ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তামাক চাষ বন্ধ হোক

  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

বিভূতী ভূষণ মাহাতো : বাংলাদেশ প্রতিবছর খাদ্য ও কৃষি পণ্য আমদানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। গত অর্থবছরে এক লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার খাদ্য ও কৃষি পণ্য আমদানি করেছে। যার মধ্যে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি চাল, ৪৬ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল ও তেলবীজ, তিন হাজার কোটি টাকার মসলা অন্যতম (সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক)। এতে পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ৩১ হাজার কোটি টাকার বেশি খাদ্য দ্রব্য আমদানি ব্যয় হয়েছে। খাদ্য দ্রব্য আমদানিতে রাষ্ট্রের আমদানি ব্যয় বেড়েই চলেছে। কৃষিপণ্য ও খাদ্য দ্রব্যের আমদানি নির্ভরতা কমাতে আবাদযোগ্য কৃষি জমিতে খাদ্য শস্য উৎপাদন করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত আমদানি নির্ভরতার ফলে রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ বাড়ছে। পরিকল্পিতভাবে কৃষি জমিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে খাদ্য আমদানি ব্যয় অনেক কমানো সম্ভব। দেশে প্রায় ৯২ হাজার ৩২৬ মেট্রিক টন তামাক উৎপাদন হয়। এই পরিমাণ তামাক উৎপাদনে প্রায় ২৫টি জেলায় এক লাখ ৩৮৫ একর জমি ব্যবহার করা হচ্ছে (সূত্র: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো)। তামাক চাষে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য শস্য উৎপাদনের জন্য জমি হ্রাস পাচ্ছে। খাদ্য শস্য উৎপাদনের জমি হ্রাস পাওয়ার ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে। কারণ চাহিদার তুলনায় কম জমিতে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদন কম হলে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। বান্দরবানে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল সে খবর আমাদের অজানা নয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) তথ্য মতে, বান্দরবানের ৯০ শতাংশ জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত তামাক চাষের ফলে সেখানে খাদ্য সংকট বিরাজ করছে। তামাক চাষে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ জমিতে খাদ্যশস্য চাষ করলে খাদ্য সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হতো।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি দেশের শীর্ষ দরিদ্র জেলা। বিআইডিএসের তথ্য মতে এসব জেলায় অধিক পরিমাণে তামাক চাষ হয়। তামাক চাষ লাভজনক বলা হলেও তামাক চাষে শীর্ষস্থানীয় জেলাগুলো দারিদ্র্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তামাক চাষ যদি প্রকৃত পক্ষেই লাভজনক হতো তাহলে এই জেলাগুলোতে দারিদ্র্যে হার এত বেশি হতো না। তামাক চাষ আদৌও চাষী ও সাধারণ মানুষের জন্য লাভজনক বা উপকারী নয়। তামাক চাষে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, পরিবেশের ক্ষতির অন্যতম একটি কারণ তামাক চাষ। তামাক চাষে সম্পৃক্ত ও তামাক ব্যবহারকারী ব্যক্তি ও তার পরিবার উভয়ই স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়। তামাক অসংক্রামক রোগ ক্যান্সার, হৃদরোগ, সিওপিডিসহ আরও অনেক রোগের অন্যতম কারণ। এসব রোগের চিকিৎসাজনিত ব্যয় বহন করতে হয় দীর্ঘদিন। এতে রাষ্ট্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।
অপরদিকে, তামাক চাষ ও তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তামাক চাষের ফলে জমির উর্বরত হ্রাস পাচ্ছে। যে জমিতে তামাক চাষ হয় সেই জমিসহ আশেপাশের জমিরও উর্বরতা নষ্ট হয়। এতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অধিক পরিমাণে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। তামাক পাতা শুকাতে প্রচুর পরিমাণে খড়ি প্রয়োজন হয়। এক একর জমির তামাক শুকাতে পাঁচ টন কাঠ প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করতে বছরে ২৯ লাখ ৩২ হাজার গাছ কাটা হয়। তামাক পাতা পোড়াতে বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ বন উজাড় হচ্ছে। বন উজাড় জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের সংবিধানে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষার বিধান রয়েছে। ১৮(১) ধারায় বলা হয়েছে জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যর উন্নতি সাধন এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজ দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ১৮(ক) ধারায় দেশের ভবিষ্যৎ ও বর্তমান নাগরিকের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধানের রাষ্ট্রের দায়িত্বের কথা উল্লেখ রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় তামাক চাষ বন্ধে কার্যকর ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রের কোনো বাধা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান স্পিকার্স কনফারেন্সে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। প্রধানন্ত্রীর ওই ঘোষণার এতবছর পরেও তামাক চাষ বন্ধে কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই আমরা জানি। বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তামাক চাষ বন্ধ করা জরুরি। তামাক চাষে জড়িত চাষীদের প্রণোদনার মাধ্যমে খাদ্য শস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। তামাক চাষ বন্ধে কৃষি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রয়োজন। কিন্তু তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কেন কৃষি মন্ত্রণালয় এখনও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না? দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি জমির সঠিক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। কৃষি জমির সঠিক ব্যবহারে দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এখনই সময় তামাক চাষ বন্ধ করে খাদ্য শস্য চাষ বৃদ্ধি করার। তবেই খাদ্য দ্রব্যের আমদানি নির্ভরতা কমানো, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তামাক চাষ বন্ধ হোক

আপডেট সময় : ১২:৫৪:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

বিভূতী ভূষণ মাহাতো : বাংলাদেশ প্রতিবছর খাদ্য ও কৃষি পণ্য আমদানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। গত অর্থবছরে এক লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার খাদ্য ও কৃষি পণ্য আমদানি করেছে। যার মধ্যে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি চাল, ৪৬ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল ও তেলবীজ, তিন হাজার কোটি টাকার মসলা অন্যতম (সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক)। এতে পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ৩১ হাজার কোটি টাকার বেশি খাদ্য দ্রব্য আমদানি ব্যয় হয়েছে। খাদ্য দ্রব্য আমদানিতে রাষ্ট্রের আমদানি ব্যয় বেড়েই চলেছে। কৃষিপণ্য ও খাদ্য দ্রব্যের আমদানি নির্ভরতা কমাতে আবাদযোগ্য কৃষি জমিতে খাদ্য শস্য উৎপাদন করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত আমদানি নির্ভরতার ফলে রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ বাড়ছে। পরিকল্পিতভাবে কৃষি জমিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে খাদ্য আমদানি ব্যয় অনেক কমানো সম্ভব। দেশে প্রায় ৯২ হাজার ৩২৬ মেট্রিক টন তামাক উৎপাদন হয়। এই পরিমাণ তামাক উৎপাদনে প্রায় ২৫টি জেলায় এক লাখ ৩৮৫ একর জমি ব্যবহার করা হচ্ছে (সূত্র: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো)। তামাক চাষে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য শস্য উৎপাদনের জন্য জমি হ্রাস পাচ্ছে। খাদ্য শস্য উৎপাদনের জমি হ্রাস পাওয়ার ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে। কারণ চাহিদার তুলনায় কম জমিতে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদন কম হলে খাদ্য সংকট দেখা দিবে। বান্দরবানে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল সে খবর আমাদের অজানা নয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) তথ্য মতে, বান্দরবানের ৯০ শতাংশ জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত তামাক চাষের ফলে সেখানে খাদ্য সংকট বিরাজ করছে। তামাক চাষে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ জমিতে খাদ্যশস্য চাষ করলে খাদ্য সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হতো।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি দেশের শীর্ষ দরিদ্র জেলা। বিআইডিএসের তথ্য মতে এসব জেলায় অধিক পরিমাণে তামাক চাষ হয়। তামাক চাষ লাভজনক বলা হলেও তামাক চাষে শীর্ষস্থানীয় জেলাগুলো দারিদ্র্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তামাক চাষ যদি প্রকৃত পক্ষেই লাভজনক হতো তাহলে এই জেলাগুলোতে দারিদ্র্যে হার এত বেশি হতো না। তামাক চাষ আদৌও চাষী ও সাধারণ মানুষের জন্য লাভজনক বা উপকারী নয়। তামাক চাষে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, পরিবেশের ক্ষতির অন্যতম একটি কারণ তামাক চাষ। তামাক চাষে সম্পৃক্ত ও তামাক ব্যবহারকারী ব্যক্তি ও তার পরিবার উভয়ই স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়। তামাক অসংক্রামক রোগ ক্যান্সার, হৃদরোগ, সিওপিডিসহ আরও অনেক রোগের অন্যতম কারণ। এসব রোগের চিকিৎসাজনিত ব্যয় বহন করতে হয় দীর্ঘদিন। এতে রাষ্ট্র ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিপুল পরিমাণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।
অপরদিকে, তামাক চাষ ও তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তামাক চাষের ফলে জমির উর্বরত হ্রাস পাচ্ছে। যে জমিতে তামাক চাষ হয় সেই জমিসহ আশেপাশের জমিরও উর্বরতা নষ্ট হয়। এতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অধিক পরিমাণে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। তামাক পাতা শুকাতে প্রচুর পরিমাণে খড়ি প্রয়োজন হয়। এক একর জমির তামাক শুকাতে পাঁচ টন কাঠ প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশে তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করতে বছরে ২৯ লাখ ৩২ হাজার গাছ কাটা হয়। তামাক পাতা পোড়াতে বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ বন উজাড় হচ্ছে। বন উজাড় জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের সংবিধানে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য রক্ষার বিধান রয়েছে। ১৮(১) ধারায় বলা হয়েছে জনগণের পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যর উন্নতি সাধন এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজ দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ১৮(ক) ধারায় দেশের ভবিষ্যৎ ও বর্তমান নাগরিকের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধানের রাষ্ট্রের দায়িত্বের কথা উল্লেখ রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় তামাক চাষ বন্ধে কার্যকর ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রের কোনো বাধা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান স্পিকার্স কনফারেন্সে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। প্রধানন্ত্রীর ওই ঘোষণার এতবছর পরেও তামাক চাষ বন্ধে কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই আমরা জানি। বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তামাক চাষ বন্ধ করা জরুরি। তামাক চাষে জড়িত চাষীদের প্রণোদনার মাধ্যমে খাদ্য শস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। তামাক চাষ বন্ধে কৃষি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রয়োজন। কিন্তু তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কেন কৃষি মন্ত্রণালয় এখনও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না? দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি জমির সঠিক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। কৃষি জমির সঠিক ব্যবহারে দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়বে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এখনই সময় তামাক চাষ বন্ধ করে খাদ্য শস্য চাষ বৃদ্ধি করার। তবেই খাদ্য দ্রব্যের আমদানি নির্ভরতা কমানো, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।