সুরেশ কুমার দাশ : মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রধান মিত্র ভারতের সঙ্গে ‘রক্তের সম্পর্ক’ হেতু বন্ধুত্বের নিবিড় বন্ধন থেকে আলগা থাকা চীনকে এবার নতুন সম্পর্কের সুতোয় বাঁধতে চাইছে ঢাকা। এজন্য দুই পক্ষের মধ্যে বেশ সৌজন্যের মধ্য দিয়ে নতুন সম্পর্কের বন্ধন ‘নিবিড়’ হচ্ছে। পায়রা বন্দরকে ঘিরে তৈরি এই ‘নিবিড়’ বন্ধন, যা দক্ষিণ অঞ্চলের সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগ (সিডি)। কারণ বাংলাদেশের প্রয়োজনে চীনকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ চীন বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে-পরে চীনের সঙ্গে কী ঘটতে যাচ্ছে বোঝাই যাচ্ছিল না। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাওয়ের সফর থেকেও খোলামেলা কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না, চীন আসলে কী চাইছে বা কী পাচ্ছে। কিংবা চীনকে কীভাবে সন্তুষ্ট করবে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগেই পত্রপত্রিকায় তাই ‘নিবিড় কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বে’র অংশ হিসাবে উঠে এসেছে পায়রা সমুদ্রবন্দর ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন উদ্যোগের খবর।
এখন হয়ত এই উদ্যোগই চীনকে বাগে আনার কৌশল ঢাকার কাছে। কারণ ভারতের বাগড়ায় বাংলাদেশ চীনকে অনেকটা এড়িয়ে না গেলেও সিদ্ধান্ত বদল করে আসছিল। এক নাগাড়ে ভারত এসে বাংলাদেশের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিল। বলা যায়– অনেকটাই অস্বিস্তকর ও গুমোট অবস্থার জন্ম দিচ্ছিল। তার ওপর বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেলমাধ্যমে পণ্য পরিবহন বাংলাদেশের অনেকের পছন্দ হয়নি। কিন্তু এরচেয়ে বড় কথা তিস্তার জল আরও ঘোলা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে অনেক হিসেবনিকেশ পাল্টে গেছে। পররাষ্ট্রনীতির এই হিসেবের ভবিষ্যৎ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা এখানে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকারের ব্যাপক বাগড়া বা স্বার্থও আছে।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের দিকে তাকিয়ে থাকার বিষয় রয়ে গেছে। ভারত সফর নিয়ে আমাদের দেশের মধ্েয এত প্রতিক্রিয়ার মধ্েযও চীনের কোনো বিশেষ হোলদোল চোখে পড়ছে না। তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গেছে তা কোনোভাবেই হাজির করেনি। যদিও ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চীনের অনেকগুলো প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে থেকে বাংলাদেশে বিচরণ করছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ডেস্কের সঙ্গে মিটিং, আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যা চলছেই। সকলেই চায় সম্প্রীতিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে। কিন্তু ভারতের বিষয়ে আর বিশেষ লুকোছাপাও ছিল না। বিশেষ করে ভারতের ইশারা-ইঙ্গিতে বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনার সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়া। বাংলাদেশের এভাবে সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়ার স্পষ্ট প্রমাণও আছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়েত্রার সফরে এবং এরপর শেখ হাসিনার ভারত সফরে এই হিসেব উল্টে গেছে। ভারত থেকে আসার পর শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মিত্রশক্তি। ভারত আমাদের শুধু মিত্রশক্তি নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদান ইতিহাস থেকে কেউ মুছতেও পারবে না। তাই বলে আমরা আমাদের স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারি না। ভারত তিস্তা এবং ফারাক্কায় আমাদের লাভ করছে না ক্ষতি করছে সেদিকটা দেখতে হবে। মজার বিষয় হচ্ছে তিস্তার একটা সঙ্কটের সঙ্গে আরও একটি সঙ্কট সৃষ্টি করে তিস্তা নিয়ে দুটি সমস্যা সৃষ্টি করা। এজন্য তাদের কাছে ধর্না দেওয়ার পরিমাণ বাড়বে চীনের কাছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ধর্না দেওয়ার মতোই।
অথচ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নিজেরই উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা ছিল, অন্তত এই আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকেই। এটা নিয়ে গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষ থেকে উত্তরাঞ্চলের জনগণকেও আশ্বস্ত করা হয়েছিল। অর্থাৎ জনগণও সাক্ষী। যে কারণে তিস্তায় এখন বাংলাদেশের কোনো হিসেবের মিল পাচ্ছে না সমালোচক ও বিশেষজ্ঞরা।
তিস্তা নিয়ে চীনের মহাপরিকল্পনার পাল্টা কৌশল এরই মধ্যে পাকাপোক্ত ভারতের। যেটা ভারতের কথার ফুলঝুরি। দীর্ঘসূত্রতার নতুন কৌশল। অর্থাৎ তিস্তা নিয়ে আগে একটি খেলা ছিল। নতুন চুক্তির ফলে তিস্তা নিয়ে তাদের খেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুটি। একটিতে ঝুলে আছি ২০ বছর। বাংলাদেশ কী কারণে এভাবে নিজেই ঝুলে আছে বোঝা দায়! যারা নিজেদের ঝুলিয়ে রাখার পরিবর্তে যে গলায় ফাঁস লাগাটা বোঝে না তাদের মৃত্যু তো আত্মহত্যার চেয়ে বেশি বোকামি। আত্মহননকারীর লড়াইয়ের জন্য কিছুই থাকে না। এরই মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের আগে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে একটি লেখাও লিখেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ভারতের ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত শ্রিংলার ওই লেখার মূল প্রতিপাদ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর হলেও চীনের প্রভাব বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত দেওয়া হয়েছে। লেখাটিতে বাংলাদেশের জন্য পথ বাতলে দেওয়া এবং প্রভাবিত করার মতো কথাবার্তাও আছে। শ্রিংলা বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাব বৃদ্ধিকে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এর প্রভাবে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে বিরূপ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। শ্রিংলার নিবন্ধে লেখা হয়েছে, এটা আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশ সফর ভারতে হবে। দিল্লি সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক সই করে ভারত। উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতকরণে একটি ‘রূপকল্প ঘোষণা’ গ্রহণ করে।
ভারতের সঙ্গে চীনের বড়সড় শত্রুতা আছে। শুধু শত্রুতা নয়, এই কূটনৈতিক যুদ্ধে চীনের ধারেকাছেও নেই ভারত। ভারতের সেই দগদগে ক্ষতে বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়ে ভারত কখনো কখনো চীনের প্রতি প্রতিশোধস্পৃহা পূরণ করছে কিনা ভেবে দেখতে হবে আমাদের। এসব দেখলে মনে হয় বাংলাদেশের বিশ্বস্ততা আসলে অতুলনীয়। তাই বাইরের কোনো তৃতীয় পক্ষ তো বলতেই পারে ভারতের ইচ্ছে অনুযায়ী চীনের সঙ্গে নিজেদের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করছে বাংলাদেশ। যাতে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক বা বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক এক সময় বিষাদে রূপ নিতে পারে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং অবশ্য আগেভাগেই বলে রেখেছেন, বাংলাদেশ কোয়াডে যুক্ত হলে ঢাকা-বেইজিংয়ের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। সেটা গত মে মাসের কথা। ঢাকায় কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময়ে লি জিমিং বলেছিলেন এ কথা। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ চলাচল ‘অবাধ ও স্বাধীন’ রাখার উপায় খোঁজার যুক্তি দেখিয়ে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে ‘কোয়াড’ নামে একটা সংলাপ শুরু হয়েছিল। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গি ঢাকা সফর করেছিলেন। সেই সফরে কোয়াড নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এই উত্তর দিয়েছিলেন। এই শত্রুতা-মিত্রতার নতুন-পুরনো হিসেবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কোন পর্যায়ে আছে বোঝা মুশকিল! কারণ এর আগে-পরে আরও কিছু ইস্যুতে চীনের বিফল মনোরথ হবার নজির রয়েছে। এখন মাতাবাড়িতে যে গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, শুরুতে সোনাদিয়ায় এই সমুদ্রবন্দরটি হবার কথা ছিল। যেখানে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে চীনের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এজন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চুক্তির প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছিল। পত্র-পত্রিকায় ওই বিষয়ে লেখালেখিও হয়েছিল। ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর একটি দৈনিকে প্রফেসর মঈনুল ইসলাম লিখেছিলেন, “কোনো কোনো দেশ চীনকে বঙ্গোপসাগরে সহজে প্রবেশাধিকার দিতে চায় না। কারণ তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।”
তখন শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় গভীর সমুদ্রবন্দর নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়টি শেষমুহূর্তে বাতিল হয়ে যায়। এরপর গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ শুরু হয় মহেশখালীর মাতারবাড়িতে। নির্মাণে যুক্ত হয় জাপান। ওই ঘটনার সঙ্গে এবার চীনের মহা আগ্রহের ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ ভেস্তে যাওয়ার বেশ মিল রয়েছে। অবশ্য নির্বাচনের আগেও এই পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে জনসভায় বক্তব্য দিয়েছিলেন। বিবিসি বাংলার সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এটি আরও স্পষ্ট। দ্বাদশ সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের স্বার্থে সহজ শর্তের ঋণ পেতে চীন সরকারকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের তিস্তা নদী পাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘবে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন তিনি। এজন্য চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় সমীক্ষাও করা হয়েছে। গত মে মাসে ‘গোল্ডেন ফ্রেন্ডশিপ-২০২৪’ নামে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া হবার কথা ছিল। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ভারত। এরপর এই মহড়া আর হয়েছে কিনা পত্রপত্রিকায় ওই খবর দেখা যায়নি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি যদি ভারতের ইচ্ছা-অনিচ্ছার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সেটা বন্ধুত্ব হয় কীভাবে? আমরা যদি দেশের দিকে চোখ ফেরাই, তাহলে দেখব তিস্তায় বাংলাদেশের লাভ-লোকসান নয়, চীন-ভারতের যুদ্ধই ছিল আসল। অতঃপর আটকে পড়া ফাঁদ থেকে বের হওয়া, তাও ক্ষতবিক্ষত হয়ে। এই জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের একটা রোমান্টিসিজম কাজ করছে। কূটনীতিতে তিস্তা দিয়ে জয়লাভের একটা অলীক আনন্দ। এই রোমান্টিসিজমের মানে হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’। সরকারের রোমান্টিসিজমের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের বিশাল ক্ষতি হচ্ছে কিনা সেটা কে জানে! গঙ্গার ফারাক্কা ও তিস্তার ভয়াবহতা আমরা ভোগ করছি ইতোমধ্যেই।
চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথাতেও আমাদের লাভ-লোকসানের প্রসঙ্গ আসে। এটা কি দুই পক্ষের তোড়জোরের পরে কোনো একটা কিছু দিয়ে সন্তষ্টু রাখার প্রচেষ্টা? সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে কিনা সেটাও ভেবে দেখা প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সংযুক্তি আছে। এতকিছুর মধ্যে সেটাও আমাদের আগ্রহের একটি জায়গা।
অন্যদিকে চীনের পায়রা বন্দরে যুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গে আসছে মংলা বন্দরের কথাও। মাসখানেক আগে ‘এই সময়’ নামে একটি পত্রিকায় মংলা বন্দরে ভারতের যুক্ততা নিয়ে একটি সংবাদ এসেছিল। এছাড়া এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তাদের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোতে মালামাল পরিবহনের সুবিধা পেয়ে আসছিল ভারত। সমুদ্র বন্দর ব্যবহার, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেলপথে পণ্য পরিবহন— এসব ক্ষেত্রে ভারতের থেকে বাংলাদেশ যথাযথ আর্থিক লাভালাভের হিসেব পাচ্ছে না বলে দেশের মানুষ মনে করছে। দেশের মানুষের এই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে একটি কথা উল্লেখ করতে চাই সেটা হচ্ছে, তিস্তা নদী ও গঙ্গার ফারাক্কা। সেখানে যে আমরা শুধু জলের সঙ্কটে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির শিকার হচ্ছি তা-ই নয়, বাংলাদেশের ভূ-বৈশিষ্ট্েযও আঘাত এসেছে।
এই একই কারণে পশ্চিমবঙ্গও ক্ষতির শিকার হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা পেয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে আমরা কী পাই? গত ২৩ জুন আনন্দবাজার এক খবরে টিএমসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “ফরাক্কা-গঙ্গা চুক্তিতে রাজ্য সরকারও পক্ষ। কিন্তু নবীকরণের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি। যা অত্যন্ত খারাপ।” পাশাপাশিই বলা হয়েছে, এই চুক্তি বাবদ রাজ্য সরকারের যে পাওনা টাকা, তা-ও বকেয়া রয়েছে। এই খবর থেকেই বোঝা যায়, ফারাক্কার ক্ষয়ক্ষতির কারণে পশ্চিমবঙ্গ নিয়মিত ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকতে পারে।
লেখক: কলামিস্ট