ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কালরাতে শহীদদের স্মরণের দিন

  • আপডেট সময় : ০২:০১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিকামী বাঙালির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সূচনা শুরু করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী, নিরপরাধ সেই মানুষদের ওপর সেই বিভীষিকার স্মরণে পালিত হচ্ছে গণহত্যা দিবস।
গতকাল শনিবার নানা আয়োজনে জাতি স্মরণ করে অগণিত সেই শহীদদের, যাদের আত্মত্যাগের পথ ধরে ৫২ বছর পর রূপ পেয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, “বাঙালির মুক্তি আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে কাপুরুষের দল সেদিন নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। এ গণহত্যায় শহীদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ। “এ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ত্রিশ লক্ষ বাঙালির আত্মত্যাগের মহান স্বীকৃতির পাশাপাশি তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে চরম প্রতিবাদের প্রতীক।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে কালরাতের গণহত্যা ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ অর্জন এবং দেশের ৫২ বছরের পথচলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাংলাদেশের নীতিতে ‘শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংসাকে’ লালন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।”
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির নীতি অনুসরণ করি। সকল প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আমি দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।”
গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি: একাত্তরের ওই রাতে নিহতদের স্মরণে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার রাত ১০টা ৩০মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা হয়। এছাড়া সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি: আলোচনা সভা, মানববন্ধনসহ ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে এক দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। এদিন দুপুর ২টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘কালোরাত্রী স্বরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা করে যুবলীগ। দিনটিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মৌলবাদী সংগঠন হিসেবে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার লার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কালরাতে শহীদদের স্মরণের দিন

আপডেট সময় : ০২:০১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে মুক্তিকামী বাঙালির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সূচনা শুরু করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী, নিরপরাধ সেই মানুষদের ওপর সেই বিভীষিকার স্মরণে পালিত হচ্ছে গণহত্যা দিবস।
গতকাল শনিবার নানা আয়োজনে জাতি স্মরণ করে অগণিত সেই শহীদদের, যাদের আত্মত্যাগের পথ ধরে ৫২ বছর পর রূপ পেয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, “বাঙালির মুক্তি আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে কাপুরুষের দল সেদিন নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর নির্বিচারে হামলা চালায়। এ গণহত্যায় শহীদ হন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অগণিত মানুষ। “এ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ত্রিশ লক্ষ বাঙালির আত্মত্যাগের মহান স্বীকৃতির পাশাপাশি তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে চরম প্রতিবাদের প্রতীক।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে কালরাতের গণহত্যা ও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ অর্জন এবং দেশের ৫২ বছরের পথচলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাংলাদেশের নীতিতে ‘শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংসাকে’ লালন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।”
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির নীতি অনুসরণ করি। সকল প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আমি দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাই।”
গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি: একাত্তরের ওই রাতে নিহতদের স্মরণে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার রাত ১০টা ৩০মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা হয়। এছাড়া সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি: আলোচনা সভা, মানববন্ধনসহ ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে এক দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। এদিন দুপুর ২টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শনিবার বেলা ১১টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘কালোরাত্রী স্বরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা করে যুবলীগ। দিনটিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মৌলবাদী সংগঠন হিসেবে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে।