ঢাকা ০৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গর্ভধারণ করতে চাইলে ফলিক অ্যাসিড কেন জরুরি?

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময় বেশিরভাগই ডিম্বস্ফোটনের চক্র এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মনোযোগ দেন। তবে গর্ভধারণের সময় অনাগত সন্তানের উর্বরতা এবং স্বাস্থ্য উভয় ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নির্ধারক ভূমিকা পালন করে এবং তা হলো ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ। ফলিক অ্যাসিড হলো গুরুত্বপূর্ণ বি ভিটামিন ফোলেটের একটি রূপ, যা শরীরকে সুস্থ গর্ভাবস্থার জন্য প্রস্তুত করে।
ফলিক অ্যাসিড কী?
ফলিক অ্যাসিড হলো ফোলেটের কৃত্রিম সংস্করণ, যা বিভিন্ন খাবারে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া একটি বি ভিটামিন। প্রাকৃতিকভাবে ফোলেটযুক্ত খাবারের কয়েকটি উদাহরণের মধ্যে রয়েছে পাতাযুক্ত সবুজ শাক, মটরশুটি এবং সাইট্রাস ফল। ডিএনএ এবং লোহিত রক্তকণিকা (জইঈ) সংশ্লেষণে ফলিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর নিউরাল টিউবের সঠিক গঠন এবং বিকাশেও সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের কর্ড গঠন করে। গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় ফলিক অ্যাসিড কেন খাবেন-
১. এনটিডি প্রতিরোধ করে
ভ্রূণের বিকাশের পর্যায়ে নিউরাল টিউব ত্রুটি (এনটিডি) দেখা দেয়। সহজ ভাষায় এনটিডি বলতে বোঝায় যখন মস্তিষ্ক এবং কর্ড সাধারণত তৈরি হয় না। তবে, যদি কোনো নারীর গর্ভাবস্থার আগে এবং ঠিক শুরুতে ফলিক অ্যাসিড সরবরাহ করা হয়, তবে এটি ভ্রূণের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর জন্মগত অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষকরা অনুমান করেছেন যে একজন গর্ভবতী নারী ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ এনটিডির ঝুঁকি ৭০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
২. উর্বরতা বৃদ্ধি করে
কোষ বিভাজন এবং টিস্যু বৃদ্ধিতে ফলিক অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক উর্বরতা উন্নত করে কারণ এটি নারীর সুস্থ ডিম্বাণু এবং পুরুষের শুক্রাণু বিকাশ বৃদ্ধি করে। এটি হরমোনকেও নিয়ন্ত্রণ করে, যা ডিম্বস্ফোটন এবং গর্ভধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গর্ভপাত রোধ করতে সাহায্য করে
গবেষণা অনুসারে, গর্ভধারণের আগে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণকারী নারীর গর্ভপাতের সম্ভাবনা কম থাকে। একই প্রতিবেদন অনুসারে, যেসব নারী ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক গ্রহণ করেন তাদের গর্ভপাতের ঝুঁহি কম থাকে যারা গ্রহণ করেন না তাদের তুলনায়।
৪. গর্ভাবস্থার জন্য শরীর প্রস্তুত করে
ফলিক অ্যাসিডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো লোহিত রক্তকণিকা এবং প্লাসেন্টাল বিকাশ। ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক নিশ্চিত করে যে আপনার শরীর গর্ভাবস্থার জন্য যতটা সম্ভব প্রস্তুত, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে।
কখন থেকে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করবেন?
সন্তান জন্মদানের চেষ্টা শুরু করার কমপক্ষে এক মাস আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ শুরু করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি শরীরকে গর্ভাবস্থার প্রথম দিনগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন সঞ্চয় করার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়। এমনকি প্রথম ত্রৈমাসিক জুড়ে এই পরিপূরক গ্রহণ চালিয়ে যেতে পারেন, যা আপনার শিশুর প্রাথমিক বিকাশে সহায়তা করবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গর্ভধারণ করতে চাইলে ফলিক অ্যাসিড কেন জরুরি?

আপডেট সময় : ০৫:৩০:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময় বেশিরভাগই ডিম্বস্ফোটনের চক্র এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মনোযোগ দেন। তবে গর্ভধারণের সময় অনাগত সন্তানের উর্বরতা এবং স্বাস্থ্য উভয় ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নির্ধারক ভূমিকা পালন করে এবং তা হলো ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ। ফলিক অ্যাসিড হলো গুরুত্বপূর্ণ বি ভিটামিন ফোলেটের একটি রূপ, যা শরীরকে সুস্থ গর্ভাবস্থার জন্য প্রস্তুত করে।
ফলিক অ্যাসিড কী?
ফলিক অ্যাসিড হলো ফোলেটের কৃত্রিম সংস্করণ, যা বিভিন্ন খাবারে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া একটি বি ভিটামিন। প্রাকৃতিকভাবে ফোলেটযুক্ত খাবারের কয়েকটি উদাহরণের মধ্যে রয়েছে পাতাযুক্ত সবুজ শাক, মটরশুটি এবং সাইট্রাস ফল। ডিএনএ এবং লোহিত রক্তকণিকা (জইঈ) সংশ্লেষণে ফলিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর নিউরাল টিউবের সঠিক গঠন এবং বিকাশেও সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের কর্ড গঠন করে। গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক, গর্ভাবস্থায় ফলিক অ্যাসিড কেন খাবেন-
১. এনটিডি প্রতিরোধ করে
ভ্রূণের বিকাশের পর্যায়ে নিউরাল টিউব ত্রুটি (এনটিডি) দেখা দেয়। সহজ ভাষায় এনটিডি বলতে বোঝায় যখন মস্তিষ্ক এবং কর্ড সাধারণত তৈরি হয় না। তবে, যদি কোনো নারীর গর্ভাবস্থার আগে এবং ঠিক শুরুতে ফলিক অ্যাসিড সরবরাহ করা হয়, তবে এটি ভ্রূণের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর জন্মগত অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষকরা অনুমান করেছেন যে একজন গর্ভবতী নারী ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ এনটিডির ঝুঁকি ৭০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
২. উর্বরতা বৃদ্ধি করে
কোষ বিভাজন এবং টিস্যু বৃদ্ধিতে ফলিক অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক উর্বরতা উন্নত করে কারণ এটি নারীর সুস্থ ডিম্বাণু এবং পুরুষের শুক্রাণু বিকাশ বৃদ্ধি করে। এটি হরমোনকেও নিয়ন্ত্রণ করে, যা ডিম্বস্ফোটন এবং গর্ভধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. গর্ভপাত রোধ করতে সাহায্য করে
গবেষণা অনুসারে, গর্ভধারণের আগে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণকারী নারীর গর্ভপাতের সম্ভাবনা কম থাকে। একই প্রতিবেদন অনুসারে, যেসব নারী ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক গ্রহণ করেন তাদের গর্ভপাতের ঝুঁহি কম থাকে যারা গ্রহণ করেন না তাদের তুলনায়।
৪. গর্ভাবস্থার জন্য শরীর প্রস্তুত করে
ফলিক অ্যাসিডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো লোহিত রক্তকণিকা এবং প্লাসেন্টাল বিকাশ। ফলিক অ্যাসিডের পরিপূরক নিশ্চিত করে যে আপনার শরীর গর্ভাবস্থার জন্য যতটা সম্ভব প্রস্তুত, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে।
কখন থেকে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করবেন?
সন্তান জন্মদানের চেষ্টা শুরু করার কমপক্ষে এক মাস আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ শুরু করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি শরীরকে গর্ভাবস্থার প্রথম দিনগুলোর জন্য পর্যাপ্ত ভিটামিন সঞ্চয় করার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়। এমনকি প্রথম ত্রৈমাসিক জুড়ে এই পরিপূরক গ্রহণ চালিয়ে যেতে পারেন, যা আপনার শিশুর প্রাথমিক বিকাশে সহায়তা করবে।