ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

বন্যায় কৃষিখাতে ৬৩ কোটি টাকার ক্ষতি

  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকার বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে জেলার ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, সদর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় বন্যায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত ২৫ দিন ধরে বন্যায় জেলায় ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ দশমিক ১ হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের সুরুজ আলী জানান, ৩ বিঘা জমিতে পটল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যার পানিতে তলিয়ে সব জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক আলতাব শেখ বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে মিষ্টি লাউ, সিম, কুমড়া এবং দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও লাউ, কুমড়ার চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ চৌহালী উপজেলার বাহ্মণগ্রামের কৃষক মোতালেব শেখ বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে বেগুন, ১ বিঘায় লাউ চাষ করেছিলাম। এবারের বন্যার পানিতে সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এই বন্যায় আমার সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে এখন দুর্ভাবনার মধ্যে রয়েছি।’ সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, ‘যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। এ মুহূর্তে যমুনায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, চলতি বন্যায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা ও সবজিসহ অন্যান্য ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে। সহায়তা পেলে কৃষকরা কিছুটা উপকৃত হবে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বন্যায় কৃষিখাতে ৬৩ কোটি টাকার ক্ষতি

আপডেট সময় : ১২:২৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকার বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যায়। এতে জেলার ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, সদর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় বন্যায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত ২৫ দিন ধরে বন্যায় জেলায় ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ দশমিক ১ হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের সুরুজ আলী জানান, ৩ বিঘা জমিতে পটল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যার পানিতে তলিয়ে সব জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক আলতাব শেখ বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে মিষ্টি লাউ, সিম, কুমড়া এবং দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও লাউ, কুমড়ার চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ চৌহালী উপজেলার বাহ্মণগ্রামের কৃষক মোতালেব শেখ বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে বেগুন, ১ বিঘায় লাউ চাষ করেছিলাম। এবারের বন্যার পানিতে সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এই বন্যায় আমার সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে এখন দুর্ভাবনার মধ্যে রয়েছি।’ সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, ‘যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। এ মুহূর্তে যমুনায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, চলতি বন্যায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা ও সবজিসহ অন্যান্য ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে। সহায়তা পেলে কৃষকরা কিছুটা উপকৃত হবে।