ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বশে আছে তো?

  • আপডেট সময় : ১০:৫৯:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা রক্তবাহের মধ্যে সঞ্চিত হয়। রক্তবাহকে সরু ও শক্ত করে ফেলে। রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে। স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। আমাদের খাদ্যাভাস বা জীবনযাপনের অনিয়মের কারণে অল্প বয়সে বাড়ছে কোলেস্টেরলে আক্রান্তের সংখ্যা। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের করা একটি সমীক্ষা বলছে, ভারতে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষের দেহে খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে। বাংলাদেশেও এ হার কম নয়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না রাখলে বড় বিপদ। খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা তো হবেই, সঙ্গে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা।
তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া ভালো। তার সঙ্গে বদলে ফেলুন প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস। হয়তো দেখলেন রাতের কিছু খারাপ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল বেশি হলে মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। সঙ্গে কিডনিতে সমস্যাও হতে পারে। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজই পরিবর্তন আনুন এই সব অভ্যাসে। রাতে অল্প খান। চিকিৎসকেদের পরামর্শ, ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে নিন। মেনুতে হালকা খাবার যেমন স্যুপ, স্যালাড থাকাই ভালো। ভাত রুটি খেলেও তা পরিমাণে অল্প খেতে হবে। রাতে প্রোটিন কম খাওয়াই ভালো। মাছ বা মাংসের বদলে কম মশলা ও তেলে রান্না করা খাবার খেতে হবে। রাতে বেশি মশলার খাবার হজমে সমস্যার কারণ হতে পারে। যারা রাত জেগে কাজ করেন, তারা অনেকেই কাজ করার সময় ঘুমকে দূরে রাখতে চকলেট বা কফি খান। কোলেস্টেরল কমাতে হলে এই অভ্যাস এখনই ত্যাগ করুন। যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের কাছে ‘মিডনাইট ক্রেভিংস’ শব্দটি অতি পরিচিত। তখন বার্গার, পিৎজা বা অনান্য খাবার খান অনেকেই। কিন্তু এই সব কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে রাতে তো বটেই এমনিতেও এই খাবার থেকে দূরে থাকা ভালো। কাজ থেকে ফিরেই বোতল খুলে বসে পড়েন? কোলেস্টেরল থাকলে সেই অভ্যাস ত্যাগ করুন এখনই। রাত জেগে মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে, তাও বন্ধ করুন। অতিরিক্ত মদ্যপান কোলেস্টেরল তরতর করে বাড়িয়ে দেবে।
গাজর হতে ত্রাতা: এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে গাজরের মতো একটি উপকারী সবজি। ভাবছেন নিশ্চয়ই, কীভাবে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এই সবজি? সেই উত্তরেই রইল এই নিবন্ধটিতে।
ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার: এই সবজিতে রয়েছে– ভিটামিন, বায়োটিন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬। এছাড়া রয়েছে উপকারী কিছু উদ্ভিজ্জ উপাদান। যেমন- বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, লিউটিন, লাইকোপেন, পলি অ্যাসিটিলিনেস ও অ্যান্থোসায়ানিন ইত্যাদি। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত এই সবজি খেতেই হবে।
কোলেস্টেরল থাকবে বশে: এই সবজিতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। এই উপাদান খাবারে মজুত ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে অন্ত্রে বেঁধে ফেলে। তারপর মলের মাধ্যমে বের করে দেয়। ফলে কোলেস্টেরল বাড়ার সুযোগ পায় না। শুধু তাই নয়, গাজর হলো বিটা ক্যরোটিন থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। এসব উপাদানও কোলেস্টেরল লেভেলকে বশে আনে। যার ফলে সুস্থ-সবল থাকে হার্ট। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই এই সবজিকে জায়গা করে দিন। তবে শুধু গাজর খেলেই হবে না। এছাড়া কোলেস্টেরলকে বশে রাখতে চাইলে যেসব নিয়ম মানতেই হবে।
ফাস্টফুড চলবে না: আমাদের মধ্যে অনেকেই বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন, পিৎজা, বার্গারের দিওয়ানা। এসব খাবার নিয়মিত খান বলেই তাদের শরীরে পিছু নেয় একাধিক জটিল অসুখ। এমনকি বাড়ে কোলেস্টেরল লেভেল। তাই এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডসকে বাগে আনতে চাইলে সবার প্রথমে ফাস্টফুড খাওয়া বন্ধ করুন। এমনকি ঘি, মাখনের মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাটও কম খান। তাহলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
পাতে থাকুক ফাইবার রিচ খাবার: কোলেস্টেরলকে বশে আনতে চাইলে ডায়েটে রাখুন আটার রুটি, ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, ডালিয়া বা ওটসের মতো খাবার। সেই সঙ্গে শাক, সবজি এবং ফলের উপরও রাখতে পারেন ভরসা। কারণ, এসব খাবার ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আঁতুড়ঘর। যে কারণে এগুলো খেলেই কোলেস্টেরল কমে। নিম্মমুখী হয় সুগার। তাই তো বিশেষজ্ঞরা ডায়েটে এসব খাবারকে জায়গা করে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম মাস্ট: সারাদিন শুয়ে, বসে থাকলে কোলেস্টেরল কমবে না। বরং এই সমস্যাকে বশে আনতে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এক্ষেত্রে দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম মাস্ট। এই সময়টুকু জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে পারেন। কিংবা বাড়িতে করতে পারেন ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। এসবে অনীহা থাকলে শুধু হাঁটুন, সাইকেল চালান বা সাঁতার কাটুন। তাতেই শরীর দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে উঠবে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনে দেরি হলে জঙ্গি ও উগ্রপন্থিরাও সুযোগ নেবে: ফখরুল

ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বশে আছে তো?

আপডেট সময় : ১০:৫৯:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে তা রক্তবাহের মধ্যে সঞ্চিত হয়। রক্তবাহকে সরু ও শক্ত করে ফেলে। রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। হৃদ্রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে। স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। আমাদের খাদ্যাভাস বা জীবনযাপনের অনিয়মের কারণে অল্প বয়সে বাড়ছে কোলেস্টেরলে আক্রান্তের সংখ্যা। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের করা একটি সমীক্ষা বলছে, ভারতে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষের দেহে খারাপ কোলেস্টেরল রয়েছে। বাংলাদেশেও এ হার কম নয়। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না রাখলে বড় বিপদ। খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা তো হবেই, সঙ্গে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা।
তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া ভালো। তার সঙ্গে বদলে ফেলুন প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস। হয়তো দেখলেন রাতের কিছু খারাপ অভ্যাস বাড়িয়ে দিচ্ছে আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল। কোলেস্টেরল বেশি হলে মোটা হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। সঙ্গে কিডনিতে সমস্যাও হতে পারে। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজই পরিবর্তন আনুন এই সব অভ্যাসে। রাতে অল্প খান। চিকিৎসকেদের পরামর্শ, ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে নিন। মেনুতে হালকা খাবার যেমন স্যুপ, স্যালাড থাকাই ভালো। ভাত রুটি খেলেও তা পরিমাণে অল্প খেতে হবে। রাতে প্রোটিন কম খাওয়াই ভালো। মাছ বা মাংসের বদলে কম মশলা ও তেলে রান্না করা খাবার খেতে হবে। রাতে বেশি মশলার খাবার হজমে সমস্যার কারণ হতে পারে। যারা রাত জেগে কাজ করেন, তারা অনেকেই কাজ করার সময় ঘুমকে দূরে রাখতে চকলেট বা কফি খান। কোলেস্টেরল কমাতে হলে এই অভ্যাস এখনই ত্যাগ করুন। যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের কাছে ‘মিডনাইট ক্রেভিংস’ শব্দটি অতি পরিচিত। তখন বার্গার, পিৎজা বা অনান্য খাবার খান অনেকেই। কিন্তু এই সব কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে রাতে তো বটেই এমনিতেও এই খাবার থেকে দূরে থাকা ভালো। কাজ থেকে ফিরেই বোতল খুলে বসে পড়েন? কোলেস্টেরল থাকলে সেই অভ্যাস ত্যাগ করুন এখনই। রাত জেগে মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে, তাও বন্ধ করুন। অতিরিক্ত মদ্যপান কোলেস্টেরল তরতর করে বাড়িয়ে দেবে।
গাজর হতে ত্রাতা: এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে গাজরের মতো একটি উপকারী সবজি। ভাবছেন নিশ্চয়ই, কীভাবে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এই সবজি? সেই উত্তরেই রইল এই নিবন্ধটিতে।
ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার: এই সবজিতে রয়েছে– ভিটামিন, বায়োটিন, পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬। এছাড়া রয়েছে উপকারী কিছু উদ্ভিজ্জ উপাদান। যেমন- বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, লিউটিন, লাইকোপেন, পলি অ্যাসিটিলিনেস ও অ্যান্থোসায়ানিন ইত্যাদি। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত এই সবজি খেতেই হবে।
কোলেস্টেরল থাকবে বশে: এই সবজিতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। এই উপাদান খাবারে মজুত ক্ষতিকর কোলেস্টেরলকে অন্ত্রে বেঁধে ফেলে। তারপর মলের মাধ্যমে বের করে দেয়। ফলে কোলেস্টেরল বাড়ার সুযোগ পায় না। শুধু তাই নয়, গাজর হলো বিটা ক্যরোটিন থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। এসব উপাদানও কোলেস্টেরল লেভেলকে বশে আনে। যার ফলে সুস্থ-সবল থাকে হার্ট। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই এই সবজিকে জায়গা করে দিন। তবে শুধু গাজর খেলেই হবে না। এছাড়া কোলেস্টেরলকে বশে রাখতে চাইলে যেসব নিয়ম মানতেই হবে।
ফাস্টফুড চলবে না: আমাদের মধ্যে অনেকেই বিরিয়ানি, রোল, চাউমিন, পিৎজা, বার্গারের দিওয়ানা। এসব খাবার নিয়মিত খান বলেই তাদের শরীরে পিছু নেয় একাধিক জটিল অসুখ। এমনকি বাড়ে কোলেস্টেরল লেভেল। তাই এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডসকে বাগে আনতে চাইলে সবার প্রথমে ফাস্টফুড খাওয়া বন্ধ করুন। এমনকি ঘি, মাখনের মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাটও কম খান। তাহলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।
পাতে থাকুক ফাইবার রিচ খাবার: কোলেস্টেরলকে বশে আনতে চাইলে ডায়েটে রাখুন আটার রুটি, ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, ডালিয়া বা ওটসের মতো খাবার। সেই সঙ্গে শাক, সবজি এবং ফলের উপরও রাখতে পারেন ভরসা। কারণ, এসব খাবার ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আঁতুড়ঘর। যে কারণে এগুলো খেলেই কোলেস্টেরল কমে। নিম্মমুখী হয় সুগার। তাই তো বিশেষজ্ঞরা ডায়েটে এসব খাবারকে জায়গা করে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম মাস্ট: সারাদিন শুয়ে, বসে থাকলে কোলেস্টেরল কমবে না। বরং এই সমস্যাকে বশে আনতে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এক্ষেত্রে দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম মাস্ট। এই সময়টুকু জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে পারেন। কিংবা বাড়িতে করতে পারেন ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ। এসবে অনীহা থাকলে শুধু হাঁটুন, সাইকেল চালান বা সাঁতার কাটুন। তাতেই শরীর দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে উঠবে।