ঢাকা ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ক্রিকেট বিশ্ব ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক

ক্রিকেট বিশ্ব ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক

  • আপডেট সময় : ০২:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩
  • ১২৯ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : চলতি বিশ^কাপ ক্রিকেটে ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে গত সোমবার (৬ নভেম্বর) সাকিব আল হাসানের বলে আউট হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। নতুন ব্যাটার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজ। এ সময় তিনি যে হেলমেট নিয়ে মাঠে নামছিলেন, তাতে ত্রুটি দেখা দেয়। পরে নতুন হেলমেট আনতে বলেন ম্যাথিউজ। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের আইনে বরাদ্দ দুই মিনিট পার হয়ে যাওয়ায় সাকিব বিষয়টি আম্পায়ারকে জানান। পরে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। এতেই ক্রিকেটমহলে তৈরি হয় নানা সমালোচনা। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজের আউটকে (টাইমড আউট) বিতর্কিত বলে ক্রিকেটমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘটে যাওয়া ‘টাইমড আউট’ নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত ক্রিকেট বিশ্ব। কেউ সাকিব আল হাসানের নেওয়া আপিলের সিদ্ধান্তকে ‘ক্রিকেট স্পিরিটে’র তীরে বিদ্ধ করছেন। কেউবা এমসিসির আইন দেখিয়ে দাঁড়াচ্ছেন সাকিবের পক্ষে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা তাদের মতামত জানাচ্ছেন নিজস্ব ওয়াল ও মিডিয়ায়। তারই কিছু এখানে তুলে ধরা হলো।
সাকিব সঠিক কাজ করেছে, এটি ম্যাথিউজের ভুল: মাইকেল ভন ও সাইমন ডুল: অনেকেই বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করে বলেছেন, ম্যাথিউজের আউট দেওয়া একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের এটি করা উচিত হয়নি। তবে সাকিবের এমন সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’র ম্যাচপরবর্তী আলোচনায় টাইমড আউট নিয়ে আইনে কী বলা হয়েছে তা নিয়ে ভনকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার মন্তব্য কী, সেটি দিয়ে শুরু করা জরুরী নয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হলে ক্রিকেটীয় চেতনাকে বুঝতে হবে।’ ভন বলেন, ‘৫০ ওভারের ক্রিকেটে ড্রেসিংরুমের ডাগআউট থেকে এসে প্রথম বল মোকাবিলার জন্য আপনাকে দুুই মিনিট দেওয়া হয়। অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজ এখানে আউট হয়েছে। একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে ম্যাথিউজের এটি মাথায় রাখা দরকার ছিল যে, আমি আউট হয়ে যেতে পারি। প্রথম বল মোকাবেলার আগে তার (হেলমেট) স্ট্র্যাপ ছিড়ে যায়। এটা ঘটতেই পারে। তার তার আরও স্মার্ট হওয়া দরকার ছিল।’ ‘সে সাকিবকে মোকাবেলা করছিল। যে কিনা বাঁহাতি স্পিনার। এতে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার স্মার্ট চিন্তা করার দরকার ছিল। সে প্রথম বলটি মোকাবেলা করতো। তারপর স্ট্র্যাপ পরিবর্তন করতে পারতো। তাহলে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু সে এটি না করে হেঁটে গেলো।’ ভন আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, এটি সত্য, সাকিবকে অনেক সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বলা হচ্ছে, সে স্পিরিট অব গেম নষ্ট করেছে, এটি খুব অসম্মানজনক। কিন্তু আমি মনে করি, সে সঠিক কাজ করেছে। কারণ এটি খেলার নিয়মের মধ্যেই পড়ে।’
‘অনেক অধিনায়ক হয়তো (এই পরিস্থিতিতে) বলতে পারে, ঠিক আছে সমস্যা নেই। তবে সাকিব তার জায়গা থেকে সঠিক কাজ করেছে। কারণ এটি আইনে আছে। তাই ম্যাথিউজের বোঝা উচিত, এটি আমার ভুল। এখানে স্পিরিট অব গেমের কথা অহেতুক। আম্পায়ার সঠিক কাজ করেছে।’
নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল বলেন, ‘আমি ভনের সঙ্গে একমত। ম্যাথিউজ প্রথম বলটি খেলে নিতে পারতো। এটি ম্যাচ অ্যাওয়ারনেসের ব্যাপার। সে তো নতুন খেলোয়াড় নয়। সে তো প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলছে না। সে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক বা আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বলতে পারতো- আমি কি সময় নিতে পারি? যদি না দিতো, তবে সে প্রথম বল খেলে নিতো। আমার মনে হয়, এটি বড় ধরনের ভুল। এখানে স্পিরিট অব ক্রিকেটের কথা আসে না।’ বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে এরপর ভন বলেন, ‘সে (ম্যাথিউজ) সময় নষ্ট করছিল। ম্যাচের সময় যাচ্ছিল। হেলমেট পাল্টাতে কয়েক মিনিট চলে গেলে কে ক্ষতিগ্রস্ত হতো? বাংলাদেশ। কারণ ওভার রেটের একটি ব্যাপার আছে। ম্যাথিউজের জন্য এই আউটটি দুঃখজনক, তবে আমি অধিনায়ক হলেও তা-ই করতাম।’
পাল্টাপাল্টি মত হার্শা-আফ্রিদির: ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে সাকিবের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সাকিবের আপিল করার অধিকার রয়েছে, সে কী করবে না করবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আমরা কেউ না। ম্যাথিউস ও শ্রীলঙ্কার ভক্তরা হতাশ হতে পারে, রাগ করতে পারে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সে আউট হয়েছে।’
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার আফ্রিদি বলেন, ‘বাংলাদেশ কি করেছে বুঝতে পারছি না। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস তার ক্রিজে ছিলেন এবং তিনি ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। এটি একটি সরঞ্জামের সমস্যা এবং সাকিব আল হাসানের এখানে স্পোর্টসম্যানশিপ দেখানো উচিত ছিল। এমনটা হওয়া উচিৎ হয়নি।’
‘এটি ক্রিকেট, তামাশা নয়’ বললেন হরভজন: বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজের আউটের (টাইমড আউট) জন্য আম্পায়ারকে দায়ী করলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং। সাবেক এই স্পিনারের মতে, আম্পায়ারদেরকে এখানে আইনের চেয়ে সাধারণ জ্ঞানকে কাজে লাগানো উচিত ছিল। গত সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন হরভজন। ম্যাচে বিতর্কিত ঘটনার জন্য আম্পায়াররা দায় এড়াতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন ভারতের সাবেক দাপুটে স্পিনার। ভিডিও বার্তায় হরভজন বলেন, ‘ম্যাথিউজ সঠিক সময়ে এসেছিলেন এবং প্রথম বল মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। যখন তিনি হেলমেট এডজাস্ট করছিলেন তখন বুঝতে পারেন যে, হুকটি ভেঙে গেছে। এটা স্পষ্ট যে, তিনি হেলমেট পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। নতুন আরেকটি হেলমেট আনতে বলেছিলেন। যখন হেলমেটটি আনা হয় তখন সাকিব আবেদন করেন এবং আম্পায়াররা তার কথাই শুনেন।’
‘আম্পায়াররা জানতেন যে, ম্যাথিউজের হেলমেট ভেঙে গেছে। তিনি কি ভাঙা হেলমেট নিয়ে খেলবে? তিনি যদি হেলমেট ছাড়া ব্যাটিং করতেন এবং বল তাকে আঘাত করতো, তখন মানুষ প্রশ্ন তুলতো, কেন তিনি হেলমেট পরিবর্তন করেননি। তাকে আউট দেওয়া হয়েছিল বলে অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয় সামনে চলে এসেছে। এটা ক্রিকেট, তামাশা নয়। কুয়াশা এবং খেলোয়াড়দের পড়ে যাওয়ার নাটকের মতো অন্যান্য ছোটখাটো বিষয়ে অনেক সময় দেওয়া হয়’- যোগ করেন হরভজন। হরভজন আরও বলেন, ‘আম্পায়ারদের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। নট আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া উচিত ছিল। এটা নিয়ম অনুযায়ী হতে পারে। কিন্তু এটা কি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? আমি এমনটি মনে করি না। অন্য কোনো অধিনায়ক এই ইস্যুতে একজন ব্যাটারকে আউট করতে রাজি হবেন বলে আমি মনে করি না। নিয়মগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। এই বিতর্কের জন্য আম্পায়াররা দায়ী।’
৯ বছর আগে ম্যাথিউসের আবেগ কোথায় ছিল: রুবেল: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাইমড আউট সিদ্ধান্ত নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে জোর আলোচনা চলছে। নিজের মন্তব্য নিয়ে এবার সতীর্থদের পাশে এসে দাঁড়ালেন দলের বাইরে থাকা পেসার রুবেল। ম্যাচে সাকিবের আপিলে কোনো বল না খেলেই ফিরে যেতে হয় ম্যাথিউসকে। সে কারণে নিয়ম থাকলেও সবাই ক্রিকেট স্পিরিট ঠিক না রাখা নিয়ে আঙুল তুলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের দিকে। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে ম্যাচ শেষে দেওয়া সাকিবের মন্তব্য শুরুতে তুলে ধরেন রুবেল, ‘আমি জানিনা ঠিক করেছি নাকি ভুল। আমি যা করেছি দলের প্রয়োজনে করেছি, অ্যাম্পায়ার আমার কাছে জিজ্ঞাসা করেছে আমি সিরিয়াস কিনা, আমি এটাও জানি এটা নিয়ে বিতর্ক থাকবে।’ পরবর্তীতে ম্যাথিউসের ৯ বছর আগের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রুবেল, ‘ম্যাথিউস আপনি একজন প্রফেশনাল ক্রিকেটার। ৯ বছর আগে আপনি যখন জস বাটলারকে একটি বিতর্কিত আউট করেছিলেন, তখন আপনার আবেগ কোথায় ছিল। কাউকে না কাউকে পথ দেখাতে হবে তো, গ্রেট ব্রাদার।’ রুবেল যে ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তা হলোÑ২০১৪ সালের ৩ জুনে শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ম্যাচে হওয়া একটি মানকাডিং আউট। ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যামে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে জস বাটলারকে মানকাডিং করেন লঙ্কান স্পিনার সচিত্রা সেনানায়েকে। মানকাডিং বিতর্কের ম্যাচটি জিতে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজও নিজেদের করে নেয় লঙ্কানরা। ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিলেন, ক্রিকেটের নিয়ম মেনেই এটি (মানকাডিং) করা হয়েছে।
আমি হলে ম্যাথিউজের জায়গায় সতর্ক থাকতাম: সাকিব: সোমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো টাইমড আউটের ঘটনার পর তীব্র সমালোচনার স্বীকার হচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই নিয়ে সাকিব গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে যুদ্ধ এসেছি, এখানে আমাদের জিততেই হবে। ম্যাথিউজ আমাকে রিকুয়েস্ট করেছিল আমি বুঝিয়ে বলেছি যে আমার কিছু করার নেই।’
সাকিবের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য বিস্তর সমালোচনা করেছেন ম্যাথিউজ। ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সাকিব আল হাসানের কাছে আমি অনুরোধ করেছিলাম সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতে, সে করেনি। অন্য কোন দেশ হলে এমনটা করতো না। এটা সাকিব ও বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। যদি ওরা এভাবেই খেলতে চায় এবং এত নিচে নামে, আমার মনে হয় ওদের কোথাও একটা বড় ঝামেলা আছে।’
ম্যাচ শেষে সবার আগে গণমাধ্যমে হাজির হন সাকিব। সেখানে ম্যাথিউজের আউটের প্রশ্নটাই ছিল সবার আগে। পুরো সংবাদ সম্মেলন জুড়েই ছিল এসব প্রশ্ন। সাকিবও সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছেন। ম্যাথিউজকে আউট করে কোনও দুঃখ প্রকাশ করার ইচ্ছে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সাকিব বলেছেন, ‘কোনও দুঃখ নেই।’ ক্রিকেটের স্পিরিট নিয়ে জানতে চাইলে সোজাসাপ্টা বলেছেন, ‘তাহলে আইসিসির উচিত আইনটা দেখা এবং নিয়ম পরিবর্তন করা।’
ম্যাথিউজের জায়গায় আপনি থাকলে কী করতেন সেই প্রশ্ন সাকিব বলেছেন, ‘আমি হলে সতর্ক থাকতাম, যেন এটা আমার সঙ্গে না হয়।’ আম্পায়ার ম্যাথিউজকে আউট দেওয়ার পর সাকিবের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। মাঠে দুজনের ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে সেই কথাও বললেন সাকিব, ‘‘আমরা দুজন দুজনের সঙ্গে ২০০৬ সাল থেকে খেলছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও প্রচুর খেলেছি। আমি তাকে খুব ভালোভাবে চিনি। সেও আমাকে খুব ভালোভাবে চেনে। সে আমাকে এসে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি আবেদন তুলে নেবো কিনা? আমি জানিয়েছি, ‘আমি তোমার পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। এটা আনফরচুনেট। কিন্তু আমি চাই না।’’
এভাবে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে সোমবার ম্যাচের সময় থেকে সরব সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা। বিষয়টি ম্যাচের মাঝেই পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন চতুর্থ আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক। যদিও পরে তার হিসাব ভুল ছিল বলে দাবি করেছেন ম্যাথিউস। তিনি দুটি ছবি দিয়ে দুই মিনিট শেষ হওয়ার আগেই ক্রিজে ব্যাট করতে প্রস্তুত ছিলেন বলে দাবি করেছেন। এরপর বিষয়টি কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়!

 

ৃো

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ক্রিকেট বিশ্ব ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক

ক্রিকেট বিশ্ব ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক

আপডেট সময় : ০২:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক : চলতি বিশ^কাপ ক্রিকেটে ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে গত সোমবার (৬ নভেম্বর) সাকিব আল হাসানের বলে আউট হন সাদিরা সামারাবিক্রমা। নতুন ব্যাটার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজ। এ সময় তিনি যে হেলমেট নিয়ে মাঠে নামছিলেন, তাতে ত্রুটি দেখা দেয়। পরে নতুন হেলমেট আনতে বলেন ম্যাথিউজ। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের আইনে বরাদ্দ দুই মিনিট পার হয়ে যাওয়ায় সাকিব বিষয়টি আম্পায়ারকে জানান। পরে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। এতেই ক্রিকেটমহলে তৈরি হয় নানা সমালোচনা। বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজের আউটকে (টাইমড আউট) বিতর্কিত বলে ক্রিকেটমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঘটে যাওয়া ‘টাইমড আউট’ নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত ক্রিকেট বিশ্ব। কেউ সাকিব আল হাসানের নেওয়া আপিলের সিদ্ধান্তকে ‘ক্রিকেট স্পিরিটে’র তীরে বিদ্ধ করছেন। কেউবা এমসিসির আইন দেখিয়ে দাঁড়াচ্ছেন সাকিবের পক্ষে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা তাদের মতামত জানাচ্ছেন নিজস্ব ওয়াল ও মিডিয়ায়। তারই কিছু এখানে তুলে ধরা হলো।
সাকিব সঠিক কাজ করেছে, এটি ম্যাথিউজের ভুল: মাইকেল ভন ও সাইমন ডুল: অনেকেই বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সমালোচনা করে বলেছেন, ম্যাথিউজের আউট দেওয়া একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের এটি করা উচিত হয়নি। তবে সাকিবের এমন সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’র ম্যাচপরবর্তী আলোচনায় টাইমড আউট নিয়ে আইনে কী বলা হয়েছে তা নিয়ে ভনকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার মন্তব্য কী, সেটি দিয়ে শুরু করা জরুরী নয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হলে ক্রিকেটীয় চেতনাকে বুঝতে হবে।’ ভন বলেন, ‘৫০ ওভারের ক্রিকেটে ড্রেসিংরুমের ডাগআউট থেকে এসে প্রথম বল মোকাবিলার জন্য আপনাকে দুুই মিনিট দেওয়া হয়। অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজ এখানে আউট হয়েছে। একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হিসেবে ম্যাথিউজের এটি মাথায় রাখা দরকার ছিল যে, আমি আউট হয়ে যেতে পারি। প্রথম বল মোকাবেলার আগে তার (হেলমেট) স্ট্র্যাপ ছিড়ে যায়। এটা ঘটতেই পারে। তার তার আরও স্মার্ট হওয়া দরকার ছিল।’ ‘সে সাকিবকে মোকাবেলা করছিল। যে কিনা বাঁহাতি স্পিনার। এতে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার স্মার্ট চিন্তা করার দরকার ছিল। সে প্রথম বলটি মোকাবেলা করতো। তারপর স্ট্র্যাপ পরিবর্তন করতে পারতো। তাহলে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু সে এটি না করে হেঁটে গেলো।’ ভন আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, এটি সত্য, সাকিবকে অনেক সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বলা হচ্ছে, সে স্পিরিট অব গেম নষ্ট করেছে, এটি খুব অসম্মানজনক। কিন্তু আমি মনে করি, সে সঠিক কাজ করেছে। কারণ এটি খেলার নিয়মের মধ্যেই পড়ে।’
‘অনেক অধিনায়ক হয়তো (এই পরিস্থিতিতে) বলতে পারে, ঠিক আছে সমস্যা নেই। তবে সাকিব তার জায়গা থেকে সঠিক কাজ করেছে। কারণ এটি আইনে আছে। তাই ম্যাথিউজের বোঝা উচিত, এটি আমার ভুল। এখানে স্পিরিট অব গেমের কথা অহেতুক। আম্পায়ার সঠিক কাজ করেছে।’
নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল বলেন, ‘আমি ভনের সঙ্গে একমত। ম্যাথিউজ প্রথম বলটি খেলে নিতে পারতো। এটি ম্যাচ অ্যাওয়ারনেসের ব্যাপার। সে তো নতুন খেলোয়াড় নয়। সে তো প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলছে না। সে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক বা আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বলতে পারতো- আমি কি সময় নিতে পারি? যদি না দিতো, তবে সে প্রথম বল খেলে নিতো। আমার মনে হয়, এটি বড় ধরনের ভুল। এখানে স্পিরিট অব ক্রিকেটের কথা আসে না।’ বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে এরপর ভন বলেন, ‘সে (ম্যাথিউজ) সময় নষ্ট করছিল। ম্যাচের সময় যাচ্ছিল। হেলমেট পাল্টাতে কয়েক মিনিট চলে গেলে কে ক্ষতিগ্রস্ত হতো? বাংলাদেশ। কারণ ওভার রেটের একটি ব্যাপার আছে। ম্যাথিউজের জন্য এই আউটটি দুঃখজনক, তবে আমি অধিনায়ক হলেও তা-ই করতাম।’
পাল্টাপাল্টি মত হার্শা-আফ্রিদির: ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে সাকিবের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সাকিবের আপিল করার অধিকার রয়েছে, সে কী করবে না করবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আমরা কেউ না। ম্যাথিউস ও শ্রীলঙ্কার ভক্তরা হতাশ হতে পারে, রাগ করতে পারে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সে আউট হয়েছে।’
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার আফ্রিদি বলেন, ‘বাংলাদেশ কি করেছে বুঝতে পারছি না। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস তার ক্রিজে ছিলেন এবং তিনি ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। এটি একটি সরঞ্জামের সমস্যা এবং সাকিব আল হাসানের এখানে স্পোর্টসম্যানশিপ দেখানো উচিত ছিল। এমনটা হওয়া উচিৎ হয়নি।’
‘এটি ক্রিকেট, তামাশা নয়’ বললেন হরভজন: বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউজের আউটের (টাইমড আউট) জন্য আম্পায়ারকে দায়ী করলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং। সাবেক এই স্পিনারের মতে, আম্পায়ারদেরকে এখানে আইনের চেয়ে সাধারণ জ্ঞানকে কাজে লাগানো উচিত ছিল। গত সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন হরভজন। ম্যাচে বিতর্কিত ঘটনার জন্য আম্পায়াররা দায় এড়াতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন ভারতের সাবেক দাপুটে স্পিনার। ভিডিও বার্তায় হরভজন বলেন, ‘ম্যাথিউজ সঠিক সময়ে এসেছিলেন এবং প্রথম বল মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। যখন তিনি হেলমেট এডজাস্ট করছিলেন তখন বুঝতে পারেন যে, হুকটি ভেঙে গেছে। এটা স্পষ্ট যে, তিনি হেলমেট পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। নতুন আরেকটি হেলমেট আনতে বলেছিলেন। যখন হেলমেটটি আনা হয় তখন সাকিব আবেদন করেন এবং আম্পায়াররা তার কথাই শুনেন।’
‘আম্পায়াররা জানতেন যে, ম্যাথিউজের হেলমেট ভেঙে গেছে। তিনি কি ভাঙা হেলমেট নিয়ে খেলবে? তিনি যদি হেলমেট ছাড়া ব্যাটিং করতেন এবং বল তাকে আঘাত করতো, তখন মানুষ প্রশ্ন তুলতো, কেন তিনি হেলমেট পরিবর্তন করেননি। তাকে আউট দেওয়া হয়েছিল বলে অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয় সামনে চলে এসেছে। এটা ক্রিকেট, তামাশা নয়। কুয়াশা এবং খেলোয়াড়দের পড়ে যাওয়ার নাটকের মতো অন্যান্য ছোটখাটো বিষয়ে অনেক সময় দেওয়া হয়’- যোগ করেন হরভজন। হরভজন আরও বলেন, ‘আম্পায়ারদের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। নট আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া উচিত ছিল। এটা নিয়ম অনুযায়ী হতে পারে। কিন্তু এটা কি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? আমি এমনটি মনে করি না। অন্য কোনো অধিনায়ক এই ইস্যুতে একজন ব্যাটারকে আউট করতে রাজি হবেন বলে আমি মনে করি না। নিয়মগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। এই বিতর্কের জন্য আম্পায়াররা দায়ী।’
৯ বছর আগে ম্যাথিউসের আবেগ কোথায় ছিল: রুবেল: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাইমড আউট সিদ্ধান্ত নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে জোর আলোচনা চলছে। নিজের মন্তব্য নিয়ে এবার সতীর্থদের পাশে এসে দাঁড়ালেন দলের বাইরে থাকা পেসার রুবেল। ম্যাচে সাকিবের আপিলে কোনো বল না খেলেই ফিরে যেতে হয় ম্যাথিউসকে। সে কারণে নিয়ম থাকলেও সবাই ক্রিকেট স্পিরিট ঠিক না রাখা নিয়ে আঙুল তুলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের দিকে। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে ম্যাচ শেষে দেওয়া সাকিবের মন্তব্য শুরুতে তুলে ধরেন রুবেল, ‘আমি জানিনা ঠিক করেছি নাকি ভুল। আমি যা করেছি দলের প্রয়োজনে করেছি, অ্যাম্পায়ার আমার কাছে জিজ্ঞাসা করেছে আমি সিরিয়াস কিনা, আমি এটাও জানি এটা নিয়ে বিতর্ক থাকবে।’ পরবর্তীতে ম্যাথিউসের ৯ বছর আগের এক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রুবেল, ‘ম্যাথিউস আপনি একজন প্রফেশনাল ক্রিকেটার। ৯ বছর আগে আপনি যখন জস বাটলারকে একটি বিতর্কিত আউট করেছিলেন, তখন আপনার আবেগ কোথায় ছিল। কাউকে না কাউকে পথ দেখাতে হবে তো, গ্রেট ব্রাদার।’ রুবেল যে ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তা হলোÑ২০১৪ সালের ৩ জুনে শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ম্যাচে হওয়া একটি মানকাডিং আউট। ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যামে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে জস বাটলারকে মানকাডিং করেন লঙ্কান স্পিনার সচিত্রা সেনানায়েকে। মানকাডিং বিতর্কের ম্যাচটি জিতে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজও নিজেদের করে নেয় লঙ্কানরা। ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিলেন, ক্রিকেটের নিয়ম মেনেই এটি (মানকাডিং) করা হয়েছে।
আমি হলে ম্যাথিউজের জায়গায় সতর্ক থাকতাম: সাকিব: সোমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো টাইমড আউটের ঘটনার পর তীব্র সমালোচনার স্বীকার হচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই নিয়ে সাকিব গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে যুদ্ধ এসেছি, এখানে আমাদের জিততেই হবে। ম্যাথিউজ আমাকে রিকুয়েস্ট করেছিল আমি বুঝিয়ে বলেছি যে আমার কিছু করার নেই।’
সাকিবের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য বিস্তর সমালোচনা করেছেন ম্যাথিউজ। ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সাকিব আল হাসানের কাছে আমি অনুরোধ করেছিলাম সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতে, সে করেনি। অন্য কোন দেশ হলে এমনটা করতো না। এটা সাকিব ও বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। যদি ওরা এভাবেই খেলতে চায় এবং এত নিচে নামে, আমার মনে হয় ওদের কোথাও একটা বড় ঝামেলা আছে।’
ম্যাচ শেষে সবার আগে গণমাধ্যমে হাজির হন সাকিব। সেখানে ম্যাথিউজের আউটের প্রশ্নটাই ছিল সবার আগে। পুরো সংবাদ সম্মেলন জুড়েই ছিল এসব প্রশ্ন। সাকিবও সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছেন। ম্যাথিউজকে আউট করে কোনও দুঃখ প্রকাশ করার ইচ্ছে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সাকিব বলেছেন, ‘কোনও দুঃখ নেই।’ ক্রিকেটের স্পিরিট নিয়ে জানতে চাইলে সোজাসাপ্টা বলেছেন, ‘তাহলে আইসিসির উচিত আইনটা দেখা এবং নিয়ম পরিবর্তন করা।’
ম্যাথিউজের জায়গায় আপনি থাকলে কী করতেন সেই প্রশ্ন সাকিব বলেছেন, ‘আমি হলে সতর্ক থাকতাম, যেন এটা আমার সঙ্গে না হয়।’ আম্পায়ার ম্যাথিউজকে আউট দেওয়ার পর সাকিবের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। মাঠে দুজনের ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে সেই কথাও বললেন সাকিব, ‘‘আমরা দুজন দুজনের সঙ্গে ২০০৬ সাল থেকে খেলছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও প্রচুর খেলেছি। আমি তাকে খুব ভালোভাবে চিনি। সেও আমাকে খুব ভালোভাবে চেনে। সে আমাকে এসে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি আবেদন তুলে নেবো কিনা? আমি জানিয়েছি, ‘আমি তোমার পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। এটা আনফরচুনেট। কিন্তু আমি চাই না।’’
এভাবে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে সোমবার ম্যাচের সময় থেকে সরব সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা। বিষয়টি ম্যাচের মাঝেই পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন চতুর্থ আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক। যদিও পরে তার হিসাব ভুল ছিল বলে দাবি করেছেন ম্যাথিউস। তিনি দুটি ছবি দিয়ে দুই মিনিট শেষ হওয়ার আগেই ক্রিজে ব্যাট করতে প্রস্তুত ছিলেন বলে দাবি করেছেন। এরপর বিষয়টি কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়!

 

ৃো