The Daily Ajker Prottasha

‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’-স্লোগানে নবশক্তি

0 0
Read Time:4 Minute, 39 Second

প্রত্যাশা ডেস্ক : সেদিন সেনাবাহিনীর গুলিতে শহীদদের মধ্যে ছিলেন হুরমত, নিয়ামত ও মনু খলিফাসহ আরও অনেকে। বহুলোক আহত হন। বীর বাঙালির এই সশস্ত্র প্রতিরোধের কারণেই ব্যর্থ হয় জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সেনাদের নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা।
জয়দেবপুরের ‘সংঘর্ষের’ খবর বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে উত্তাল ঢাকাসহ সারাদেশে। স্লোগান ওঠে- ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। এদিন সন্ধ্যায় জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের সান্ধ্য আইন জারি করা হয়।
জয়দেবপুরে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর সেনাবাহিনীর গুলির তীব্র নিন্দা জানিয়ে সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু এক বিবৃতিতে বলেন, “যারা বুলেট ও শক্তি দিয়ে গণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করবেন বলে ভেবেছেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। কিন্তু এর অর্থ এই নয়, তারা শক্তি প্রয়োগে ভয় পায়।”
একদিনের বিরতির পর এদিন ঢাকায় বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার তৃতীয় দফা একান্ত বৈঠক হয়। ঢাকাসহ সারাদেশে কালো পতাকা উত্তোলন অব্যাহত থাকে। সরকারি-আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, কামাল হোসেন এবং সরকারের পক্ষে বিচারপতি এআর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান অংশ নেন। দুই ঘণ্টার বৈঠকে আলোচনার ‘টার্ম অব রোফারেন্স’ ঠিক করা হয়। এদিনও বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে অনেক মিছিল যায়। সমবেতা জনতার উদ্দেশ্যে শেখ মুজিব বলেন, “শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাঁচার ব্যবস্থা করে যাব।”
ন্যাপ প্রধান মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া অহেতুক ঢাকায় সময় নষ্ট করছেন। ইয়াহিয়া খানের বোঝা উচিত শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া পাকিস্তানকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মনে রাখা উচিত যে, তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন।”
করাচিতে জাতীয় পরিষদের স্বতন্ত্র সদস্যসহ সংখ্যালঘিষ্ঠ দলগুলোর পার্লামেন্টারি পার্টির নেতারা এক বৈঠকে পশ্চিম পাকিস্তানে ভুট্টোবিরোধী একটি যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো এদিন পশ্চিম পাকিস্তানে গণআন্দোলন শুরুর লক্ষ্যে তার দলের প্রস্তুতি গ্রহণের কথা ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ক্ষমতার ব্যাপারে পিপলস পার্টিকে হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র হলে আমি চুপ করে বসে থাকব না।” তিনি হুমকি দেন, “পূর্ব পাকিস্তানের লোকদের শক্তি দেখেছেন, এবার আপনারা পশ্চিম পাকিস্তানিদের শক্তি দেখবেন।” তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী ‘৭১ এর দশ মাস’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *