নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ও তার সমমনারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা প্রকাশ্যে সাপোর্ট করেছে, এর মানে তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করছে। কাজেই এখন এটা পোলারাইজড পলিটিক্সের মধ্যেই পড়ে গেছে। এটার পলিটিক্যাল কালার আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে কারা কারা যুক্ত আছে, কোনও ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা সেটা আন্দোলনের গতিধারার মধ্যেই বোঝা যাবে। সময়ের পরিবর্তনে সবকিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোনও কিছুই লুকানো সম্ভব হবে না, সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কোনও আন্দোলনে রাজনৈতিক দল সমর্থন জানাতেই পারে, তার সমালোচনা কেন করছেনÑএমন প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত হয়, দেখান? এটা বিচারাধীন। কোনও রাজনৈতিক দল পারে না এইভাবে। এটা তো আদালতের রায়। কোটা আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, তারা যে আন্দোলনটা করছে সেই সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। সরকারই সেই আপিল করেছে। যে বিষয়টা আদালতের, সেই বিষয়টা নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা বা প্রতিবাদ করা এটা তো আইনসিদ্ধ নয়। আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আপিল করলাম, এখনও আদালত চূড়ান্ত রায় দেননি। এখানে আমরা কীভাবে ইন্টারফেয়ার করি?
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কিম মুখ থুবড়ে পড়বে কেন? এখানে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও আছে। আনুষ্ঠানিক বসা হয়তো হয়নি। সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। এখানে আমলা সুপিরিয়র না শিক্ষক সুপিরিয়র সে বিতর্কে আমরা যাবো না। যার যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে যেটা বাস্তবসম্মত আমরা সেটাই করতে চাই।
আগের কোটা আন্দোলনের ৩১ নেতা কিন্তু বিসিএসে উত্তীর্ণ হতে পারেনি: মেধাবী জনগোষ্ঠীই সরকারের প্রয়োজন, শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন তার মূল চালিকাশক্তি হল মেধাবী জনগোষ্ঠী। এছাড়া সরকার কোটা আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি আন্তরিক বলেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। এই মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শিক্ষিত, দক্ষ, স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রধান প্রয়োজন। তবে তিনি আরও বলেন, এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল সেখানকার প্রথম সারির ৩১ জন নেতা তারা কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এটার হিসাব আপনারা (সাংবাদিক) নিতে পারেন।
রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনদুর্ভোগ পরিহার করা দরকার: কোটাবিরোধী আন্দোলনে জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারের কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো আপিল করলাম। এখনও আদালত চূড়ান্ত রায় দেয়নি। এর মধ্যে আমরা কীভাবে হস্তক্ষেপ করি? আমর তো বলছি জনদুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করা উচিত। আদালতের রায় হোক তারপর দেখা যাবে। সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি বিচারাধীন, তা চূড়ান্ত হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমরা মনে করি দেশের উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে রায় দেবেন। আন্দোলন স্থগিত বা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি যা বক্তব্য রেখেছি এ থেকে বুঝে নেন। আমার যা বলার বলে দিয়েছি, ভাষাটা বুঝে নিন। তাহলেই হবে।