নিজস্ব প্রতিবেদক : পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘পদ্মা ব্রিজ অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স কোম্পানি পিএলসি’। এই কোম্পানির মূলধন হবে ১০০০ কোটি টাকা।
গতকাল সোমবার (১ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে এতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের বিষয়ে বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফ করবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এদিকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সেতু বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) এই কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব দেয়। মেট্রোরেল পরিচালনায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) যেভাবে কাজ করছে, এই কোম্পানিও একইভাবে কাজ করবে। ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। পরদিন থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে সেতু কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি শিফট আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই আইনে শেখ হাসিনার নাম বাদ দিয়ে শুধু ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি শিফট আইন নাম দেওয়া হয়েছে। মাদারীপুরের শিবচরে হবে এই প্রতিষ্ঠান। এখানে উচ্চ পর্যায়ের ল্যাব তৈরি হবে, যেখানে গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
যত্ন-স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রী সবাইকে একটি নির্দেশনা দিয়েছেন, গতকাল বাজেট পাস হয়েছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী) এখন নির্দেশনা দিয়েছেন- সবাই যাতে যত্নের সঙ্গে নজরদারির সঙ্গে যাতে বাজেট বাস্তবায়ন করেন। দ্রুততার সঙ্গে, নিপুণতার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে যাতে বাজেট বাস্তবায়ন হয়- সেই বিষয়ে সকলকে নির্দেশনা দিয়েছেন।’ মাহবুব হোসেন বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব সবাইকে বলেছেন, এদিকে সবাই যাতে আমরা মনোনিবেশ করি। বাজেট সঠিকভাবে বাস্তবায়নে যাতে আমরা সবাই মনোনিবেশ করি।’
রফতানি বাড়ানোর নির্দেশ: বিভিন্ন দেশে রফতানি বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রফতানি নীতিমালা অনুযায়ী পণ্যের কোয়ালিটিতে যাতে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া না হয় তাও নিশ্চিত করতে বলেছেন। মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে তিনি এই নির্দেশ দেন। এদিন রফতানি নীতি ২০২৪-২৭-এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের বিষয়ে বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফ করবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। সচিব জানান, বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিন বছর পর যাতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ১১০ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়। এখন প্রতি বছর রফতানি হয় ৭০ বিলিয়ন ডলারের মতো। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেলে যেসব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে সেদিকে বিশেষ নজর দিয়ে রফতানি নীতিমালা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান। এছাড়া তিনি বাজেট বাস্তবায়নে সচেতনভাবে, স্বচ্ছতা-দক্ষতা ও জবাবদিহির সঙ্গে কাজ করতে মন্ত্রিপরিষদকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বাজেট সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়নের নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।