ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ফুল দিয়ে বরণ করে একসঙ্গে ট্রাফিকে পুলিশ-শিক্ষার্থী

  • আপডেট সময় : ০২:২৭:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলন-সহিংসতার জেরে প্রায় ছয়দিন পর সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ফিরেছেন পুলিশ সদস্যরা। গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। কোনো কোনো জায়গায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা এখনও আছেন। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় তাদের সংখ্যা কম।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাতে অনেক পুলিশ সদস্য হতাহত হন, আতঙ্কে বেশিরভাগ থানা পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাট থেকেও উধাও হয়ে যান ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় রাজধানীসহ সারাদেশের সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। তখন সেই দায়িত্ব সামলাতে মাঠে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের। ট্রাফিক-তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) স্নেহাশীষ বলেন, তেজগাঁও এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ ফোর্স ট্রাফিকের কাজে নেমেছে। আমাদের উপস্থিতির পর অনেক শিক্ষার্থী বাসায় ফিরে যাচ্ছে।
ট্রাফিক-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সালমা সৈয়দ পলি জানান, সকাল থেকে প্রায় সব মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সদস্যরা কাজে যোগদান করেছেন। ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। ট্রাফিক-মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আবু ইউসুফ বলেন, আজ প্রায় সব জায়গায় ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান জানান, গতকাল (রোববার) থেকেই অনেক স্থানে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দেন। আজ (গতকাল সোমবার) সকাল থেকে ঢাকার মোড়ে মোড়ে ইউনিফর্মে পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন ট্রাফিক সদস্যরা। তিনি বলেন, আমরা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আজ দিনভর বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে নিয়োজিত ছাত্রদের সঙ্গে আমরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর কিছু এলাকায় এখনও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দায়িত্বে ফেরেননি। সেখানে শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালন করছেন। গত কয়েকদিন ঢাকার প্রায় সব রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দিন-রাত ঘাম ঝরিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ কাজে তারা যাত্রীদের প্রশংসাও পেয়েছেন। অনেক সড়কে শিক্ষার্থীদের খাবার পানি, খাবার এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে অনেকে।
পুলিশের অনুপস্থিতিতে যানজটের এই শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিএনসিসি, আনসার সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদেরও কাজে লাগানো হয়।
রোববার অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এই সার্টিফিকেট চাকরি ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজের টাকায় সড়কে কাজ করছে, সড়ক পরিষ্কার করছে, রং কিনে দেওয়াল সুন্দর করছে। এটা যদি সরকারি প্রজেক্ট হতো তাহলে হাজার কোটি টাকা লাগতো। একটা দেশে এর চাইতে ভালো উদাহরণ হতে পারে না।
এদিকে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা। সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে তারা কাজে যোগ দেওয়ারও ঘোষণা দেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্মস্থলে নিরাপত্তা, ৫ আগস্ট এবং পূর্ববর্তী সহিংসতায় আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ, পুলিশে সংস্কারসহ ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছিলেন পুলিশ সদস্যরা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গুমের তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি কমিশনের

ফুল দিয়ে বরণ করে একসঙ্গে ট্রাফিকে পুলিশ-শিক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০২:২৭:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলন-সহিংসতার জেরে প্রায় ছয়দিন পর সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ফিরেছেন পুলিশ সদস্যরা। গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। কোনো কোনো জায়গায় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা এখনও আছেন। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় তাদের সংখ্যা কম।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ট্রাফিক পুলিশ বক্সে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তাতে অনেক পুলিশ সদস্য হতাহত হন, আতঙ্কে বেশিরভাগ থানা পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাট থেকেও উধাও হয়ে যান ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় রাজধানীসহ সারাদেশের সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। তখন সেই দায়িত্ব সামলাতে মাঠে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের। ট্রাফিক-তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) স্নেহাশীষ বলেন, তেজগাঁও এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ ফোর্স ট্রাফিকের কাজে নেমেছে। আমাদের উপস্থিতির পর অনেক শিক্ষার্থী বাসায় ফিরে যাচ্ছে।
ট্রাফিক-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সালমা সৈয়দ পলি জানান, সকাল থেকে প্রায় সব মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সদস্যরা কাজে যোগদান করেছেন। ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছে। ট্রাফিক-মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আবু ইউসুফ বলেন, আজ প্রায় সব জায়গায় ট্রাফিক সদস্যরা কাজ করছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান জানান, গতকাল (রোববার) থেকেই অনেক স্থানে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দেন। আজ (গতকাল সোমবার) সকাল থেকে ঢাকার মোড়ে মোড়ে ইউনিফর্মে পুরোদমে কাজ শুরু করেছেন ট্রাফিক সদস্যরা। তিনি বলেন, আমরা ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আজ দিনভর বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে নিয়োজিত ছাত্রদের সঙ্গে আমরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি। শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর কিছু এলাকায় এখনও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দায়িত্বে ফেরেননি। সেখানে শিক্ষার্থীরা দায়িত্ব পালন করছেন। গত কয়েকদিন ঢাকার প্রায় সব রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দিন-রাত ঘাম ঝরিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ কাজে তারা যাত্রীদের প্রশংসাও পেয়েছেন। অনেক সড়কে শিক্ষার্থীদের খাবার পানি, খাবার এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে অনেকে।
পুলিশের অনুপস্থিতিতে যানজটের এই শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিএনসিসি, আনসার সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যদেরও কাজে লাগানো হয়।
রোববার অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যেসব শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এই সার্টিফিকেট চাকরি ক্ষেত্রে যেন মূল্যায়ন হয়। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজের টাকায় সড়কে কাজ করছে, সড়ক পরিষ্কার করছে, রং কিনে দেওয়াল সুন্দর করছে। এটা যদি সরকারি প্রজেক্ট হতো তাহলে হাজার কোটি টাকা লাগতো। একটা দেশে এর চাইতে ভালো উদাহরণ হতে পারে না।
এদিকে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা। সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে তারা কাজে যোগ দেওয়ারও ঘোষণা দেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্মস্থলে নিরাপত্তা, ৫ আগস্ট এবং পূর্ববর্তী সহিংসতায় আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ, পুলিশে সংস্কারসহ ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছিলেন পুলিশ সদস্যরা।