ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

বাণিজ্য উপদেষ্টা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যা

  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, এটা তারা করতে পারেন না। মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার দাম চূড়ান্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যদি আগে ঘোষণা দেন, সেটা বেআইনি। সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা করে বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর একদিন পরে একই দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে বাড়তি দামে সয়াবিন ও পামতেল বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুমে ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। শেখ বশির উদ্দিন বলেন, আমরা ভোজ্য তেলের দাম আজকে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার এক্ষেত্রে মাসে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব অব্যাহতি দিয়েছিল। রমজানকেন্দ্রিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

আমরা এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজার ও আমাদের ট্যারিফ কমিশনের ফর্মুলার ভিত্তিতে বাজারে তেলের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করেছি। আমাদের ফর্মুলা অনুযায়ী তেলের দাম আসে প্রায় ১৯৭ টাকা। কিন্তু আমরা আলোচনার ভিত্তিতে ১৮৯ টাকা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, দেশে মোটামুটি প্রায় ৩০ লাখ টন তেলের চাহিদা আছে। তার মধ্যে প্রায় ৭ লাখ টন আমাদের স্থানীয় সয়াবিন তেল থেকে আসে। আমরা নতুন করে প্রায় ৬ লাখ টন রাইস ব্রাইন অয়েল বাজারে আনতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা আশা করি আজ নতুন মূল্য নির্ধারণ হলো, সরকার এখান থেকে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করতে পারবে। আমরা আশা করি যে, সামনে আবার তেলের দাম আবার আমরা কমাতে পারব। রাজস্ব আদায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য-দুটোর সমন্বয়েই এই দামটা বেড়েছে। আমি মনে করি এই মূল্যবৃদ্ধি সাময়িক এবং আমরা অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। নতুন দাম অনুসারে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা আগে ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা। উল্লেখ্য, এর আগে ঈদের ছুটির পর ৬ এপ্রিল ও ৮ এপ্রিল তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুই দফা বৈঠক করেছিলেন। তবে ওই সময় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এরপর ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৩ এপ্রিল।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণার পর থেকেই নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানায় সংগঠনটি। তবে এ ঘোষণার পরপরই বৈঠকের জন্য ডাকা হয় ব্যবসায়ীদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তলব করে চিঠি পাঠিয়ে টিকে, মেঘনা, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। চিঠি পাঠানো হয় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভোজ্যতেল কারখানা মালিক সমিতির সভাপতির কাছেও। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় বৈঠক হলো। যে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দাম মেনেই দাম বাড়ানো হলো। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটারপ্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাণিজ্য উপদেষ্টা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যা

আপডেট সময় : ০৮:১৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, এটা তারা করতে পারেন না। মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার দাম চূড়ান্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যদি আগে ঘোষণা দেন, সেটা বেআইনি। সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা করে বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর একদিন পরে একই দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে বাড়তি দামে সয়াবিন ও পামতেল বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুমে ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। শেখ বশির উদ্দিন বলেন, আমরা ভোজ্য তেলের দাম আজকে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার এক্ষেত্রে মাসে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব অব্যাহতি দিয়েছিল। রমজানকেন্দ্রিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

আমরা এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজার ও আমাদের ট্যারিফ কমিশনের ফর্মুলার ভিত্তিতে বাজারে তেলের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করেছি। আমাদের ফর্মুলা অনুযায়ী তেলের দাম আসে প্রায় ১৯৭ টাকা। কিন্তু আমরা আলোচনার ভিত্তিতে ১৮৯ টাকা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, দেশে মোটামুটি প্রায় ৩০ লাখ টন তেলের চাহিদা আছে। তার মধ্যে প্রায় ৭ লাখ টন আমাদের স্থানীয় সয়াবিন তেল থেকে আসে। আমরা নতুন করে প্রায় ৬ লাখ টন রাইস ব্রাইন অয়েল বাজারে আনতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা আশা করি আজ নতুন মূল্য নির্ধারণ হলো, সরকার এখান থেকে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করতে পারবে। আমরা আশা করি যে, সামনে আবার তেলের দাম আবার আমরা কমাতে পারব। রাজস্ব আদায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য-দুটোর সমন্বয়েই এই দামটা বেড়েছে। আমি মনে করি এই মূল্যবৃদ্ধি সাময়িক এবং আমরা অদূর ভবিষ্যতে এই দাম কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। নতুন দাম অনুসারে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা আগে ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা। উল্লেখ্য, এর আগে ঈদের ছুটির পর ৬ এপ্রিল ও ৮ এপ্রিল তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুই দফা বৈঠক করেছিলেন। তবে ওই সময় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এরপর ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৩ এপ্রিল।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণার পর থেকেই নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানায় সংগঠনটি। তবে এ ঘোষণার পরপরই বৈঠকের জন্য ডাকা হয় ব্যবসায়ীদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তলব করে চিঠি পাঠিয়ে টিকে, মেঘনা, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। চিঠি পাঠানো হয় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভোজ্যতেল কারখানা মালিক সমিতির সভাপতির কাছেও। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় বৈঠক হলো। যে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দাম মেনেই দাম বাড়ানো হলো। এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটারপ্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা।