ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে আরও একটি মাইলফলক

  • আপডেট সময় : ১১:০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে

ড. সুলতান মাহমুদ রানা : আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সাথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে আরও একটি মাইলফলক হিসেবে যুক্ত হলো। প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন রুটের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি কানেকটিভিটির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা জানি চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রীর সুদুঢ়প্রসারী পরিকল্পনা তাঁর এই চীন সফরের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। গত এক দশকে চীনকে বাংলাদেশের বেশ কিছু মেগা-প্রকল্পে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি বাস্তবায়নকারীর ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের চলমান যাত্রায় এবারের চীন সফর দুই দেশের সম্পর্কের গুণগত উত্তরণ ঘটেছে। ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় জোট পরিবর্তনের মধ্যে ৮ থেকে ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন আশার আলো তৈরি হয়েছে। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। গত এক দশকে বাংলাদেশে চীনের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে যেখানে ছিল ৩৩০ কোটি ডলার, তা এখন ২ হাজার কোটি ডলারের উপরে। ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, চীনা এফডিআই ১০.৯ গুণ বেড়েছে। শক্তি, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষার মতো বিভিন্ন খাতকে কেন্দ্র করে এসব ফান্ড বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি তার বৈদেশিক সম্পর্কের পারদর্শী ভারসাম্য, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মর্যাদা এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার সাথে সাথে সর্বাধিক অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য এই সম্পর্কগুলোকে ব্যবহার করা। সামগ্রিকভাবে বলা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন পথ অন্বেষণের একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গঠনে বাস্তববাদী কূটনীতি এবং কৌশলগত সম্পৃক্ততার গুরুত্বকেও তুলে ধরে। এই মূল সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষায় শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে উন্নত করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফর নিয়ে পঞ্চমবারের মতো চীন সফর। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের পর কূটনৈতিক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা যায়। গত ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে চীন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং দেশটির নির্বাচনে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বৈদেশিক বিষয়গুলো মোকাবেলায় শেখ হাসিনার বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছে। একইসঙ্গে তারা এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির সুযোগে আস্থা রেখেছে। বিশ্বশক্তিগুলো ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ সুসম্পর্কও বজায় রেখেছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে চীন সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতি তাদের সমর্থন দিয়ে এসেছে। চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের দ্রুত বিকাশের মূল ভিত্তি হলো, বাংলাদেশের বাণিজ্যিক স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের যেকোনো কৌশলগত ইস্যুতে তাদের ক্রমাগত প্রশংসা।
২০২৩ সালের আগস্টে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের সময় চীন, তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের পরিষ্কার অবস্থানের কথা জানিয়েছিল। এছাড়াও, বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে বাংলাদেশের প্রতি দেশটির সমর্থন থাকবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেও চীন সাহায্য করবে বলে মত প্রকাশ করেছিল। একইসঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবেও চীন বাংলাদেশের পাশে আছে বলেও জানান দিয়েছিলেন শি জিনপিং। এসব ক্ষেত্রে একটি বিষয় পরিষ্কার যে চীন বাংলাদেশের দুর্দিনেরও বন্ধু। বাংলাদেশের প্রতি চীনের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময়ই ইতিবাচক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক বিষয় ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা দ্রুততার সঙ্গে বিকশিত হয়েছে। বিগত দেড় দশক চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিয়োগ ছাড়াও দুই দেশ কৃষি, মৎস্য, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ত্রাণ, সামুদ্রিক বিষয়, মানবিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয় ও সহযোগিতা করা। আর এ কারণে প্রধানমন্ত্রী চীনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নে এখন বিশ্বের অসংখ্য দেশকে পেছনে ফেলে সামনের কাতারে চলে এসেছে। বিশ্বের অনেক নেতাই বাংলাদেশের উন্নয়নকে ঈর্ষার চোখে দেখেন। বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। কূটনৈতিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দেশের সম্ভাবনাকে কীভাবে আরও একধাপ কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়- সেটি প্রধানমন্ত্রী খুবই দক্ষতার সাথে পরিচালনা করছেন। বিগত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রেখে দেশের যে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে চললে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন আর বেশি দূরে নেই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে যথেষ্ট। এখন প্রয়োজন দেশবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা এবং সমন্বয়। যদি সকল ক্ষেত্রে সমন্বয় হয় তবে দেশকে আর পেছনে তাকাতে হবে না।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনে দেরি হলে জঙ্গি ও উগ্রপন্থিরাও সুযোগ নেবে: ফখরুল

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে আরও একটি মাইলফলক

আপডেট সময় : ১১:০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

ড. সুলতান মাহমুদ রানা : আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সাথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে আরও একটি মাইলফলক হিসেবে যুক্ত হলো। প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে বাংলাদেশের ভূকৌশলগত অবস্থানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন রুটের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি কানেকটিভিটির বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা জানি চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রীর সুদুঢ়প্রসারী পরিকল্পনা তাঁর এই চীন সফরের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। গত এক দশকে চীনকে বাংলাদেশের বেশ কিছু মেগা-প্রকল্পে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি বাস্তবায়নকারীর ভূমিকাতেও অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের চলমান যাত্রায় এবারের চীন সফর দুই দেশের সম্পর্কের গুণগত উত্তরণ ঘটেছে। ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় জোট পরিবর্তনের মধ্যে ৮ থেকে ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন আশার আলো তৈরি হয়েছে। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। গত এক দশকে বাংলাদেশে চীনের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে যেখানে ছিল ৩৩০ কোটি ডলার, তা এখন ২ হাজার কোটি ডলারের উপরে। ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে, চীনা এফডিআই ১০.৯ গুণ বেড়েছে। শক্তি, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষার মতো বিভিন্ন খাতকে কেন্দ্র করে এসব ফান্ড বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি তার বৈদেশিক সম্পর্কের পারদর্শী ভারসাম্য, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মর্যাদা এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার সাথে সাথে সর্বাধিক অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য এই সম্পর্কগুলোকে ব্যবহার করা। সামগ্রিকভাবে বলা যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন পথ অন্বেষণের একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গঠনে বাস্তববাদী কূটনীতি এবং কৌশলগত সম্পৃক্ততার গুরুত্বকেও তুলে ধরে। এই মূল সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষায় শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে উন্নত করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফর নিয়ে পঞ্চমবারের মতো চীন সফর। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের পর কূটনৈতিক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা যায়। গত ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে চীন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং দেশটির নির্বাচনে বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বৈদেশিক বিষয়গুলো মোকাবেলায় শেখ হাসিনার বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছে। একইসঙ্গে তারা এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির সুযোগে আস্থা রেখেছে। বিশ্বশক্তিগুলো ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ সুসম্পর্কও বজায় রেখেছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে চীন সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতি তাদের সমর্থন দিয়ে এসেছে। চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের দ্রুত বিকাশের মূল ভিত্তি হলো, বাংলাদেশের বাণিজ্যিক স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের যেকোনো কৌশলগত ইস্যুতে তাদের ক্রমাগত প্রশংসা।
২০২৩ সালের আগস্টে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের সময় চীন, তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের পরিষ্কার অবস্থানের কথা জানিয়েছিল। এছাড়াও, বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে বাংলাদেশের প্রতি দেশটির সমর্থন থাকবে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেও চীন সাহায্য করবে বলে মত প্রকাশ করেছিল। একইসঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবেও চীন বাংলাদেশের পাশে আছে বলেও জানান দিয়েছিলেন শি জিনপিং। এসব ক্ষেত্রে একটি বিষয় পরিষ্কার যে চীন বাংলাদেশের দুর্দিনেরও বন্ধু। বাংলাদেশের প্রতি চীনের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময়ই ইতিবাচক।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক বিষয় ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা দ্রুততার সঙ্গে বিকশিত হয়েছে। বিগত দেড় দশক চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিয়োগ ছাড়াও দুই দেশ কৃষি, মৎস্য, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ত্রাণ, সামুদ্রিক বিষয়, মানবিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বয় ও সহযোগিতা করা। আর এ কারণে প্রধানমন্ত্রী চীনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আহ্বান জানিয়েছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নে এখন বিশ্বের অসংখ্য দেশকে পেছনে ফেলে সামনের কাতারে চলে এসেছে। বিশ্বের অনেক নেতাই বাংলাদেশের উন্নয়নকে ঈর্ষার চোখে দেখেন। বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। কূটনৈতিক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে দেশের সম্ভাবনাকে কীভাবে আরও একধাপ কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায়- সেটি প্রধানমন্ত্রী খুবই দক্ষতার সাথে পরিচালনা করছেন। বিগত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রেখে দেশের যে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে চললে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন আর বেশি দূরে নেই। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে যথেষ্ট। এখন প্রয়োজন দেশবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা এবং সমন্বয়। যদি সকল ক্ষেত্রে সমন্বয় হয় তবে দেশকে আর পেছনে তাকাতে হবে না।