প্রতিবেদক : রাজধানীর নিউমার্কেট থানার সায়েন্সল্যাব এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলটির ৪৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশবক্সের ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মামলার বাদী। গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল গনি সাবু। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলায় বিএনপির ৪৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী উপ-পরিদর্শক (এসআই) সবুজ মিয়া। এর আগে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ রবিউল আলমসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করে পুলিশ। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার বিএনপির পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলায় বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা শেখ রবিউল আলমসহ ৫২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। ওসি বলেন, মঙ্গলবার সংঘর্ষের ঘটনায় ২৭ জনকে আটক করা হয়েছিল। মামলার পর তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় গ্রেফতার আসামিরা হলেন-সবুজ মোল্লা, মো. মনিরুজ্জামান, সবুজ, ইরাক শেখ, রিপন, মকবুল হোসেন, আক্তার হোসেন, শাওন মিয়া ও রাইসুল ইসলাম। এছাড়া মামলার এজাহারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন অসীম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, যুবদলের সদস্য আবুল খায়ের লিটনসহ ৪৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে প- হয়ে যায় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি। দুপুর ২টায় ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রা সাত মসজিদ রোড, রাইফেল স্কয়ার, ঢাকা সিটি কলেজ, সায়েন্সল্যাব মোড়, বাটা সিগন্যাল ও কাঁটাবন মসজিদের সামনে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৪টার কিছু আগে পদযাত্রা নিয়ে নেতাকর্মীরা সিটি কলেজের সামনে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে এ কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি। সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিআরটিসি বাসে আগুন দিয়ে বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন। এছাড়া ধানমন্ডি ৩ নম্বর ক্রসিং রোডের পুলিশবক্স ভাঙচুর করেন।