নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বাবা-মাকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সংঘটিত এই হত্যায় জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ। তবে রহস্যজনক এই হত্যাকাণ্ডের কোনো কূলকিনারা পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার রাতের কোনো এক সময় যাত্রাবাড়ীর পশ্চিম মোমেনবাগের একটি বাসায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার শিকার ব্যক্তিরা হলেন- শফিকুর রহমান ও তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন। যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ জানিয়েছে, ওই দম্পতির মরদেহ পৃথকভাবে দুই ফ্লোরে পাওয়া গেছে। হত্যার রহস্য এখনো সন্দেহজনক। খুনিরা বাসার কোনো কিছু নিয়ে যায়নি। পূর্ব কোনো শক্রতা বা কী কারণে এই হত্যা তা জানতে পুলিশের বিভিন্ন দল কাজ করছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ পশ্চিম মমিনবাগের ১৭৫ নম্বর বাসায় গিয়ে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। তারা দীর্ঘদিন ওই বাসায় বসবাস করতেন। এই দম্পতির এক ছেলে পুলিশের এসআই। নিহতদের দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে গতরাতের যেকোনো সময় বাসায় ঢুকে তাদের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে।
জানা গেছে, নিহত শফিকুর রহমান জনতা ব্যাংকে চাকরি করতেন। দুই বছর আগে অবসর নিয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে আল আমিন ইমন পুলিশের এসআই। বর্তমানে তিনি এসবিতে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাপাড়া আড়াবাড়ি বটতলা কফিল উদ্দিন ভুঁইয়া সড়কের ১৭৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের ৪র্থ তলায় নিজ বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকতেন এই দম্পতি। নিহত শফিকুর রহমান সকালে মসজিদে ফজর নামাজ পড়তেন। আজও হয়ত তিনি নামাজ পড়তে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তার মরদেহ বাড়ির নিচতলায় এবং তার স্ত্রীর মরদেহ তৃতীয় তলায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। তাদের দুজনের গলা কাটা ছিল। এই ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছে। জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছে ডিবি পুলিশ ও র্যাব। ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে চতুর্থতলা ভবনের নিচতলায় শফিকুর রহমান ও তৃতীয় তলায় তার স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখানে যদি ডাকাতি বা চুরির ঘটনা হতো তা হলে নিহত মহিলার গলায় স্বর্ণের চেইন ও মোবাইল ফোন নিয়ে যেত। কিন্তু কিছুই নেওয়া হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত দম্পতির ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা ইমন সস্ত্রীক একই বাসায় বসবাস করতেন। কিন্তু বুধবার ইমন দাদাবাড়ি ফেনীতে চলে যান এবং তার স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান।