ঢাকা ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত করার দাবি

  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০২২
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত করার পাশাপাশি তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা।
সেই সঙ্গে পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তামাকবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।
তামাক চাষ, তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার এবং তামাকের বর্জ্য পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর- সে বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘টোবাকো: থ্রেট টু আওয়ার এনভায়রনমেন্ট’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতিবছর ৩১ মে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে। বাংলাদেশে এবার দিনটি পালিত হচ্ছে ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে। বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ বিবৃতিতে প্রজ্ঞা বলেছে, এদেশের পরিবেশ, প্রতিবেশ, জলবায়ু এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে তামাক। সেজন্য শক্তিশালী আইন করে এবং কর বাড়িয়ে তামাকের আগ্রাসন বন্ধ করতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “তামাকের বহুমুখী ক্ষতির প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্তসহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, তামাক কোম্পানিগুলো বছরে ৮৪ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণ, ৬ ট্রিলিয়ন শলাকা সিগারেট উৎপাদনের জন্য ২২ বিলিয়ন টন পরিমাণ পানি অপচয় এবং ৬০ কোটি বৃক্ষ নিধন করে।
“যা জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে, এ ছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্টের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রে ব্যাপক ক্ষতি করছে।”
ধূমপানের কারণে প্রতিবছর ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন সিগারেট ফিল্টার জমা হচ্ছে প্রকৃতিতে, যার ওজন ৭ লাখ ৬৬ হাজর ৫৭১ মেট্রিক টন। সিগারেটের এই ফিল্টার বাংলাদেশে ‘পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ’ বলে এবিএম জুবায়েরের ভাষ্য। তিনি বলেন, “২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মোট ৭১ বিলিয়ন শলাকা সিগারেট উৎপাদিত হয়েছে। সিগারেটের ফেলে দেওয়া ফিল্টার প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় এক দশক সময় নেয়, আর মিশে যাওয়ার সময় এ থেকে সাত হাজারেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়।”
প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের ৯০ শতাংশ তামাক উৎপাদন হয় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, বাংলাদেশ এর অন্যতম। দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব ‘ব্যাপক’। বিশ্বের মোট তামাকের ১ দশমিক ৩ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। টোবাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বননিধনের জন্য তামাক দায়ী। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে জলাশয়ে মিশে যাচ্ছে, যা মাছ উৎপাদনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এদেশে ৪ কোটি মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে জানিয়ে প্রচলিত আইন সংশোধনের উপর গুরুত্ব দিয়েছে প্রজ্ঞা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত করার দাবি

আপডেট সময় : ০১:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্ত করার পাশাপাশি তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা।
সেই সঙ্গে পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও মঙ্গলবার পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তামাকবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো।
তামাক চাষ, তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার এবং তামাকের বর্জ্য পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর- সে বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘টোবাকো: থ্রেট টু আওয়ার এনভায়রনমেন্ট’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রগুলো ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতিবছর ৩১ মে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে। বাংলাদেশে এবার দিনটি পালিত হচ্ছে ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে। বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ বিবৃতিতে প্রজ্ঞা বলেছে, এদেশের পরিবেশ, প্রতিবেশ, জলবায়ু এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে তামাক। সেজন্য শক্তিশালী আইন করে এবং কর বাড়িয়ে তামাকের আগ্রাসন বন্ধ করতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “তামাকের বহুমুখী ক্ষতির প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্তসহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, তামাক কোম্পানিগুলো বছরে ৮৪ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমণ, ৬ ট্রিলিয়ন শলাকা সিগারেট উৎপাদনের জন্য ২২ বিলিয়ন টন পরিমাণ পানি অপচয় এবং ৬০ কোটি বৃক্ষ নিধন করে।
“যা জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে, এ ছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্টের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রে ব্যাপক ক্ষতি করছে।”
ধূমপানের কারণে প্রতিবছর ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন সিগারেট ফিল্টার জমা হচ্ছে প্রকৃতিতে, যার ওজন ৭ লাখ ৬৬ হাজর ৫৭১ মেট্রিক টন। সিগারেটের এই ফিল্টার বাংলাদেশে ‘পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ’ বলে এবিএম জুবায়েরের ভাষ্য। তিনি বলেন, “২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মোট ৭১ বিলিয়ন শলাকা সিগারেট উৎপাদিত হয়েছে। সিগারেটের ফেলে দেওয়া ফিল্টার প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় এক দশক সময় নেয়, আর মিশে যাওয়ার সময় এ থেকে সাত হাজারেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়।”
প্রজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের ৯০ শতাংশ তামাক উৎপাদন হয় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, বাংলাদেশ এর অন্যতম। দেশের পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজের ওপর তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব ‘ব্যাপক’। বিশ্বের মোট তামাকের ১ দশমিক ৩ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। টোবাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বননিধনের জন্য তামাক দায়ী। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে জলাশয়ে মিশে যাচ্ছে, যা মাছ উৎপাদনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এদেশে ৪ কোটি মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে জানিয়ে প্রচলিত আইন সংশোধনের উপর গুরুত্ব দিয়েছে প্রজ্ঞা।