আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সদ্য সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে মামলা হয়েছে। আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হিরো আলমের (বাদী) আইনজীবী মোস্তফা শাকিল। তিনি বলেন, ‘বিচারক সাদিয়া আফসানা অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।’
ওবায়দুল কাদের ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ মামলার অন্যতম কয়েকজন আসামি হলেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সাবেক এমপি জেলা জাসদ সভাপতি রেজাউল করিম তানসেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন রানা প্রমুখ।
এজাহারে হিরো আলম উল্লেখ করেন, তিনি গত ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। সংসদীয় আসনের নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুন্দারহাট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে তার ওপর হামলা হয়। এ ছাড়া গত ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর নন্দীগ্রামে মুরাদপুর বাজারে তার ওপর হামলা হয়েছিল। তিনি নির্বাচিত হলেও তাকে পরাজিত করা হয়। এসব অপরাধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল, সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানাসহ ৩৯ জন জড়িত ছিলেন।
এদিকে মামলা করার পর হিরো আলম বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিচে এলে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। তাকে কিলঘুষি মারার পর ধাওয়া করে আদালত চত্বরে মারধর করা হয়। পরে তাকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। হামলাকারীরা তারেক রহমানকে কটূক্তির অভিযোগ ও বিএনপি নেতা রিজভীর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ তুলে তাকে মারপিট করেন। প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটলেও উপস্থিত পুলিশ ও জনতা তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেননি। পরে তিনি বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন। হিরো আলম এ হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বগুড়া আদালতের আইনজীবী সহকারী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রনি সরকার হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। রনি সরকার সাংবাদিকদের কাছে এ হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে কটূক্তি ও যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হিরো আলম। এ কারণে তাকে আদালত চত্বরে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে।’ অভিযোগ প্রসঙ্গে হিরো আলম দাবি করেন, তিনি কখনও তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেননি। ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ পরিবারসহ তাকে রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করেছিলেন। হিরো আলম বলেন, ‘হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
আজেকের প্রত্যাশা/কেএমএএ