতো। পরে আরও বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা আদায় করতো।
র‌্যাব ৩-এর স্টাফ অফিসার (অপস ও ইন্ট শাখা) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, ‘রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় একটি প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনেচ্ছুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সর্বশান্ত করে আসছিল। এমন কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে জানা যায়, প্রতারক শাফায়াত কোনও জনশক্তি রফতানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নয়। যারা তার ফাঁদে পা দিতো, তাদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলে দফায় দফায় টাকা নিতো। পাসপোর্ট নিয়ে ভুয়া ভিসা (যা কম্পিউটারের মাধ্যমে নিজেই বানাতো) দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো। তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পাঁচ বছর ধরে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ চালিয়ে আসছিল সে। নিজে বিদেশ যেতে না পারায় প্রতারিত হয়ে টাকা খোয়ানোর কারণে ক্ষোভ ও হতাশা থেকে বিদেশ গমনেচ্ছুদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল শাফায়েত।