ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

গোলাগুলি থামেনি, আতঙ্ক নিয়েই বসবাস তুমব্রু সীমান্তে

  • আপডেট সময় : ০২:০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে। এর ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় কয়েকটি গোলার শব্দ শুনতে পেয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ সকালে মিয়ানমারের ভেতরে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে পূর্ব দিকে ভারী গোলার শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল পড়ে ঘুমধুমের কোনারপাড়া এলাকায় এক রোঙিঙ্গা নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি মুহূর্তে ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্ত এলাকার বাসীদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দাদের নির্যাতন ও অবরুদ্ধ করে রাখার ফলে অনেকেই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের মন্ডু সীমান্তে অবস্থান করছে। তবে বিজিবির কড়া নিরাপত্তায় এখনেও তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে কোনও রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে পারেনি।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আতঙ্কে গতকাল সন্ধ্যায় বাইশফাঁড়ি হেডম্যানপাড়া এলাকার অনেকে হোঁয়াইক্ষ্যাং পশ্চিম হরিহোল এলাকায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছে চলে গেছে। সকালে কয়েকটি ভারী অস্ত্রের ফায়ারের শব্দ শোনা গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় বিজিবি ও পুলিশের নিরাপত্তা টহল জোরদারের কারণে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।’ বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সীমান্তে পর্যাপ্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন আছে। তারা সার্বক্ষণিক এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করছে। এছাড়া পুলিশি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরমধ্যে দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে দেশটি। এসব ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তিনবার তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবে বলেও তখন হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু গত শুক্রবার মর্টারশেল ও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে হতাহতের পর উদ্বেগ বেড়ে যায়। এ ঘটনায় এক মাসে চতুর্থবারের মতো গত রবিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

গোলাগুলি থামেনি, আতঙ্ক নিয়েই বসবাস তুমব্রু সীমান্তে

আপডেট সময় : ০২:০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে। এর ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন পার করছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় কয়েকটি গোলার শব্দ শুনতে পেয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ সকালে মিয়ানমারের ভেতরে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে পূর্ব দিকে ভারী গোলার শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল পড়ে ঘুমধুমের কোনারপাড়া এলাকায় এক রোঙিঙ্গা নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি মুহূর্তে ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্ত এলাকার বাসীদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দাদের নির্যাতন ও অবরুদ্ধ করে রাখার ফলে অনেকেই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের মন্ডু সীমান্তে অবস্থান করছে। তবে বিজিবির কড়া নিরাপত্তায় এখনেও তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে কোনও রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে পারেনি।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আতঙ্কে গতকাল সন্ধ্যায় বাইশফাঁড়ি হেডম্যানপাড়া এলাকার অনেকে হোঁয়াইক্ষ্যাং পশ্চিম হরিহোল এলাকায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছে চলে গেছে। সকালে কয়েকটি ভারী অস্ত্রের ফায়ারের শব্দ শোনা গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় বিজিবি ও পুলিশের নিরাপত্তা টহল জোরদারের কারণে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।’ বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সীমান্তে পর্যাপ্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন আছে। তারা সার্বক্ষণিক এলাকার নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করছে। এছাড়া পুলিশি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে দুটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এতে কেউ হতাহত না হলেও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এরমধ্যে দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে দেশটি। এসব ঘটনায় ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তিনবার তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবে বলেও তখন হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কিন্তু গত শুক্রবার মর্টারশেল ও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে হতাহতের পর উদ্বেগ বেড়ে যায়। এ ঘটনায় এক মাসে চতুর্থবারের মতো গত রবিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।