লাইফস্টাইল ডেস্ক : ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন বাজারে গিয়ে শাকসবজি, মাছ, মাংস, কেনার সময় পান না অনেকেই। প্রতিদিনের বাজারের সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র ভরসা ফ্রিজ। সপ্তাহে একদিন বাজার করে ফ্রিজে রেখে দিলেই সপ্তাহ খানেক চলে। নেকে আবার মাছ-মাংস মাসখানেকও ফ্রিজে রেখ খান।
ফ্রিজে মাছ কত দিন সংরক্ষণ করা যাবে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণে কী ক্ষতি হতে পারে, সে বিষয়ে জানিয়েছেন ভারতীয় পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘শাকসবজি হোক বা মাছ-মাংস, খাবার যত টাটকা খাবেন ততই ভালো। তবে সময়ের অভাবে অনেকেই রোজ বাজার করতে পারেন না। ফ্রিজে মাছ রাখলে তাতে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁঁকি কম। তবে মাছ যত দিন ফ্রিজে রাখবেন, তার পুষ্টিগুণ কিন্তু ততই কমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘মাছের ভেতরে থাকা ভিটামিন ফ্রিজের তাপমাত্রায় খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। সাধারণত মাছের রং বদলে গেলে, স্বাদ না এলে, মাছ নরম হয়ে গেলে বুঝতে হবে, সে মাছ আর খাওয়ার যোগ্য নেই। বাজারে গত বছরের মাছও এ বছর বিক্রি হচ্ছে। ফ্রিজে রাখার জন্য মাছ পচে যায় না ঠিকই, কিন্তু সেই মাছ খেলে আপনি স্বাদ আর পুষ্টি কোনোটিই পাবেন না।’
কেবল মাছ সংরক্ষণ করলেই হবে না। মাছ কীভাবে সংরক্ষণ করছেন সেটাও কিন্তু জরুরি। চিকিৎসক শুভম সাহা বলেন, ‘মাছ না ধুয়ে ফ্রিজে রাখবেন না ভুলেও। কাঁচা মাছে অনেক সময়ই সালমোনেলার মতো জীবাণু সংক্রমণ হয়। সেই মাছ দীর্ঘদিন ফ্রিজে রেখে যখন রান্নার আগে সাধারণ তাপমাত্রায় আনবেন তখন কিন্তু জীবাণুগুলি দ্রুত গতিতে বংশবিস্তার করে। সেই মাছ রান্না করে খেলে কিন্তু ফুড পয়জনিং পর্যন্ত হতে পারে। তাই মাছ সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।’
কোন মাছ সংরক্ষণ পদ্ধতিÑ
মিঠা পানির মাছ: মাঝারি বা বড় আকারের মাছ গোটা অবস্থায় সংরক্ষণ করতে পারেন। গোটা অবস্থায় রাখলে লেবুর রস মাখিয়ে রাখতে পারেন। এ সব মাছ টুকরো করেও রাখা যায়। এ ভাবে রাখলে লবণ-হলুদ মাখিয়ে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে পারেন। সবশেষে লেবুর রস মাখিয়ে নিন। লবণ-হলুদ মাখিয়ে রাখলে মাছে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁঁকি কমে।
সামুদ্রিক মাছ: বায়ুনিরোধী পাত্রে পানি ভরে মাছের টুকরোগুলি ডুবিয়ে রাখুন। এ ভাবে বাক্সটি ফ্রিজে রেখে দিলে মাছের টুকরাগুলির গায়ে বরফের স্তর থাকবে। মাছের টুকরোগুলিতে লেবুর রস বা ভিনিগারও মাখিয়ে নিতে পারেন।
ইলিশ মাছ: ইলিশ মাছের সংরক্ষণ পদ্ধতি একটু আলাদা। ইলিশ মাছ গোটা অবস্থায় সংরক্ষণ করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। অনেকেই মাছ না ধুয়ে কাটা মাছ ফ্রিজে রেখে দেন। সেটি কিন্তু মোটেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। ইলিশ মাছ ভালো করে ধুয়ে নিলে তার স্বাদ নাকি কমে যায়। তবে স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে মাছ ভালো করে ধুয়ে তারপর রান্না করাই শ্রেয়। এ ছাড়া মাছে লবণ, হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিয়েও সংরক্ষণ করতে পারেন।
পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে মাছ যত টাটকা খাবেন, ততই ভালো। টাটকা মাছের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তবে একান্তই যদি ফ্রিজে মাছ মজুদ রেখে খেতেই হয়, তাহলে ৭ থেকে ১০ দিনের বেশি পুরোনো মাছ না খাওয়াই ভালো।