রাবি সংবাদদাতা : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে সন্দেহজনকভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আটক পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে তিন জনকে ছাড়িয়ে এনেছেন শিক্ষকরা। বুধবার (৩১ জুলাই) বিকাল ৪টা থেকে দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত থানায় অবস্থান নিয়ে তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনেন তারা। জানা গেছে, বুধবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের সামনে থেকে ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সৈয়দ সামিউল বাসিত ও মাজেদ হাসান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ইসলামকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নগরের মহিষবাথান এলাকা থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হাসান এবং আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রত্যয়কে আটক করা হয়।
এদের মধ্যে সামিউল বাসিত, মাজেদ হাসান ও নাইম ইসলামকে মতিহার থানা পুলিশ, প্রত্যয়কে রাজপাড়া থানা পুলিশ এবং রিফাত হাসানকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। পরে রিফাত হাসানকেও বুধবার মধ্যরাতে রাজপাড়া থানায় পাঠানো হয়।
আটকের খবর জানাজানি হলে বিকালের দিকে রাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা থানায় ছুটে যান। এর মধ্যে মতিহার থানায় আটক ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে অবস্থান নেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রোবাইদা আখতার, ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, অধ্যাপক আল মামুন, সহযোগী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মো. হাবিব জাকারিয়াসহ অন্তত ২০ জন। নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে নিতে ডিবি কার্যালয়ে যান পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক সরকার, অধ্যাপক সামিউল ইসলাম সরকারসহ আরও কয়েকজন। এ ছাড়া রাজপাড়া থানায় অবস্থান নেন আইন বিভাগের সভাপতি সাঈদা আঞ্জুসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। পরে পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে নগরীর মতিহার থানায় আটককৃত তিন শিক্ষার্থী সৈয়দ সামিউল বাসিত, মাজেদ হাসান এবং নাইম ইসলামকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঘরে ফেরেন রাবির শিক্ষকরা। রাজপাড়া থানায় আটক দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়ার কথা থাকলেও তাদের আর পরে ছাড়া হয়নি। আটক করার বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. মোবারক পারভেজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে আসি। আমরা প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করেছি। আরও যাচাই-বাছাই চলছে। এর মধ্যে তাদের শিক্ষকরা এসেছিলেন। পরে তাদের জিম্মায় আটককৃতদের প্রেরণ করেছি।’ এর আগে হত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে বুধবার সারা দেশে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণার অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নেয়।