ঢাকা ১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কমছে নদ-নদীর পানি, কমেনি ভোগান্তি

  • আপডেট সময় : ১২:০৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

দেশের খবর ডেস্ক: গাইবান্ধা, সিলেট ও জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এতে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে যমুনার পানি। তিস্তা, ঘাগট ও ব্রহ্মপুত্র সব নদ-নদীতেই কমছে পানি। সুরমা নদীর পানি একটি পয়েন্টে ও কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন বন্যার্তরা। জানাচ্ছেন প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারাঃ
জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে যমুনার পানি। খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন বন্যার্তরা। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল ১০টায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ও সরিষাবাড়ীর জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কিছুটা কমলেও দুর্গতদের দুর্ভোগ এখনও কমেনি। বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়ায় অনেক এলাকা নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্ধ রয়েছে ১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ২৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা জানান, বন্যার কারণে তলিয়ে গেছে ৮ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আউশ, রোপা-আমন বীজতলা, পাট, মরিচ, ভুট্টা, তিল ও নানা ধরনের শাকসবজি। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে জেলার কয়েক হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়ক ডুবে যাওয়ায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় খাবার ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দুর্গতদের জন্য ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল, ২২ লাখ টাকা ও সাড়ে ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দুর্ভোগ বানভাসিদের
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সব নদ-নদীতেই কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। ফলে বন্যা কবলিত নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা ফিরছে বাড়িতে। তবে নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর থেকে পানি নেমে যেতে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে পানি কমলেও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এখনো রয়েছে। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গেল চারদিনের ব্যবধানে জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৭৬ সেন্টিমিটার কমে রোববার দুপুর ১২টায় ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে ঘাঘট নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার কমে জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গেল ৫ জুন পর্যন্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি সর্বোচ্চ ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা কবলিত হয়। চলমান বন্যায় জেলার চার উপজেলার ২৯ ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তলিয়ে যায় সাড়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ ধান, শাকসবজি ও আমন বীজতলা। সরেজমিনে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদী তীরবর্তী এলাকার রাস্তা-ঘাট থেকে পানি নেমে গেছে। পানি ওঠা বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর ও উঠান থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে পানি নেমে গেলেও অনেক আঙ্গিনায় কাঁদা দেখা গেছে। ফলে তারা এখন চলাফেরায় ভোগান্তিতে রয়েছেন। তবে একেবারেই নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরগুলোতে পানি রয়েছে। পানি কমলেও তাদের ভোগান্তি কমেনি। বন্যার পানি কমলেও হতাশা আর দুশ্চিন্তায় পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার পরিবারগুলো। চরাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক যাদের জীবন-জীবিকা চরম বেকায়দায় পড়েছেন তারা। পানি নেমে গেলেও বন্যার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন দিনমজুর এই পরিবারগুলো। বন্যাকবলিত এসব মানুষের জন্য বরাদ্দ হওয়া ত্রাণও জোটেনি বলে অভিযোগ ছিল এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষের। গোঘাট এলাকার ভুট্টু মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে পাঁচ দিন ধরে বন্যার পানি ছিল। গত দুই-তিন দিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমলো আমাদের দুর্ভোগ কিন্তু কমেনি। তিনি আরও বলেন, বন্যা এসে কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। আয় নাই অনেক কষ্ট করে দিন যাচ্ছে। পাঁচদিন পানিতে ডুবে থাকলাম কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান খোঁজ নেয়নি। একই এলাকার সাহেরা বেগম বলেন, বেশিরভাগ বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও আমার বাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে যায়নি। পানিতে থাকতে থাকতে পায়ে ঘা ধরেছে। আমরা গরিব মানুষ কোনো ত্রাণ পায়নি। কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, চারদিন থেকে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে এখনো চরাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি ঘরে পানি রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৬৫ প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তা বিতরণ করা হয়েছে। এনজিওরাও সহযোগিতা করেছে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, চলমান বন্যায় সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৯টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। গত চারদিন থেকে পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আশা করা যায় আগামী সপ্তাহেই বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাবে।
সিলেটে বন্যার পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা
সিলেট সংবাদদাতা জানান, বন্যার মধ্যেই সিলেটে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। এর আগে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে পৌঁছান। কিন্তু সিলেটের অনেক কেন্দ্রে এখনও পানি মাড়িয়ে পরীক্ষায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের সুবিধায় কাদামাটিতে বালি ফেলে প্রবেশদ্বারে খানিকটা সুবিধা করার চেষ্টা করেছেন।
সরেজমিনে বন্যা কবলিত সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি ডিগ্রি কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজটির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে অভ্যন্তরে এখনো বন্যার পানিতে রাস্তা ও আঙিনা ডুবে আছে। শিক্ষার্থীদের প্রবেশে রাস্তায় ফেলা হয়েছে বালির বস্তা। সেই বালির বস্তার ওপর দিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। একইভাবে বোর্ডের অনেক কেন্দ্রে এভাবে বন্যার পানি মাড়িয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন পরীক্ষার্থীরা। তবে বন্যার কারণে কিছু কিছু কেন্দ্র স্থানান্তর করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, কলেজের প্রবেশ পথে পানি থাকলেও পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রাস্তায় বালুর বস্তা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে পানি রয়েছে। তবে সেগুলোতে পরীক্ষার হল রাখা হবে না। এছাড়া বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থাকলেও সেখানে পানি থাকায় এ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা বালাগঞ্জ সরকারি কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াতে কেন্দ্রের আশপাশে কোনো পানি নেই। এটা বিবেচনা করেই মঙ্গলবার (৯ জুলাই) থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, বোর্ডের অধীনে পুরো বিভাগের ৩০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮২ হাজার ৭৯৫ পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় বসেছেন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৫৯০ জন এবং ছাত্রী ৪৯ হাজার ২০৫ জন। বোর্ডের অধীনে এবার সিলেট জেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৫ হাজার ৬২০ জন, সুনামগঞ্জে ১৫ হাজার ৬৬৪ জন, মৌলভীবাজারে ১৬ হাজার ৫০৮ জন ও হবিগঞ্জে ১৫ হাজার তিনজন পরীক্ষার্থী আছেন। বিভাগের চার জেলায় মোট ৮৭টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ৩৩টি, সুনামগঞ্জে ২২টি, মৌলভীবাজারে ১৪টি ও হবিগঞ্জে ১৮টি। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি একটি পয়েন্টে ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সকাল ৯টায় সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ৪০ সেন্টিমিটারে। আর জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে একই সময়ে ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় ছিল ৪৯ সেন্টিমিটারে এবং কুশিয়ারা ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যায় ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বিভাগে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সবশেষ ১৭ জুন শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সিলেটে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়। এতে সিলেট নগরীর ২৪টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ১৩টি উপজেলা কমবেশি প্লাবিত হয়। এ অবস্থায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট বিভাগের এইচএসসি, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে।

 

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

কমছে নদ-নদীর পানি, কমেনি ভোগান্তি

আপডেট সময় : ১২:০৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

দেশের খবর ডেস্ক: গাইবান্ধা, সিলেট ও জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এতে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে যমুনার পানি। তিস্তা, ঘাগট ও ব্রহ্মপুত্র সব নদ-নদীতেই কমছে পানি। সুরমা নদীর পানি একটি পয়েন্টে ও কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন বন্যার্তরা। জানাচ্ছেন প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারাঃ
জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখনও বিপদসীমার ওপরে রয়েছে যমুনার পানি। খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন বন্যার্তরা। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল ১০টায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ও সরিষাবাড়ীর জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কিছুটা কমলেও দুর্গতদের দুর্ভোগ এখনও কমেনি। বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়ায় অনেক এলাকা নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্ধ রয়েছে ১৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ২৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা জানান, বন্যার কারণে তলিয়ে গেছে ৮ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আউশ, রোপা-আমন বীজতলা, পাট, মরিচ, ভুট্টা, তিল ও নানা ধরনের শাকসবজি। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে জেলার কয়েক হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানীয় ও আঞ্চলিক সড়ক ডুবে যাওয়ায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় খাবার ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দুর্গতদের জন্য ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল, ২২ লাখ টাকা ও সাড়ে ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দুর্ভোগ বানভাসিদের
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সব নদ-নদীতেই কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। ফলে বন্যা কবলিত নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা ফিরছে বাড়িতে। তবে নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘর থেকে পানি নেমে যেতে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে পানি কমলেও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ এখনো রয়েছে। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গেল চারদিনের ব্যবধানে জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৭৬ সেন্টিমিটার কমে রোববার দুপুর ১২টায় ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে ঘাঘট নদীর পানি ৪০ সেন্টিমিটার কমে জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গেল ৫ জুন পর্যন্ত জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ৮৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি সর্বোচ্চ ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা বন্যা কবলিত হয়। চলমান বন্যায় জেলার চার উপজেলার ২৯ ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তলিয়ে যায় সাড়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমির পাট, আউশ ধান, শাকসবজি ও আমন বীজতলা। সরেজমিনে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদী তীরবর্তী এলাকার রাস্তা-ঘাট থেকে পানি নেমে গেছে। পানি ওঠা বেশিরভাগ বাড়ি-ঘর ও উঠান থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে পানি নেমে গেলেও অনেক আঙ্গিনায় কাঁদা দেখা গেছে। ফলে তারা এখন চলাফেরায় ভোগান্তিতে রয়েছেন। তবে একেবারেই নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরগুলোতে পানি রয়েছে। পানি কমলেও তাদের ভোগান্তি কমেনি। বন্যার পানি কমলেও হতাশা আর দুশ্চিন্তায় পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার পরিবারগুলো। চরাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক যাদের জীবন-জীবিকা চরম বেকায়দায় পড়েছেন তারা। পানি নেমে গেলেও বন্যার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন দিনমজুর এই পরিবারগুলো। বন্যাকবলিত এসব মানুষের জন্য বরাদ্দ হওয়া ত্রাণও জোটেনি বলে অভিযোগ ছিল এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষের। গোঘাট এলাকার ভুট্টু মিয়া বলেন, আমার বাড়িতে পাঁচ দিন ধরে বন্যার পানি ছিল। গত দুই-তিন দিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পানি কমলো আমাদের দুর্ভোগ কিন্তু কমেনি। তিনি আরও বলেন, বন্যা এসে কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। আয় নাই অনেক কষ্ট করে দিন যাচ্ছে। পাঁচদিন পানিতে ডুবে থাকলাম কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান খোঁজ নেয়নি। একই এলাকার সাহেরা বেগম বলেন, বেশিরভাগ বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও আমার বাড়ি থেকে এখনো পানি নেমে যায়নি। পানিতে থাকতে থাকতে পায়ে ঘা ধরেছে। আমরা গরিব মানুষ কোনো ত্রাণ পায়নি। কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, চারদিন থেকে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে এখনো চরাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি ঘরে পানি রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৬৫ প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ৯ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তা বিতরণ করা হয়েছে। এনজিওরাও সহযোগিতা করেছে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, চলমান বন্যায় সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৯টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। গত চারদিন থেকে পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আশা করা যায় আগামী সপ্তাহেই বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাবে।
সিলেটে বন্যার পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা
সিলেট সংবাদদাতা জানান, বন্যার মধ্যেই সিলেটে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। এর আগে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে পৌঁছান। কিন্তু সিলেটের অনেক কেন্দ্রে এখনও পানি মাড়িয়ে পরীক্ষায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের সুবিধায় কাদামাটিতে বালি ফেলে প্রবেশদ্বারে খানিকটা সুবিধা করার চেষ্টা করেছেন।
সরেজমিনে বন্যা কবলিত সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি ডিগ্রি কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজটির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে অভ্যন্তরে এখনো বন্যার পানিতে রাস্তা ও আঙিনা ডুবে আছে। শিক্ষার্থীদের প্রবেশে রাস্তায় ফেলা হয়েছে বালির বস্তা। সেই বালির বস্তার ওপর দিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। একইভাবে বোর্ডের অনেক কেন্দ্রে এভাবে বন্যার পানি মাড়িয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন পরীক্ষার্থীরা। তবে বন্যার কারণে কিছু কিছু কেন্দ্র স্থানান্তর করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, কলেজের প্রবেশ পথে পানি থাকলেও পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে রাস্তায় বালুর বস্তা দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে পানি রয়েছে। তবে সেগুলোতে পরীক্ষার হল রাখা হবে না। এছাড়া বালাগঞ্জ ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থাকলেও সেখানে পানি থাকায় এ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা বালাগঞ্জ সরকারি কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াতে কেন্দ্রের আশপাশে কোনো পানি নেই। এটা বিবেচনা করেই মঙ্গলবার (৯ জুলাই) থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, বোর্ডের অধীনে পুরো বিভাগের ৩০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮২ হাজার ৭৯৫ পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় বসেছেন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৫৯০ জন এবং ছাত্রী ৪৯ হাজার ২০৫ জন। বোর্ডের অধীনে এবার সিলেট জেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৫ হাজার ৬২০ জন, সুনামগঞ্জে ১৫ হাজার ৬৬৪ জন, মৌলভীবাজারে ১৬ হাজার ৫০৮ জন ও হবিগঞ্জে ১৫ হাজার তিনজন পরীক্ষার্থী আছেন। বিভাগের চার জেলায় মোট ৮৭টি পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে ৩৩টি, সুনামগঞ্জে ২২টি, মৌলভীবাজারে ১৪টি ও হবিগঞ্জে ১৮টি। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি একটি পয়েন্টে ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সকাল ৯টায় সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ৪০ সেন্টিমিটারে। আর জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে একই সময়ে ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় ছিল ৪৯ সেন্টিমিটারে এবং কুশিয়ারা ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যায় ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বিভাগে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সবশেষ ১৭ জুন শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সিলেটে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়। এতে সিলেট নগরীর ২৪টি ওয়ার্ডসহ ১৩টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ১৩টি উপজেলা কমবেশি প্লাবিত হয়। এ অবস্থায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট বিভাগের এইচএসসি, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে।